চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সুলতানাবাদ ইউনিয়নের বড় লক্ষ্মীপুর গ্রামে ৭-৮ বছর আগে মৃত ও বিতর্কিত ফকির এলাহী বক্স বেপারীর কবর পাকা করে মাজার নির্মাণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় এলাকাবাসী ও মাজারপন্থী দু’গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা দেখা দিয়েছে।
মাজার নির্মাণের খবরে স্থানীয় আলেম সমাজ, মুসল্লিদের মধ্যেও ক্ষোভ ও উত্তেজনা লক্ষ্য করা গেছে। মাজার নির্মাণ বন্ধ না হলে সংঘর্ষ বাঁধতে পারে বলে জানান এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী বলেন, মাজার নির্মাণ করা ও সেখানে সিজদা করা ইসলাম কখনো সমর্থন করে না। যে কোন মূল্যে নির্মাণকারীদের প্রতিহত করা হবে।
জানা যায়, এলাহী বক্স বেপারী নামে এক ফকিরের কবরকে মাজার নির্মাণ করার উদ্দেশ্যে একটি স্বার্থান্বেষী মহল মরিয়া হয়ে উঠে। এতে এলাকাবাসী বাধা প্রদান করেন।
এলাকার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বড় লক্ষ্মীপুর গ্রামের রাস্তার পাশে এলাকাবাসী এবং প্রশাসনের অনুমতি তোয়াক্কা না করেই এলাকার কিছু স্বার্থান্বেষী লোক পরলোকগত এবং বিতর্কিত ফকিরের মাজার নির্মাণের কাজ শুরু করে। তিনি ৭-৮ বছর আগে মৃত্যুবরণ করে।
ওই সময় এলাহী বক্স বে-নামাজি ও অসামাজিক লোক হওয়ায় তার জানাযা দিতে আপত্তি করে এলাকাবাসী। একদিন পর কয়েকজন জানাযা দিয়ে নিজস্ব জমিতে দাফন করে। দাফনের পর থেকেই কবর পাকা করার পায়তারা করছিল।
গত কয়েকদিন ধরে তার কবরের চারদিকে পাকা করে পিলার দিয়ে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে। তার মৃত্যুর পর মৃত্যুবার্ষিকীতে গান-বাজনার আসর বসানো হয়।
এলাহী বক্সের ভাতিজা শহিদ উল্লাহ বেপারী জানান, তার চাচা দীর্ঘকাল তরিকত ও ফকিরি লাইনের লোক ছিল। তিনি মৃত্যুর আগে তার কবরে মাজার করতে বলে গিয়েছে তাই পাকা করা হচ্ছে। এলাহী বক্স বেপারী একজন কামেল ব্যক্তি ছিল বলে দাবি করেন তিনি।
এলাকার মুসল্লি শামসুল হক বলেন, এলাহী বক্স ফকিরি করত। তার জীবনদ্দশায় নামাজ পড়তে কখনো দেখিনি। তার মৃত্যুর নামাজ না পড়ার কারণে ৫ লক্ষাধিক টাকা কাফফারা নির্ধারণ করা হয়।
নজরুল ইসলাম বেপারী (৬৫) বলেন, এলাহী বক্সের মৃত্যুর পর তাকে জানাযা দিতে চায়নি এলাকাবাসী। পরে এলাকার কিছু লোক জানাযা দিয়ে দাফন করে।
স্থানীয় জামে মসজিদের খতিব বলেন, শরীয়ত মোতাবেক কবরে মাজার নির্মাণ করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সিনি. যুগ্ম-আহ্বায়ক তামজিদ সরকার রিয়াদ বলেন, যদিও আমার এলাকার ঘটনা। আমি লোকমুখে শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি জেনেছি। আমি মনে করি, শরীয়তের নিয়ম ভঙ্গ করে এসব মাজার নির্মাণ করা ঠিক নয়। তাছাড়া এলাকাবাসীও এটা চায় না।
এলাকার যুবকরা বলেন, মাজার করা হলে এ এলাকায় গাঁজা সেবন ও অশ্লীলতা বেড়ে যাবে। এলাহী বক্স বেপারী এমন কোন কামেল ব্যক্তি ও অলি ছিলেন না। যে তার কবরকে মাজার করতে হবে। মাজার নির্মাণ বন্ধ করার দাবি জানান তারা।
মাজার নির্মাণকারী পলাশ বেপারী জানান, কবরের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চতুর্দিকে পাকা করা হচ্ছে। আমরা মাজার করব না।
নিউজ ডেস্ক ।।আপডেট : ০৪:২০ এএম, ১৩ জানুয়ারি ২০১৫, বুধবার
ডিএইচ