যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং উৎসাহ, আনন্দ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সারা দেশের ন্যায় চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে মহান আল্লাহর ক্ষমা ও অনুগ্রহগ লাভের আশায় মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর এই আনন্দ আয়োজনে শামিল হয়েছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
ঈদগাহ ও মসজিদগুলোতে পেশ ইমাম ও খতিবরা ঈদ জামাত পূর্ব বয়ানে মাহে রমজান এবং পরবর্তী ১১ মাসের আমল সম্র্পকে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরেন। গত দুই বছরে করোনা মহামারির কারণে খোলা মাঠে কিংবা ঈদগাহ মাঠে হয়নি ঈদের জামাত। বন্ধ ছিলো কোলাকলি ও হাতমিলানো। এবার সেইসব বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় মতলব উত্তরের ঈদগাহ ও মসজিদগুলোর ঈদ জামাতে মুসল্লিদের ঢল নামে। দুই বছর পর ঈদগাহ ময়দানে বিশাল জামায়াতে ঈদের নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ছেংগারচর পেরসভাসহ ১৪টি ইউনিয়নে শান্তিপূর্নভাবে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলার প্রতিটি এলাকাই আবহাওয়া ভালো থাকা অবস্থায় ঈদের জামাত সম্পন্ন হয়।
মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর কেন্ত্রীয় ঈদগাহ ময়দানে সকাল ৯টার সময় ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এখানে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন,মোহনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মোহনপুর কেন্ত্রীয় ঈদগাহ কামিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক চৌধুরী বাবুল, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও মতলব উত্তর উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম হাওলাদার,মোহনপুর কেন্ত্রীয় ঈদগাহ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহান শাহ হাওলাদার, সমাজ সেবক মোঃ লনি মিয়াজী,কোষাধ্যক্ষ বাশেদ সরকার, বিশিষ্ট সমাজ সেবক আলমগীর হাওলাদার, মোঃ নাসির চৌধুরী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্ত্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য মোসাদ্দেক হাওলাদার মামুনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক,সামাজিক,সুধিবৃন্দ ও এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এখানে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন। ঈদের জামাতে ইমামতি করেন হযরত মাওলানা আঃ রাজ্জাক। বয়ান ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা মোঃ আবু সুফিয়ান।
উপজেলার ৬নং কলাকান্দা ইউনিয়নের দশানী আমিরুল বোরহানুল উলূম মাদ্রাসা মসজিদে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৮টায়। এখানে ঈদের নামাজ আদায় করেন, ৬নং কলাকান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আঃ ছোবহান সরকার সুভা। আঃ ছোবহান সরকার সুভা চেয়ারম্যান এসময় ইউনিয়নবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘায়ু কামনা করে সবার কাছে দোয়া সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। এখানে ঈদ জামাতে ইমামতি করেন,আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মোঃ হাবিব উল্লাহ।
উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড বালুচর কেন্ত্রীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৮টায়। এখানে ঈদের নামাজ আদায় করেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্ত্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক লায়ন আরিফ উল্লাহ সরকার,ছেংগারচর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ওসমাজ সেবক আলহাজ্ব রুহুল আমিন মোল্লা, সমাজ সেবক আবু জাফর সরকার ডালিম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক মোঃ উজ্জল ফরাজী, ব্যাষ্টিার জুয়েল,কবির সরকারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক,সামাজিক,সুধিবৃন্দ ও এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এখানে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন। এখানে ঈদের জামাতে ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা মোঃ ওসমান গনি।
অপরদিকে উপজেলার জহিরাবাদ নাওভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় সংলঘ্ন কেন্ত্রীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৯টায়। এখানে ঈদের নামাজ আদায় করেন উপজেলা আ’লীগের সম্মেলন প্রস্তÍুতি কমিটির সদস্য বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজ সেবক মোঃ গাজী মুক্তার ও জহিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম মিয়া।
মতলব উত্তর থানা মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৮টার সময়। এখানে ঈদের নামাজ আদায় করেন মতলব উত্তর থানার ওসি মুহাম্মদ শাহজাহান কামাল,ওসি তদন্ত মোঃ মাসুদ, মসজিদ কমিটির প্রধান উপদেষ্টা উপজেলা আ’লীগের সম্মেলন প্রস্তÍুতি কমিটির সদস্য আল মাহমুদ টিটু মোল্লা, বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোঃ সুরুজ লস্কর, মোঃ শাহ আলম প্রধানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক,সামাজিক,সুধিবৃন্দ ও এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এখানে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন। এখানে ঈদের নামাজে ইমামতি করেন থানা মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা মোঃ নেওয়াজ শরীফ। এদিকে সকাল নয়টায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় ফরাজীকান্দি ওয়সীয়া দরবার শরীফ। এখানে ঈদের জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা মোঃ মাসউদ আহমাদ আল রেফায়ী।
প্রতিটি জামাত শেষে খুতবা পেশ করা হয়। এরপর অনুষ্ঠিত হয় দোয়া ও মোনাজাত। মোনাজাতে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করা হয়েছে। পাশাপাশি সম্প্রতি বৈশ্বিক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতদের জন্য দোয়া করা হয়েছে। এছাড়া মোনাজাতে সব উম্মতে মোহাম্মদির জন্য গুনাহ মাফ চাওয়া হয়েছে। সব মৃত ব্যক্তির কবরের আজাব থেকে মুক্তির দোয়া করা হয়েছে। যে কোনো বিপদ থেকে দেশকে হেফাজতের জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে।
নামাজ শেষে দীর্ঘ দুই বছর পর সবাই কোলাকুলিতে মেতে ওঠেন। করোনার পর এবার কোলাকুলি এবং হাতে হাত মেলাতে পেরে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মুসল্লিরা। তারা জানিয়েছেন, ঈদের নামাজের পর প্রধান আনন্দ কোলাকুলিতেই।
এবার তারা সবার সঙ্গে সুন্দর মতো ঈদ উদযাপন করতে পেরে আনন্দিত।
মোসাদ্দেক হাওলাদার মামুন এক মুসল্লি বলেন, দীর্ঘ এক মাস রোজা রেখে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারাটাই সব থেকে আনন্দের। আর মোনাজাতে সবার জন্য ও দেশের জন্য দোয়া করেছি।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ৩ মে ২০২২