মতলব খেয়াঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায়, যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার খেয়াঘাটে অতিরিক্ত টাকা আদায়ে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পরেছে। বিগত বছরে জেলা পরিষদ বরাবর অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ দাখিল করলেও ইজারাদার এর বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্হা গ্রহন করেনি কতৃপক্ষ। ফলে দুই উপজেলা বাসিন্দাসহ মতলব বাজার ব্যবসায়িদের মাঝে চাপা ক্ষোভ দেখা গেছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, মতলব দক্ষিণ ও উত্তর বাসিন্দাদের এপার ওপার চলাচলের জন্য প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী খেয়া ঘাটে ২০২০ সালের ঈদুল আযহার নাম করে যাত্রী সাধারণ এর কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে আসছে ঘাট কতৃপক্ষ। জনপ্রতি ঘাটে পাঁচ টাকা ও নৌকায় পাঁচ টাকা করে গুুুনতে হয় প্রতিবার অথচ নদী পারে আসা যাওয়ায় ১০০ মিটার পারাপারে ২০ টাকা করে দিতে হচ্ছে যাত্রী সাধারণ এর কাছ থেকে।

এতে করে ভুক্তভোগীরা বলেন, যেখানে সরকারি কোন ইনভেস্ট নাই, তাহলে কিসের ভিত্তিতে এই টাকা আদায় করা হয়, আর কেনোই বা ইজারাদার,আর তার ইচ্ছে মত কেনো অতিরিক্ত ভাড়া আমাদের দিতে হবে আমরা দুই উপজেলাবাসী জানতে চাই, আমাদের গলায় ছুরি বসিয়ে কেনো ঘাটে ৫ টাকা করে আসা যাওয়ায় জনপ্রতি ১০ টাকা দিতে হয়।

এছাড়া প্রতিদিন এই খেয়া ঘাট দিয়ে ৭০টি নৌকা যোগে দৈনিক বিশ হাজার যাত্রী সাধারণ পারাপার হয়, তাদের মধ্যে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাসহ স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী যাতাযাত করে থাকে এবং মতলব বাজারে মতলব উত্তরের কৃষকরা তাদের বিভিন্ন কৃষিজাত পণ্য বাজারে নিয়ে যেতে হয় কেনা বেচা করতে নৌকা যোগে, অনেক সময় পণ্যের ব্যাগসহ ছোট খাটো বস্তা প্রতি অধিক টাকা দিতে হয় ঘাট কতৃপক্ষকে।

এছাড়া অসংখ্য কৃষক বলেন,আমরা মতলব বাজারে ১০ টাকার কিছু বিক্রি করতে গেলে সেখানেও ইজারা দিতে হয়। একটি সুএে জানা যায় ঘাট কতৃপক্ষের ইজারা নবায়ন না করে অবৈধ ভাবে পেশী শক্তি ব্যবহার করে সাধারণ জনগণকে বোকা বানিয়ে ধোকা দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

গত বছরের নভেম্বর মাসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং পএিকায় একটি সংবাদ প্রকাশ হলে কতৃপক্ষের নজরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি আসে তাৎক্ষণিক মতলব দক্ষিণ নির্বাহী অফিসার ঘাটে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত করেন তখন কতৃপক্ষকে নগদ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে ইজারা নবায়ন করার নির্দেশ দেন এবং ভাড়া তালিকা ঘাটে টাঙ্গানোর নির্দেশ দেন।

কিন্তু পুনরায় কতৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আবারও অতিরিক্ত অর্থ আদায় শুরু করেন, এরপরে আবারও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরেকটি সংবাদ প্রকাশ করলে এ নিয়ে জনমনে প্রচার প্রচারনা শুরু হয় এবং সাধারণ মানুষ নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত অতিরিক্ত অর্থ আদায় করার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ইজারাদারকে নগদ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং কিছু শর্ত প্রদান করেন।

কিন্তু ঘাট কতৃপক্ষ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হওয়ার ঘন্টা সময় পর থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করায় যাএীদের সাথে বাকতিক্ততায় লিপ্ত হয়, তার পরেও থেমে থাকেনি পেশি শক্তি বক্তির অতিরিক্ত টাকা আদায়। প্রতিদিন লাখ টাকার মত ইজারাদার হাতিয়ে নিচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে।

এমতাবস্থায় মতলব উত্তর দক্ষিণ সর্বসাধারণ জনগণের দূর্ভোগ লাগবে খেয়াঘাটে ইজারাদার এর মাধ্যমে জনসাধারণকে হয়রানির শিকার করা হচ্ছে বলে মতলববাসী জানান

আরও পড়ুন…  মতলব খেয়াঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায় করায় জরিমানা

খেয়াঘাটে যে অনিয়ম ও দুর্নীতি চলছে এবং যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগ চরমে পরিণত হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে মতলব দক্ষিণ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা হকেবলেন, আমরা পএিকায় প্রকাশিত সংবাদ দেখে তাৎক্ষণিক ভান্ম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দুই দফা জরিমানা আদায় করে নির্দেশনা দিয়েছি। আর এখনো তারা অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে আমরা তাহা নজরে নিয়ে মাননীয় জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বরাবর একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছি। প্রতিবেদন দাখিল করার পরে ইজারা উচ্ছেদের নির্দেশ আসলেও আইনী সহযোগিতার কোন আশ্বাস আমি এখনো পাইনি, তবে অচিরেই ওই সব সহযোগিতা আসলে আমরা আইনী ভাবে তাদের উচ্ছেদ করবো।

অপরদিকে মতলব দক্ষিণ পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন লিটনের বলেন, পৌরসভা থেকে খেয়া ঘাটটি ইজারা দেওয়া হয়নি, জেলা পরিষদ থেকে দেওয়া হয়েছে। তবে ইজারাদার এর অনিয়ম আর অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে বাজারা ব্যাবসায়ী সমিতির পক্ষ হতে ঘাট বাতিলের কয়েকবার জেলা পরিষদ বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছেঅ তারপরও জেলা পরিষদ কেনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না তাহা ওনারা বলতে পারবেন, তবে আমি মনে করি জনগণের সুবিধার কারণে ঘাটটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, এর পরে জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস কে মহিউদ্দিন রাসেল এর সাথে মোঠ ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি বিষয়টি শুনেছি, তবে বেশি কছু জানি না, এ বিষয়ে চেয়ারম্যান সাহেব ভালো বলতে পারবে।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অসুস্হ থাকার কারণে এ প্রতিনিধি উনার বক্তব্য থেকে বিরত ছিলো।

প্রসঙ্গত, এই অবৈধ ইজারার অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধ করে দুই উপজেলাবাসিকে এই ক্ষতিগ্রস্ত থেকে মুক্তি দিতে জেলা প্রশাসক এর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন ভুক্তভোগী মহল।

মতলব প্রতিনিধি

Share