কোভিড-১৯ এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চাঁদপুর ও আশপাশের এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপও বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ১৪ দিনে এসব এলাকার সাড়ে ৫ শতাধিক লোক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হয়েছে ৪০ জনেরও বেশি রোগী। রোগীদের ৫৬ শতাংশই নারী। কোভিডের সংক্রমণের ঝুঁকি সত্ত্বে ও চিকিৎসক-নার্সরা এঁদের চিকিৎসাসেবায় তৎপর। ভ্যাপসা গরমে এ রোগের প্রকোপ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র,বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) চাঁদপুরের মতলব হাসপাতালের কার্যালয় থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে,গত ৩০ জুন থেকে মঙ্গলবার ১৪ জুলাই পর্যন্ত ১৪ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সেখানে ভর্তি হয়েছে ৫৭৫ জন। প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হয়েছে ৪০ জনের বেশি। এঁদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ নারী এবং ৪৪ শতাংশ পুরুষ। সুস্থতার হার শতভাগ। আজ বেলা ২টার মধ্যে সেখানে ভর্তি হয়েছে ২৩ জন।
সূত্রটি আরও জানায়, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলাসহ চাঁদপুরের আট উপজেলার ২৭৫ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সেখানে ভর্তি হয়েছে। কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার ২০১ এবং লক্ষীপুরের ৩৫ জন ভর্তি হয়েছে। বাকিরা নোয়াখালী ও শরিয়তপুর জেলার।
গত সোমবার দুপুরে ওই হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালটির প্রতিটি ওয়ার্ডে ডায়রিয়া রোগীদের ভিড়। এসব রোগীর চিকিৎসাসেবায় সেখানকার চিকিৎসক ও নার্সরা তৎপর।
বি-বাড়িয়ার সদরের মো.মোশারফ হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘ঘন ঘন পাতলা পায়খানা ও বমি হওয়াতে গত শনিবার তাঁর দেড় বছর বয়সী কন্যাশিশু ইসরাত আরাকে এখানে ভর্তি করাই। চিকিৎসকেরা তারে খাওনের স্যালাইন ও কিছু ওষুধ দিয়েছে। এখন সে অনেকটাই সুস্থ।’
আইসিডিডিআরবির মতলব হাসপাতালের স্টেশন প্রধান ও জ্যেষ্ঠ চিকিৎসা কর্মকর্তা মো.আল ফজল খান চাঁদপুর টাইমসকে বলেন,ভ্যাপসা গরমের কারণে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলায় এসব লোক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। ময়লাযুক্ত খাবার গ্রহণ এবং দূষিত পানি পান করায় এ রোগের প্রকাপ বাড়ছে। ভর্তি হওয়া শূন্য থেকে ছয় মাস বয়সী শিশুদের স্যালাইন ও মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো হচ্ছে। সাত মাস থেকে দুই বছর বয়সী শিশুদের খাওয়ার স্যালাইন, বেবি-জিংক, মায়ের বুকের দুধ, সুজি ও খিচুড়ি খেতে দেওয়া হচ্ছে।
অন্যান্য রোগীকে খাবার স্যালাইন, স্বাভাবিক খাবার এবং ক্ষেত্রবিশেষে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে। বারবার পানির মতো পাতলা পায়খানা হলে, ঘন ঘন বমি হলে, পায়খানার সঙ্গে রক্ত গেলে ও গায়ে জ্বর থাকলে রোগীকে দ্রæত হাসপাতালে আনতে হবে। ময়লাযুক্ত খাবার ও দূষিত পানিপান বর্জন করলে এ রোগের সংক্রমণ এড়ানো যাবে।
প্রতিবেদক:মাহফুজ মল্লিক,১৪ জুলাই ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur