শনিবার ০৬ জুন ২০১৫ : ১১:৩৯ অপরাহ্ন
সাইফুল ইসলাম রনি, মতলব দক্ষিণ (চাঁদপুর):
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার কালিয়াইশ ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের অব্যাহতি ও অভিযোগকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসার শিক্ষক লাঞ্ছিত এবং মাদ্রাসা শ্রেণীকক্ষ ও অফিস কক্ষ ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
৬ জুন শনিবার সকাল আনুমানিক ১১ টার দিকে এ হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে গেলে এলাকাবাসী জানায়, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে গত ২ জুন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা বর্জন করে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ ও তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ সহ-সভাপতি বরাবর অব্যাহতিপত্র দেওয়া হয়। পরে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ তাদের দু’জন থেকে জোরপূর্বক অব্যাহতিপত্র নিয়েছে জানিয়ে মাদ্রাসার গর্ভর্নিং বডির সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ আবু আলী সাজ্জাদ হোসেন এর নিকট একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর থেকে তারা দু’জন মাদ্রাসায় আসেননি।
এই সূত্র ধরে ৬ জুন সকাল ১০টায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিতে গেলে মাদ্রাসার অফিস সহকারী সিরাজুল ইসলামের নেতৃতে কাজিয়ারা গ্রামের হাশিম দেওয়ানজির ছেলে আহসান দেওয়ানজি, খলিলুর রহমানের ছেলে মোঃ জামাল হোসেন প্রায় অর্ধশতাধিক লোক দেশিয় অস্ত্র¿ নিয়ে শ্রেণিকক্ষে হামলা ও ভাংচুর চালায়।
হামলাকারীরা একপর্যায়ে মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ মনির হোসেনকে লাঞ্ছিত করে এবং মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ ও ৯ম শ্রেণীর শ্রেণী কক্ষসহ অফিসকক্ষ ভাংচুর করে।
মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্র সফিকুল ইসলাম, ইব্রাহীম ও মেজবাহ উদ্দিন চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, ‘ঘটনার দিন সকালে মাদ্রাসায় পরীক্ষা দিতে গেলে আহসান দেওয়ানজী, জামাল ও আমাদের মাদ্রাসার অফিস সহকারী সিরাজুল ইসলামসহ ৪০/৫০ জনের একদল লোক রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা করতে আসলে আমরা দৌড়ে পালিয়ে যাই।’
মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক মো. ফয়েজ উল্লাহ চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘মাদ্রাসা কমিটি আমাকে মাদ্রাসার আয়-ব্যয়ের হিসাবের দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে। ঘটনার দিন হামলাকারীরা অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের উস্কানিতে আমাকে মারার জন্য আসলে আমাকে না পেয়ে মাদ্রাসার অফিসকক্ষ ও শ্রেণীকক্ষ ভাংচুর করে।’
অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ চাঁদপুর টাইমসকে জানান, বর্তমানে আমরা মাদ্রাসা এলাকায় নেই। আজকে কে বা কারা মাদ্রাসায় হামলা করেছে আমাদের তা জানা নেই। তারা চাঁদপুর টাইমসকে আরো জানান, আমাদেরকে ফয়েজ উল্যাহ ও অন্যান্যরা জোরপূর্বক অব্যাহতিপত্র লিখে নেয়ায় আমরা মাদ্রাসার সভাপতি বরাবর দরখাস্ত করেছি। এখন আমরা সভাপতির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।
তবে মাদ্রাসায় হামলার ঘটনা আমরা জানি না এবং এ ঘটনার সাথে আমরা কোনোভাবেই জড়িত নই।
মাদ্রাসার সহ-সভাপতি আবুল হোসেন দেওয়ানজী চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘ক’দিন অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করে যাচ্ছে। তাই ঘটনার দিন সকালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা যেনো পরীক্ষায় অংশ নেয় সে জন্যই মাদ্রাসায় যাই। কিন্তু কিছুক্ষণ পর ৪০/৫০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মাদ্রাসায় হামলা চালায়। এ মাদ্রাসার অফিস কক্ষসহ ৬ষ্ঠ ও ৯ম শ্রেণীর শ্রেণী কক্ষ ভাংচুর করে হামলাকারীরা। তিনি আরো জানান এ ঘটনা সর্ম্পকে মাদ্রাসার সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)কে জানানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে হামলাকারীদের একজন আহসান দেওয়ানজীর কাছে জানতে চাইলে তিনি চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘আমি এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নেই। আমার নেতৃত্বে মাদ্রাসায় কোনো হামলা হয়নি। কালিয়াইশ ও ঘোড়াধারি গ্রামের লোকজন মাদ্রাসা ভাংচুর করে হামালার ঘটনায় আমাকে জড়ানোর চেষ্টা করছে।’
চাঁদপুর টাইমস : ডিএইচ/ এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur