Home / উপজেলা সংবাদ / মতলব উত্তর / মতলব উত্তরে তৈরি ঘর বিক্রিতে ধস
ঘর

মতলব উত্তরে তৈরি ঘর বিক্রিতে ধস

চাঁদপুরের মতলব উত্তরে তৈরি ঘর বিক্রিতে ধস নেমেছে। মাসের পর মাস ধরে অবিক্রীত পড়ে আছে নান্দনিক ঘরগুলো। উপজেলার ছেংগারচর, সটাকী, বাংলাবাজার এলাকায় নকশা খচিত চার চালা, সাত চালা নতুন ঘরগুলো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। মিয়ানমারের কাঠ আমদানি বন্ধ হওয়ায় বর্তমানে নাইজেরিয়ার লোহাকাঠই এখন ঘরের হাটের ব্যবসায়ীদের ভরসা।

টিনের ঘরের দাম এত কেন এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলাম বলেন, মূলত এ এলাকার মানুষের টিনের নকশা করা ঘরের প্রতি একটা আলাদা টান আছে। তা ছাড়া এ এলাকাগুলোতে নদী ভাঙন বেশি হয় ও চরাঞ্চলে দালানের পরিবর্তে টিনের ঘর অপেক্ষাকৃত বেশি পছন্দের। এটা পরে বিক্রিও করা যায়। একটি পুরোনো টিনের ঘর বিক্রি করলে দামও ভালো পাওয়া যায়। প্রবাসে থাকা লোকজন কমসময়ে তৈরি করা ঘরবাড়িতে নিয়ে স্থাপন করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকেন।

ছেংগারচর বাজারের ব্যবসায়ী হাজী আহম্মদ উল্লাহ জানান, নকশা ভেদে ঘরের দাম ২ থেকে ৫ লাখ পর্যন্ত হয়। একটি রেডিমেড ঘর বাড়িতে নিয়ে স্থাপন করতে তিন-চার দিন সময় লাগে। সাত চালা সাড়ে ২৮ বর্গ হাত (আই-আটাশ টপ বারিন্দা) একটি ঘর ৪ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। যা জাপানি ‘অরিজিনাল প্লেন শিট’ ও এক আইচ লোহা কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়। তবে দুই লাখ টাকায়ও নকশা করা ঘর পাওয়া যায়। আর ১৫ লাখ টাকায় ঘর বানাতে চাইলে আগে অর্ডার দিতে হয়। সে ঘরগুলো সাইজেও বড় হয়। পুরোটা হয় লোহা ও কাঠের সূক্ষ্ম নকশা করা। ঘরের ভেতর থাকে কেবিন।

কাঠের ঘর ব্যবসায়ী কাদির খান বলেন, করোনার পর থেকে আমাদের দুর্বিষহ জীবনযাপন চলছে। ১৫-২০ জন কারিগরের পরিবর্তে ৪-৫ জন রেখেছি। ঘর বিক্রি হচ্ছে না। কর্মচারীদের বেতন, জায়গা ভাড়া, সংসার চালানো এখন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

ঘর তৈরির কারিগররা জানান, সাড়ে ৮ হাত বাই ১৫ হাত (২৩ বন্দের) একটি নকশা করা ঘর তৈরিতে ৯০ দিন সময় লাগে। সাধারণত তিনজন কারিগর মিলে এক মাসে একটি ঘর তৈরি করতে পারে। নকশা ও কাঠ ভেদে একটি ঘর ২ থেকে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। আমরা এর জন্য প্রতিদিন ৬০০ টাকা মজুরি ও সঙ্গে খাবার পাই। কেউ নিজে টিন, কাঠ কিনে বাড়িতে ঘর তৈরি করতে চাইলে আমরা মজুরি নিই ৩৫-৪০ হাজার টাকা।

ঘরের হাটের ব্যবসায়ী সুখরঞ্জন বণিক বলেন, আমরা চট্টগ্রাম থেকে কাঠ নিয়ে আসি। বাসালু, নাইজিরা, শাল, সেগুন, ওকান ও লোহা কাঠ দিয়ে ঘর বানানো হয়। বছরে প্রায় ২০-২২টি ঘর বিক্রি হয়।

ঘর ব্যবসায়ী হাজী সফিকুল ইসরাম বলেন, আগের মতো আর ব্যবসা হয়না। অনেক পুঁজি লাগে। কাঠ, টিন সবকিছুর দাম বেড়েছে। কিন্তু সেই হারে ঘরের দাম বাড়েনি। গত তিন মাসে দুটি ঘর বিক্রি করছি। অথচ বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ এই দুই মাস ঘর বিক্রির মৌসুম।

স্টাফ করেসপন্ডেট