Tuesday, 05 May, 2015 12:01:56 PM
সাইফুল ইসলাম রনিঃ:
মতলব দক্ষিণ উপজেলায় পূর্বের নারী সংক্রান্ত একটি ঘটনার সূত্র ধরে চরপয়ালী ও দেলদিয়া গ্রামবাসীর মধ্যে কয়েক দফা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে।
আহতদের মধ্যে একজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে, কয়েকজনকে জেলা সদর হাসপাতালে ও অন্যদের মতলব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েভর্তি করা হয়েছে। গত ২-৪ মে চরপয়ালী আড়ং বাজার ও বাজারের আশপাশের এলাকায় সংঘটিত এ সংঘর্ষে চরপয়ালী গ্রামের লোকজন সবচে’ বেশি আহত হয়েছে।
আহতরা হচ্ছেন মান্নান গাজীর ছেলে মুকুল গাজী (২৮), মৃত নোয়াব আলী গাজীর ছেলে দুলাল (৪৫), মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে মামুন (৫০), লতিফ প্রধানের ছেলে আঃ রাজ্জাক (৩০), মৃত আঃ আলীর ছেলে আঃ রাজ্জাক (৩০), সিরাজ পাটোয়ারী, কলিম উদ্দিন প্রধানের ছেলে জাকির (২৩), খোরশেদ আলমের ছেলে আক্তার হোসেন (৩২) ও মৃত আঃ মান্নান গাজীর ছেলে মুকবুল গাজী (২৫)। আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য মুকবুল গাজীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে এবং অন্যরা মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েচিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া প্রতিপক্ষের কয়েকজন চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। এ ঘটনায় চরপয়ালী গ্রামের আগত রোগীদের পক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল কালাম পাটোয়ারী বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩০/৪০ জনের নামে মতলব দক্ষিণ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, চরপয়ালী গ্রামের বাবুল গাজীর কলেজে পড়ুয়া ছেলে রাসেলের সাথে প্রায় ৫/৬ মাস পূর্বে একই এলাকার স্কুল পড়ুয়া এক মেয়ের মোবাইল নম্বর দেয়া-নেয়া নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। বিষয়টি নিয়ে দেলদিয়া গ্রামের মৃত দেলোয়ার হাজরার ছেলে ইয়াসিন হাজরা একটি পক্ষের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ চেয়ে বসেছিল। কিন্তু মেয়ের অভিভাবক মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ঘটনাটি নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে নেয়।
এদিকে ঘটনার প্রায় ৫/৬ মাস পর গত ৩০ এপ্রিল বিকেলে ইয়াসিন হাজরা ও তার চাচাতো ভাই কাশেম বেপারী চরপয়ালীর রাসেল গাজীর বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মায়ের নিকট ১৫০০ টাকা দাবি করে। কিসের টাকা জানতে চাইলে ইয়াসিন বলে কয়েক মাস পূর্বে আপনার ছেলের সাথে এক স্কুল ছাত্রীর মোবাইল নম্বর নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছিল তা মীমাংসা করে দিতে ১৫০০ টাকা খরচ হয়েছে। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে তর্কবিতর্ক ও হাতাহাতির ঘটনাটি ঘটে। পরে ইয়াসিন তাদেরকে দেখে নেবো বলে হুমকি দেয়।
পরদিন শুক্রবার রাতে রাসেলদের ভুট্টা ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে ইয়াসিন ও তার দলবল। এরপর থেকেই রাসেলের চাচা, জেঠা ও আত্মীয় স্বজনদের আচলছিলা আড়ং বাজারে হাতের নাগালে পাওয়া মাত্র দেশীয় অস্ত্র্ত্র দিয়ে এলোপাথারি আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। গতকাল সোমবার সকালে রাসেলের চাচাত ভাই জাকির হোসেন চরপয়ালী বাজারে যাওয়ার পর মুহূর্তের মধ্যে দেলদিয়া গ্রামের মৃত দেলোয়ার হাজরার ছেলে ইউসুফ হাজরা ও তার ভাই ইয়াসিন হাজরার নেতত্বে ২৫/৩০ জন ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার উপর হামলা চালায়। তার ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এবং তার আত্মীয় স্বজনরা এগিয়ে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ ইউসুফ, ইয়াসিন, আবুল কাশেম, হাবিব, আনোয়ার, সফিক, লিটন, মোস্তফা ও মিজানসহ একটি সংঘবদ্ধ দল পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এ হামলার ঘটনাটি ঘটায়। (ফাইল ছবি)
চাঁদপুর টাইমস/ডিএইচ/এসআইআর/২০১৫