চাঁদপুরে মতলব দক্ষিণ উপজেলার পূর্ব কলাদী জামে মসজিদ লাগোয়া ইমামের কক্ষ থেকে উদ্ধার হওয়া নিহত ৩ শিশুর স্বজনদের কান্না আজও থামেনি।
২০১৯ সালের আজকের এই দিনে (শুক্রবার ছিল) ৮ থেকে ১৫ বছর বয়সী তিনটি তরতাজা শিশুর মৃত দেহ উদ্ধার করা হয় মসজিদের ইমামের কক্ষ থেকে। নিহত তিন শিশুর মধ্য ইমামের ছেলের লাশও ছিল। নিহতদের স্বজনরা আজকের এ দিনটিকে কোনো ভাবেই ভুলতে পারছেন না।
এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন: মতলবে মসজিদ সংলগ্ন কক্ষ থেকে ইমামপুত্রসহ ৩ শিশুর মরদেহ উদ্ধার
শুধু স্বজনরাই নয়,মহল্লাবাসী এবং ওই মসজিদের মুসল্লীরাও তিনটি তরতাজা নিশ্পাপ শিশুর মৃত্যু স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছেন না। শিশুদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে আজ ওই মসজিদসহ আশপাশের সবকটি মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মসজিদ কমিটি।
প্রসঙ্গত,গত বছরের ৩০ আগস্ট জুমার নামাজের পর মসজিদে ইমামের কক্ষে শিশুদের অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। এর মধ্যে দুইজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। একজনকে হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যায়।
শিশুদের মধ্যে ইমামের এক ছেলে রয়েছে। তাদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জেলার পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির জানান, শুক্রবার বেলা দুইটার দিকে উপজেলার পূর্ব কলাদিয়া জামে মসজিদের ইমামের কক্ষে তাদের মৃত্যু হয়।
তিন শিশু হল ইব্রাহিম মিয়া (১২), রিফাত হোসেন ও ওই মসজিদের ইমাম জামাল উদ্দিনের ছেলে আব্দুল্লাহ আল নোমান (৫)। ইব্রাহিম ও রিফাত পার্শ্ববর্তী মতলব দক্ষিণের ভাঙ্গারপাড় মাদ্রাসার ছাত্র। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে আবদুল্লাহ ও ইবরাহিমের ঠিকানা বলতে পারেনি।
মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ স্বপন কুমার আইচ এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনও মন্তব্য করতে রাজি হন নি। তবে তিনি ৩ শিশুর মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শিশুদের মরদেহ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি কাজ চলছে।
৫ বছরের শিশু সন্তানকে রেখে জুমার নামাজ পড়াতে যান ইমাম মাওলানা জামাল উদ্দিন। ওই শিশু সন্তানের সাথে আরও ২ জন কিশোর প্রবেশ করে ইমামের কক্ষে। মসজিদ সংলগ্ন রুম থেকে শুক্রবার দুপুর ১২টার পর জুমার নামাজ পড়াতে মসজিদে ঢুকে পড়েন জামাল উদ্দিন। নামাজ শেষে ইমাম নিজ কক্ষ ভেতর থেকে আটকানো দেখতে পান।
অনেক ডাকাডাকির পর দরজা না খোলায় ইমামসহ উপস্থিত মুসল্লিরা দরজা ভেঙে দেখেন কক্ষের মধ্যে ৩ শিশু-কিশোর অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। এর মধ্যে দুজন আগেই মারা গেছে। একজনকে মতলব হাসপাতালে নিলে ডাক্তার তাকেও মৃত ঘোষণা করে।
ঘটনাটি মতলব দক্ষিণ উপজেলার পূর্ব কলাদী গ্রামে। ওই গ্রামের জামে মসজিদে ইমাম মাওলানা জামাল উদ্দিন। তার শিশু সন্তান আবদুল্লাহ আল নোমান (৫) বাবার সাথেই মসজিদ সংলগ্ন রুমে থাকত। তাদের বাড়ি বরগুনা জেলায়।
শিশু সন্তান নোমানকে রুমে রেখেই মসজিদে ঢুকে যান জামাল উদ্দিন। যাওয়ার সময় দুই কিশোর ইব্রাহিম (১২) ও রিফাত হোসেনকে (১৫) ঢুকতে দেখেন।
প্রতিবেদক:মাহফুজ মল্লিক,২৯ আগস্ট ২০২০