মতলব সেতু অ্যাপ্রোচ সড়কে ধস, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

চাঁদপুরের ‘মতলব সেতুর’ উদ্বোধনের সাড়ে তিন বছরের মাথায় একাধিক স্থানে ধস পড়েছে। যার কারণে সৃষ্টি হয়েছে বিরাট গর্তের। মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ধনাগোদা নদীর ওপর নির্মিত মতলব সেতুর পূর্ব দিকের অ্যাপ্রোচ সড়কের গত ৫দিন যাবৎ দুটি অংশ ১৫ ও ১২ ফুট দীর্ঘ এবং ১০ ও ১২ ফুট চওড়া গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।

এছাড়া আরও কয়েকটি স্থানে ধস পড়েছে। তবে সবচেয়ে বেশী বিপদজনক ওই দুটি স্থানে। যার কারণে চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সতর্কতা হিসেবে ধসে পড়া স্থানের পাশে লাল পতাকা টানিয়ে দিয়েছে। সওজ কর্তৃপক্ষের দাবি, গত ৫/৬ দিনের বৃষ্টির পানির চাপে এ ঘটনা ঘটেছে।

২৮ মে শনিবার বিকেলে মতলব সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেতুটির পূর্ব দিকে অ্যাপ্রোচ সড়কের এক পাশে পর পর দুটি স্থান ভয়ানক ধসে পড়েছে। অন্য দিকে ধস পড়লেও তা দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার করা হয়। ওই দুই স্থানে ধসে পড়া অংশ ঘেঁষে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, অটোরিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়িসহ সব ধরনের যানবাহন ঝুঁকি নিয়েই চলছে।

চাঁদপুর সওজ বিভাগের কার্যালয় সূত্র জানায়, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত ধনাগোদা নদীর ওপর ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ৩০০ মিটার দীর্ঘ ও ১০ দশমিক ৫ মিটার প্রস্থের ওই মতলব সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। চাঁদপুর সওজ বিভাগ সেতুটির নির্মাণকাজ হাতে নেয়। ‘রানা বিল্ডার্স’ নামে কুমিল্লা এলাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালে ওই নির্মাণকাজ শেষ করে। সেতুটির দুপাশের অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণসহ এতে মোট ব্যয় হয় ৮৬ কোটি টাকা।

২০১৮ সালে সেতুটির উদ্বোধন করেন গত আওয়ামী লীগ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, বীর বিক্রম।

স্থানীয় বাসিন্দা ইব্রাহীম ও ইদ্রিস আলীসহ আরও ৫/৭ জন ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, ‘অ্যাপ্রোচ সড়কটির নির্মাণকাজ মানসম্মত না হওয়ায় ৪ বছর যেত না যেতেই সেটি ধসে পড়ে। এছাড়া বিগত বর্ষা মৌসুমে এ সেতুর উত্তর ও দক্ষিণ পার্শ্বে ছোট ছোট গর্তের সৃস্টি হয়েছিল।সাথে সাথে তা মেরামত করে ফেলে।

তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, ভয়ানক ধসে পড়া স্থানগুলো মেরামতে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছেন না সওজের লোকজন। সেতুটিতে রাতে কোন আলোর ব্যবস্থা নেই। যার ফলে রাতে ওই অংশের পাশ দিয়ে চলাচল করাও বিপজ্জনক। এগুলো দ্রুত মেরামত করা দরকার।

এ সেতুর ঠিকাদার মো. আলমের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। ওই ঠিকাদারি কাজটির তদারককারী চাঁদপুর সওজ বিভাগের কার্যালয়ের কার্যসহকারী (ওয়ার্ক অ্যাসিসটেন্ট) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়কটির কাজে কোন অনিয়ম ছিল না।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সামসুজ্জোহা চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘অ্যাপ্রোচ সড়কটির ধসে পড়া দুটি অংশে কালভার্ট রয়েছে। কয়েক দিনের বৃষ্টির পানির চাপে ওই অংশ দুটি ধসে পড়েছে। ধসে পড়া অংশ নির্মাণের চেষ্টা চলছে। আগামী এক মাসের মধ্যেই স্থানগুলো মেরামত করা হবে।’

প্রতিবেদক: মাহফুজ মল্লিক, ২৮ মে ২০২২

Share