মতলব উত্তরে দু’শিক্ষকের প্রতারণায় ৩৬ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। প্রতারণায় অভিযুক্ত ওই দু’শিক্ষক পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে পরীক্ষার্থীরা একটি লিখিত অভিযোগপত্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দিয়েছেন এবং এর অনুলিপি বিভিন্ন দপ্তরে পেশ করেছেন।
অভিযোগপত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি সমমানের পরীক্ষার্থী হিসাবে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) মতলব জেবি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়। কিন্তু ভুক্তভোগী ওই ৩৬ শিক্ষার্থী পরীক্ষার হলে প্রবেশ করলে সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষক নিয়মানুযায়ী তাদের প্রবেশপত্র দেখতে চান।
কিন্তু তারা কেউই প্রবেশপত্র দেখাতে না পারায় তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি।
পরে তারা প্রতারণার ফাঁদে আটকে যাওয়া বিষয়টি আঁচ করতে পারে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারে এদের কারোই রেজিস্ট্রেশন হয়নি। রেজিস্ট্রেশন দায়িত্ব নেয়া সংশ্লিষ্ট দু’শিক্ষক প্রতারণা করেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি সমমানের রেজিস্ট্রেশন সব টাকা ছেংগারচর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সরোয়ার বিএসসি ও শরীফউল্লা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বশির আহমেদ নিয়েছেন।
কিন্তু তারা টাকা নিয়ে ব্যাংক ড্রাফট না করায় তাদের রেজিস্ট্রেশন হয়নি।
কিন্তু ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বিষয়টি আগ থেকে বুঝতে পারেনি, কারণ তাদেরকে রেজিস্ট্রেশন পেপার দেখানো হয়েছে। যদিও সে পেপারটি ছিলো ভুয়া। ওই ভুয়া পেপারটিসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে দালিকৃত অভিযোগের অনুলিপি প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সর্বমোট ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা করে ওই দু’শিক্ষক নিয়েছেন।
পরীক্ষার্থীদের একজন জিহাদ হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘আমরা আরো দু’তিন বার পরীক্ষা দিয়েছি সবাই ২-৩ বিষয়ে ফেল করেছি বলে বার বার ওই দু’স্যার টাকা নিয়েছে এবং আমাদের পরীক্ষা কেন্দ্র মতলবে হবে বলেও জানিয়েছে। আমরা ওইদিন মতলব জেবি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে জানতে পারি আমাদের উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন এসএসসি সমমানের পরীক্ষার রেজিস্ট্রশনই হয়নি। ফলে চোখে পানি নিয়ে কেন্দ্র থেকে ফিরে এসেছি।’
এ ব্যাপারে ছেংগারচর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সরোয়ার বিএসসির মুঠোফোনে (০১৭৭২৩৩১৭২৬) একাধিকবার চেষ্টা করে হলে তার স্ত্রী রিসিভ করেন। বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তিনি বাসায় উপস্থিত নেই বলে প্রতিবেদককে জানান। অভিযোগের বিষয়ে তার স্ত্রী কথা বলতে রাজি হননি।
অপর অভিযুক্ত শরীফউল্লা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বশির আহমেদকেও একাধিকবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে মতলব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘অভিযুক্ত দু’শিক্ষকের অপরাধ প্রমাণিত হলে ছাড়া দেয়া হবে না। আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। তবে তাদের দু’জনকে স্কুলে পাওয়া যায়নি। তাদেরকে উপজেলায় আসার জন্য খবর দেয়া হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৯:২০ পিএম, ১ নভেম্বর ২০১৬, মঙ্গলবার
ডিএইচ