Home / উপজেলা সংবাদ / মতলব দক্ষিণ / মতলব আইসিডিডিআরবিতে ১২ দিনে ৩০২ মা-শিশুর চিকিৎসা
ICDDRB-matlab
ফাইল ছবি

মতলব আইসিডিডিআরবিতে ১২ দিনে ৩০২ মা-শিশুর চিকিৎসা

চাঁদপুরে মতলব দক্ষিণ উপজেলার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম বন্ধপ্রায়। হাসপাতালগুলো অনেকটাই রোগীশূন্য। চিকিৎসকদের গা-ছাড়া ভাবের কারণে এসব হাসপাতালে যেতে রোগীদেরও অনীহা।

এর বিপরীত চিত্র চলছে আইসিডিডিআরবির মতলব হাসপাতালে। সেখানে মা-শিশুদের চিকিৎসা চলছে পুরোদমে। গত নয় দিনে সেখানে ৩০২ মা ও শিশু চিকিৎসা নিয়েছে। হাসপাতালটি এখন তাঁদের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয়রা।

আইসিডিডিআরবির মতলব হাসপাতালের কার্যালায় সূত্রে জানা গেছে, সেখানে গত নয় দিনে (১ থেকে ১২মে পর্যন্ত) প্রসবকালীন, প্রসবপূর্ব ও প্রসবোত্তর চিকিৎসা নিয়েছেন ২৭৮ নারী। এ সময় সাধারণ প্রসব (নরমাল ডেলিভারি) হয় ১৭ গর্ভবতী মায়ের। সর্দি, জ্বর ও আমাশয় এবং আরও বিভিন্ন সাধারণ রোগের চিকিৎসা নিয়েছে ২৪টি শিশু। এদের বয়স শূন্য থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে। এ ছাড়া আটটি অপুষ্ট নবজাতককে ‘ক্যাঙারু মাদার কেয়ার ইউনিটে’ এবং ছয়টি নবজাতককে বিশেষ ইউনিটে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

সূত্রটি আরও জানায়, ওই নয় দিনে মোট চিকিৎসা নিয়েছে ৩০২ মা ও শিশু। প্রতিদিন গড়ে চিকিৎসা নিয়েছে প্রায় ৩৪ জন (মা ও শিশু)। এসব মা ও শিশুর বাড়ি চাঁদপুর সদর, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ এবং ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ ও হাইমচরসহ আশপাশের এলাকায়।

রোববার দুপুর একটা পর্যন্ত সেখানে চিকিসা নিয়েছে ৭০ জন মা ও শিশু। চিকিৎসা নেওয়া ওই ৩০২ মা ও শিশুর সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।হাসপাতালে দেখা যায়, সেখানকার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডই রোগীতে সরগরম। ডায়রিয়া ওয়ার্ডগুলোর পাশাপাশি মা ও শিশু ওয়ার্ডগুলোও রোগীতে ভরপুর। করোনার সংকমণ এড়াতে চিকিৎসক ও নার্সরা ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী (পিপিই) পরিধান করে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।

উপজেলার দশপাড়া গ্রামের প্রসূতি নারী শাহানাজ বেগম বলেন, প্রসবপূর্ব চিকিৎসা ও সেবা নেওয়ার জন্য আজ এখানে এসেছেন। চিকিৎসকেরা তাঁকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও পরামর্শ দিয়েছেন। করোনার এ সময়ে এই হাসপাতালটিই এখন তাঁদের একমাত্র ভরসা।

তিনি অভিযোগ করেন, গত কয়েকদিন ধরে শারীরিক সমস্যা নিয়ে এখানকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে একাধিকবার গিয়েও চিকিৎসা পাননি। করোনার ভয়ে চিকিৎসকেরা সেখানে ভর্তি করা তো দূরের কথা ব্যবস্থাপত্র লিখে দিতেও ভয় পাচ্ছেন। তাঁর মতো অনেকেই এসব হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা পাননি। উল্টো নানা কটূ কথা শোনার পাশাপাশি ভোগান্তিও হয়েছে তাঁদের।

আইসিডিডিআরবির জ্যেষ্ঠ চিকিৎসা কর্মকর্তা চন্দ্রশেখর দাস বলেন,করোনার ঝুঁকি থাকা সত্তে¡ও তাঁর হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা অত্যন্ত সতর্কতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এই দুর্যোগে কোনো রোগী বিশেষ করে কোনো প্রসূতি মা ও শিশু যাতে যথাযথ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। নৈতিক বাধ্যবাধকতা ও দায়িত্ববোধের কারণেই তাঁরা নিরলসভাবে চিকিৎসাসেবার কাজ করে যাচ্ছেন।

প্রতিবেদক:মাহফুজ মল্লিক,১৪ মে ২০২০