বাবুর হাট-মতলব-দাউদকান্দি সড়কে ধনাগোদা নদীর উপর নির্মিত মতলব সেতু। এ সেতু দিয়ে চাঁদপুর জেলা সদর, রায়পুর, লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন জেলার যানবাহন ও জনসাধারণ রাজধানী ঢাকায় চলাচল করে।
এ সেতু নির্মাণে রাজধানী ঢাকার সাথে এতদঞ্চলের যোগাযোগ সহজতর হয়েছে। সেতুতে বিদ্যুৎ ও স্ট্রিট লাইট না থাকায় সন্ধ্যা হলেই এ সেতুতে নেমে আসে ভুতুড়ে পরিবেশ। এতে জনসাধারণের চলাচলে ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মতলব সদর বাজারের পূর্ব পাশ দিয়ে ধনাগোদা নদীর উপরে অবস্থিত মতলব সেতু। এ সেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার যানবাহন ও জনসাধারণ চলাচল করে। দিনের বেলায় এ সেতুর অনেকাংশে মৌসুমী ফল, ভ্যানগাড়ি ও ফুসকার দোকান থাকায় জনসাধারণের নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই এসব দোকানে জ্বলে চার্জার বাতি এবং বাকি সেতুতে অন্ধকার নেমে আসে।
সেতুর দু’পাশে কোথাও কোনো বিদ্যুৎ নেই এবং স্ট্রিট লাইট নেই। সেতুতে যানবাহন চলাচলের আলোয় সেতুটি কিছুটা দৃশ্যমান হয় এবং তাতে জনসাধারণ হেঁটে কিছুটা চলাচল করতে পারলেও গাড়ি চলে গেলেই পুনরায় সেতুতে নেমে আসে অন্ধকার। এ সেতুতে অন্ধকার থাকায় চুরি, ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পথচারীরা এক ভুতুড়ে আলো-ছায়ার মধ্য দিয়ে সেতুতে চলাচল করে। রাতে নারী, শিশুসহ সব মানুষ হেঁটে শহরে বাজার-সওদাসহ পারিবারিক অনেক কাজ সারতে হয়। কাজ শেষে রাতে একই সেতু দিয়ে তারা ফিরে যেতে হয়। রাতে অনেক রোগীই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্রে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসতে হয়। সেতুতে অন্ধকার থাকায় জনসাধারণের চলাচলে ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
মতলব সেতুতে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর ফুটপাত দিয়ে অন্ধকারের মধ্যেই অনেক নারী, শিশুসহ জনসাধারণ এপার-ওপার যাচ্ছে। সেতুর কোনো পাশেই স্ট্রিট লাইট না থাকার কারণে অন্ধকারের মধ্যেই ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের কয়েকটি ভ্যানগাড়ি দাঁড়ানো। ভ্যানগাড়িতে চার্জার বাতি জ্বলছে। অনেকেই অন্ধকারের মধ্যেই দাঁড়িয়ে দরদাম করছে। পণ্য কিনছে। পাশ দিয়ে হুট করেই চলে যাচ্ছে ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের গাড়ি। অন্ধকারের মধ্যেই একজন আরেক জনের গায়ে ধাক্কা খাচ্ছে। অপরিচিত কারও ধাক্কা লাগায় অনেকেই ভয়ার্ত চোখে তাকাচ্ছেন এবং বিনয়ের সাথে মাফ চেয়ে পাশ কেটে যাচ্ছেন।
মতলব বাজারের প্রণয়, মোস্তফা, কামাল হোসেনসহ একাধিক ব্যবসায়ী জানান, জন্ম থেকেই মতলব সেতুতে বিদ্যুৎ বা স্ট্রিট লাইট নেই। লাইট না থাকার কারণে মতলব সেতু অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে। সেতুতে এক ভূতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়। রাতে এ সেতু দিয়ে আমাদের মালামাল পরিবহন ও চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। জনস্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে এ সেতুতে বিদ্যুৎ লাইট বা স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা প্রয়োজন।
চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, মতলব সেতুতে বিদ্যুৎ লাইট বা স্ট্রিট লাইট স্থাপনের জন্যে কোনো বরাদ্দ ধরা হয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো পৌর মেয়র বা ইউনিয়ন চেয়ারম্যানগণ স্থাপন করে থাকেন।
মতলব পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন লিটন বলেন, মতলব সেতুর উপর দিয়ে কোনোবিদ্যুৎ লাইন না যাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ লাইট স্থাপন করা যাচ্ছে না। তবে অতি শীঘ্রই মতলব সেতুর দুই পাশে স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হবে।বছরে প্রায় ৮৮ লাখ টাকা রাজস্ব পায় সরকার।
স্টাফ করেসপন্ডেট,১৮ সেপেটম্বর ২০২০