মতলব উত্তর

মতলব উত্তরের সেই বৃদ্ধার শরীরে করোনার অস্তিত্ব নেই

মতলব উত্তরে (জ্বর, বমি, পাতলা পায়খানা) নিয়ে মৃত্যু বরন করা মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধার শরীরে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় (জ্বর,,সর্দি,কাশি বমি ও পাতলা পায়খানা) নিয়ে মৃত্যুবরণ করা জুলেখা (৫৫) নামের মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধার শরীরে অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধার শরীরে নমুনা পরীক্ষা করে করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। অর্থাৎ সে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যায়নি। তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না।

৭ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে বিষয়টি জানিয়েছেন মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডা.নুশরাত জাহান মিথেন।

মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধা জুলেখা মতলব উত্তর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের মুন্সিকান্দি গ্রামের মৃত হোসেন পাঠানের মেয়ে।

উল্লেখ্য গত শনিবার (মধ্যরাতে) চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের মুন্সিকান্দি গ্রামে নিজ বাড়িতে জুলেখা (৫৫) নামের মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধা তার মৃত্যু হয়। (জ্বর,সর্দি,কাশি বমি ও পাতলা পায়খানা) নিয়ে মৃত্যুবরণ করায় প্রথমে তার মৃত্যুটি করোনা ভাইরাস উপসর্গ সন্দেহাতীত হওয়ায় ঐদিনই দুপুরে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা এসে মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। ঢাকার আইইডিসিআর’র কেন্দ্র পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য।

এ ঘটনার পর গত শনিবার (৪ এপ্রিল) সকাল থেকে মহিলার বাড়িসহ আশপাশের ৫টি বাড়িতে লকডাউন ঘোষণা করে স্থানীয় প্রশাসন। অবশেষে মতলব উত্তর উপজেলার স্বস্তির খবর এ রিপোর্ট গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এসে পৌছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুসরাত জাহান মিথেন জানান, (জ¦র,সর্দি,কাশি বমি ও পাতলা পায়খানা) নিয়ে জুলেখা (৫৫) নামের মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধা মারা যান। এ বিষষযটি তাদের স্বজন ও এলাকাবাসী প্রশাসনকে জানানো হয়। করোনা ভাইরাস নিয়ে এলাকায় কেউ যেনো আতঙ্ক ছড়াতে না পারে সে জন্য সিভিল সার্জনের নির্দেশে ওই নারীর মৃতদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। অবশেষে মতলব উত্তর উপজেলার স্বস্তির খবর এ রিপোর্ট মঙ্গলবার বিকেলে এসে পৌছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএম জহিরুল হায়াত জানান, (জ্বর,সর্দি,কাশি বমি ও পাতলা পায়খানা) নিয়ে মৃত্যুবরণ করা জুলেখা (৫৫) নামের মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধার শরীরে অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি এ সংবাদটি পুরো উপজেলাবাসীর স্বস্তির খবর। তবে যেহেতু মহিলা (জ¦র,সর্দি,কাশি বমি ও পাতলা পায়খানা) নিয়ে মৃত্যুবরন করেছে তাই লকডাইন করা বাড়ির সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এমনিতে সারা দেশে করোনা সংক্রম এবং মৃত্যু বেড়ে চলেছে। তাই কোনো অবস্থাতেই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরে থেকে বের হওয়া যাবেনা।

তিনি আরও বলেন,এ খবরে আমাদের সবাইকে অতি উৎসাহী হয়ে গেলে চলবেনা। সবাইকে করোননা ভাইরাস থেকে সচেতন ও জাগ থাকতে হবে। আমি সবাইকে অনুরোধ করবো মাননীয় প্রধানমন্ত্রর নির্দেশ মেনে চলুন। নিজেরা ঘরে থাকুন, অন্যকে সুস্থ রাখুন। জনসমাগম করবেন না। সরকারি সিদ্ধান্ত ছাড়া দোকানপাট খুলবেন না। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যানবাহনে চলাফেরা করবেন না। সকালের কাছে ত্রাণসমগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে। যতদিন পর্যন্ত এই সঙ্কট থাকবে ততদিন সরকার এবং প্রশাসন পাশে আছে। খাদ্যের ব্যবস্থা করা হবে। কেই না খেয়ে মরবেনা। আমরা আপনাদের পাশে আছি।

মানসিক ভারসাম্যহীন জুলেখার ভাতিজা রাজিব জানান, জুলেখা আমার ফুফু। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন। ফুফু মৃত্যুবরণ করার ৩ দিন আগে তিনি নারায়নগঞ্জ থেকে আমাদের বাড়িতে আসেন। সে আমাদের লাড়কি হাঁস-মুরগির রাখার ঘরে এসে থাকেন।

গত শনিবার রাত সাড়ে ১২টার সময় সে কিছুটা জ্বর, বমি, অস্বাভাবিক শব্দ করে। রাতে আমরা দেখে ঘুমিয়ে পড়ি। সকালে উঠে দেখি ফুফু মারা গেছেন। তারপর ইউপি চেয়্রাম্যানকে খবর দিলে তিনি বিষয়টি প্রশাসনকে জানায়। পরে দুপুরের দিকে হাসপাতাল থেকে ডাক্তারা এসে নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর-এ পাঠানো হয়েছে করোনা টেস্টের জন্য।

এসময় আমাদের বাড়িসহ আশপাশের ৫-৭টি বাড়ি লাল নিশানা দিয়ে লকডাউন ঘোষণা করে। তারা এসময় আমাদেরকে ৪টি পিপিই ড্রেস দেয় ফুফুকে দাফনের জন্য। আমার ফুফুকে বিকেল ১ টার সময় নিরাপদভাবেই দাফন করা হয়।

প্রতিবেদক:কামাল হোসেন খান,৭ এপ্রিল ২০২০

Share