মতলব উত্তরে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট

পবিত্র ঈদ-উল আযাহাকে সামনে রেখে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ছেংগারচর বাজারসহ উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার হাট বাজারগুলোতে শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট।
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। পশু কোরবানি মাধ্যমে আত্মত্যাগ ও আল্লহকে সন্তুষ্টি করাই প্রধান কাজ ।

৪ জুলাই সোমবার উপজেলার সবচেয়ে বড় কোরবানির পশুর হাট ছেংগারচর বাজার ছিলো সাপ্তাহিক পশুর হাটের দিন। এ দিন এ বাজারে সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায় পর্যাপ্ত পরিমাণ গরু বাজারে মজুদ রয়েছে। ঈদের আরও সপ্তাহ খানেক বাকি থাকলেও পশু বিক্রি হচ্ছে ভালোই। ক্রেতা বিক্রেতা দর কষাকষির মধ্যে সময় পার করছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে দাম নিয়ে উভয় মুটামুটি খুশি।

সরেজমিনে আরো দেখা যায়, এবার কোরবানীর পশুর হাটে সবগুলো দেশীয় জাতের গরু। এদের মধ্যে রয়েছে ছোট-বড় ও মাঝারি সাইজের। সকল বিক্রেতা বলছেন আমার গরুকে কোন ধরনের ঔষধ খাওয়া হয়নি।

বিক্রেতারা বলছেন, দাম ঠিক রেখেই বিক্রির চেষ্টা চলছে। তবে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই বলছেন, ঈদের দুই থেকে তিন দিন আগেই মূলত ভালভাবে বেচা-কেনা শুরু হবে। এবার কোরবানীর পশুর সরবরাহ বেশি থাকায় দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা গরুকে বিভিন্ন ভাবে সাজিয়ে বাজারে তুললেও দূরের ব্যবসায়ীরা ট্রাক যোগে প্রচুর সংখ্যক গরু বাজারে তুলেছেন। বাজারে বিভিন্ন আকারের গরু, খাসি উঠেছে।

কোরবানির আর মাত্র ৬ দিন বাকি। প্রতিটি হাট বাজারে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা। তাই নির্ভয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতারা পশু বেচাকেনা চালিয়ে যাচ্ছে।

সবগুলো দেশীয় গাছপালা ঘাস খেয়ে বড় হওয়া গরু একেবারে ফরমালিন মুক্ত। কোন ধরনের ভিটামিন পর্যন্ত খাওয়া হয়নি বলে জানান গরুর মালিক স্থানীয় আদুরভিটির খামারি ছানাউল্লাহ আখন।

তিনি বলেন, নিজেই এই গরুর পরিচর্যা তিনি নিজেই করেছেন। শুধু দেশী ঘাস আর কুড়া ভুষি এবং নিয়মিত গোসল করিয়ে দিতেন । তিনি জানান আমি আমার খামারের ১০টি গরু আনছি। এখনও আমার ১০টির মধ্যে একটি গরুও বিক্রি করতে পারেনি। আমার বড় ষাড় গরুটি ৪ লাখের বেশি হলে বিক্রি করবো। এখন মূল্য হাঁকাচ্ছেন ৩ লাখ ৮০ হাজচার টাকা। যে দাম হাঁকাচ্ছে তাতে আমার খইর বুশিসহ খাদ্য খাইয়ে আমরা খরচ হচ্ছেনা। লাভ তো দূরের কথা। হাতে সময় আছে আরো দেখবে তারপর ছাড়বো।

আরেব খামারি জাহাঙ্গীর আলম জানান,এ বছর কোরবানি ঈদকে সামনে তার এর্গো ফামে ১৫টি গরু তৈরি করেছেন। এ পর্যন্ত আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত বলছে।আশাকরি ভালো দাম পাব। আমি ১০-১৫ হাজার টাকা লাভ হলে গুরু ছেড়ে দেব। তিনি ৩টি গরু বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছেন। ৩টি গুরুতে তার লাভ হয়েছে মুটামুটি। তিনটি গরু বিকি করতে পেরে তিনি খুঁশি।

কোরবানির গরু কিনতে আসা ছেংগারচর পৌর বনিক সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি ও ছেংগারচর পৌর আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাজ্বী মনির হোসেন বেপারী জানান,পশুর হাটে এ বছর প্রচুর পশুর আমদানী হয়েছে। দামও মুটোমুটি ভালো। তিনি ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকিয়েছেন একটি গরু। এখনও কিনেন নি। তবে ১ লাখ ৪০ হাজার হলে তিনি ওই গরুটি কিনবেন বলেও জানান।

ইজারাদার মুকুল খান বলেন, এবার পশুর দাম মোটামুটি ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। হাটে গরু উঠেছে প্রচুর। এ বছর গরুর হাসিল (খাজনা) একদম সহনীয় পর্যায়ে রাখা হয়েছে। প্রতি গরু প্রতি এক হাজার টাকা করে নিচ্ছি আমরা। যত দামেই কিনুক হাসিল মাত্র ১০০০ টাকা। আমাদের এ হাটে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত কোরবানির পশুর হাট বসবে।

প্রতিটি হাট বাজারে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা। তাই নির্ভয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতারা পশু বেচাকেনা চালিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহজাহান কামাল জানান, পুলিশ প্রশাসন সার্বক্ষণিক বাজারে রয়েছে এবং চেক পয়েন্টসহ নজরদারিও রয়েছে। পাশাপাশি কোভিড ১৯ এর বিষয়ে সকলকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক, ৪ জুলাই ২০২২

Share