Home / উপজেলা সংবাদ / মতলব উত্তর / মতলব উত্তরে গরু মোটাতাজাকরণে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার
মতলব উত্তরে গরু মোটাতাজাকরণে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার

মতলব উত্তরে গরু মোটাতাজাকরণে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার

কোরবানির আগ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার খামারিরা। নিষিদ্ধ ট্যাবলেটের মাধ্যমে আর অবৈধ পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করে কয়েক বছর যাবৎ লোকসান গুনছেন তারা।

তাই খামারিরা এবার আগে থেকেই সতর্ক। বেছে নিয়েছেন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার সার্বিক তদারকিতে এবার বেশিরভাগ খামারিই তার বৈজ্ঞানিক পদ্দতিতে গরু মোটাতাজাকরন করছে। আবার অর্থ লোভী কিছু অসাধু ব্যক্তি ও খামার মালিক নিষিদ্ধ ট্যাবলেটের মাধ্যমে আর অবৈধ পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করনে ব্যবহার করছেন নিষিদ্ধ স্ট্রেয়েড গ্রুপের ক্ষতিকারক ট্যাবলেট।

তবে গত কয়েক বছর ধরে লোকসান হওয়ায়, মানবদেহে তা ক্ষতিকারক ও জনসচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি উপজেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের কড়া নজরদারির কারণে এবার নিষিদ্ধ ট্যাবলেটের মাধ্যমে আর অবৈধ পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করণ পদ্ধতি অনেকটা কমে এসেছে।

প্রতি বছর কোরবানির ঈদে স্বাস্থ্যবান গরুর চাহিদা থাকে বেশি। দামও মেলে বেশি। তাই গত কয়েকবছর ধরে কৃত্রিম উপায়ে গরু মোটাতাজা করে আসছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খামারিরা। ঈদের তিন থেকে চার মাস আগে থেকে চলে মোটাতাজা করণের কাজ। এ সময় বাড়তি খাবার দেয়াসহ চলে সার্বক্ষণিক পরিচর্যা। কেউ কেই আবার অবশ্য ক্ষতিকর হরমোন বা স্টেরয়েড ট্যাবলেট দিয়ে এই চেষ্টা করেন। তবে এবার খামারিদের দাবি স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে গরু মোটাতাজা করছেন তারা। কেননা গত কয়েক বছরে অবৈধ ওষুধ ব্যবহারের ফলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন তারা।
মতলব উত্তর উপজেলার ঠাকুরচর গ্রামের পরিচিত খামারি মোঃ বদিউর রহমান খান জানান, তিনি প্রতি বছরই ১০-১২ টি ষাঁড় গরু মোটাতাজ করে থাকেন। তিনি গত বছর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করে ভালো লাভের দেখা পেয়েছিলেন। ক্রেতারা ট্যাবলেট এর মাধ্যমে মোটাতাজা করা ষাঁড় গরু কিনতে এখন আর চায় না। গত বছর আমার মোটাতাজা করা ষাড়ে কোনো ট্যাবলেট খাওয়ানো না হওয়ায় ক্রেতারা তার ষাঁড় গুরু কিনতে এক ধরনের প্রতিযোগিতায় নেমেছিলো। তাই তাম পেয়েছিলেন তার প্রত্যাশার চেয়ে বেশি। গত বারের লাভের মূখ দেখে তিনি এবার উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরের পরামর্শে তার খামারে ১৫টি ষাড় গরু নিষিদ্ধ ট্যাবলেটের ব্যবহার না করে বজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছেন।

তিনি এবার ভারত থেকে গরু না আসলে প্রত্যাশিত দাম পাব বলে আশা করছেন। পশুর হাটে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে গরু ঢোকানোর দাবি জানালেন তিনি।
মতলব উত্তর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ ফারুক হোসেন জানান, স্ট্রেয়েড গ্রুপের ক্ষতিকারক ওষুধ গরুকে না খাওয়ানোর জন্য এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করার জন্য কৃষক ও খামারীদের কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে কয়েকবার খামারিদের নিয়ে সচেতনতা সভা ও করা হয়েছে।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার দাবি এবার বেশিরভাগ খামারী বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছে। জনসচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি কড়া নজরদারির ফলে এমন ফল এসেছে। তবে এ নির্দেশ সত্ত্বেও কিছু অসৎ কৃষক ও খামার মালিকরা ষাঁড় গরু মোটা তাজা করণে এই নিষিদ্ধ ঘোষিত ওষুধ খাওয়াতে পারে।

এ কর্মকর্তা আরো জানান, আমাদের দু’টি টিম প্রতিনিয়িত মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। উপজেলার বিভিন্ন পশুর হাটে আমাদের মেডিকেল টিম কাজ শুরু করেছে।
মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাবিব ইসমাইল ভূঁইয়া চাঁদপুর টাইমসকে জানান, স্ট্রেয়েড গ্রুপের এসকল ওষুধ সেবনের কারণে গরু দ্রুত মোটাতাজা হলেও গরু রোগাক্রান্ত ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে এবং গরুর কিডনি, যকৃত, ফুসফুস, কলিজা ও মাংস নষ্ট হয়ে যায়। এসব ষাঁড়ের মাংস মানুষের জন্যও নিরাপদ নয় বরং জনস্বাস্থ্যর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর । এ নিষিদ্ধ ঘোষিত ওষুধ গরুকে খাওয়ানো বন্ধ না করলে জনস্বাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন হবে।’

খান মোহাম্মদ কামাল
: আপডেট, বাংলাদেশ ২: ৫০ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০১৭, শুক্রবার
ডিএইচ

Leave a Reply