মতলব উত্তরে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উদ্বোধন
সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন শনিবার ( ১৫ মার্চ) সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবমূখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। মতলব উত্তর উপজেলায় ৪৫ হাজার ৫০০ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে।
শনিবার ( ১৫ মার্চ) সকালে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা কুলসুম মনি এর শুভ উদ্বোধন করেন। তিনি এ দিন প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর পরে ১নং ছেংগারচর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড এর ৯নং দক্ষিণ ব্যাসদী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এছাড়া তিনি ১নং ছেংগারচর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড এর ঠাকুরচর খানবাড়ি, ঠাকুরচর আইয়ুব আলী সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক, শিকিরিচর কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বিভিন্ন ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন কেন্দ্র পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে পবিত্র মাহে রমজান মাসে শিশুদের বাবা-মায়েরা যেভাবে স্বতস্ফুর্তভাবে তাদের শিশুদের ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানোর জন্য যেভাবে এগিয়ে এসেছেন তার ভূয়সী প্রশংসা করেন। এজন্য অভিভাবকদের তিনি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান।
এসময় মতলব উত্তর উজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা.মোঃ ইসমাইল হোসেন,মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা.মোবারক হোসেন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) ভাষান চন্দ্র কীর্ত্তনীয়া, উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক (ইনচার্জ) সুভাষ চন্দ্র সরকার, ১নং ছেংগারচর ইউনিয়নের সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক রোকেয়া বেগম, বাংলাদেশ স্বাস্থ সহকারী এসোসিয়েশন মতলব উত্তর উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মামুনুর রশিদ, স্বাস্থ্য সহকারী বিমল চন্দ্র দাস,শাহনাজ আক্তার, সিএইচসিপি মোহন মোল্লা, মোঃ ইমরান হোসেন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়ন এবং ১ টি পৌরসভার ৩৬১ টি কেন্দ্রে শৈশবকালীন অন্ধত্ব প্রতিরোধ এবং শিশু মৃত্যুর হার কমাতে শিশুর বয়স ৬ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সী মোট ৪৫ হাজার ৫০০ জন শিশুকে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়।
উপজেলার ৩৬১ টি কেন্দ্রে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুদের নীল ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৫ শ জন, তন্মোধ্যে খাওয়ানো হয়েছে ৪ হাজার ৪শ’৭৪ জন শিশু এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের লাল ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪১ হাজার শিশু,তন্মোধ্যে খাওয়ানো হয়েছে ৪০ হাজার ৩২৬ জন শিশুকে। এছাড়া, নির্ধারিত দিনে যারা টিকা নিতে পারেনি, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে নিয়মিত টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে বাদ পড়া শিশুদেরকে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডাক্তার মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বছরে ২ বার ৯৮ শতাংশ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ খাওয়ানোর ফলে ভিটামিন ‘এ’ অভাবজনিত অন্ধত্বের হার ১ শতাংশের নিচে কমে এসেছে এবং শিশু মৃত্যুর হারও কমেছে। এই সাফল্য ধরে রাখতে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে ৬-৫৯ মাস বয়সী সকল শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো চলমান রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সব শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল আওতায় আনা তাদের একমাত্র লক্ষ্য। যাতে শিশুরা সুস্থ থাকতে পারে। শরীরে রোধ প্রতিরোধ ক্ষমতা বারে। কোনো শিশুই যেন ঝরে না পরে। পূর্ববর্তী বছরগুলোর মতো শতকরা একশ ভাগ শিশুকে এই ভিটামিন-এ খাওয়ানো সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ডাক্তার মোঃ ইসমাইল হোসেন উপজেলায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্নভাবে উৎসবমূখর পরিবেশে সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন সম্পন্ন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সকল স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য সহকারী এবং স্বেচ্ছাসেবীদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
ছবি-ই-মেইলে দেওয়া আছে
নিজস্ব প্রতিবেদক, ১৫ মার্চ ২০২৫