চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ছেলেধরা সন্দেহে গত (১১ জুলাই) বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার খিদিরপুর ও মতলব সেতু এলাকায় নারী ও পুরুষ দুজনকে গণপিটুনি দেন এলাকার লোকজন। তাঁদের রক্ষা করতে গিয়ে আহত হন চার ব্যক্তি।
মধু বিক্রেতার বাড়ি মতলব পৌরসভার নবকলস গ্রামে। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় উপজেলার নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়নের খিদিরপুর গ্রামে আমির হোসেন (৩৮) নামের এক মধুবিক্রেতা বালতিতে করে মধু বিক্রি করছিলেন। এ সময় কিছু বাচ্চা সেখানে মধু খাওয়ার জন্য জড়ো হন। ওই গ্রামের বাসিন্দা ইউপি সদস্য মোবারক হোসেনের নাতিকেও মধু খাওয়ান আমির। এ সময় মধু খাইয়ে গ্রামের ছেলেমেয়েদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে গুজব উঠে।
মধুবিক্রেতাকে ছেলেধরা হিসেবে সন্দেহ করেন স্থানীয় লোকজন। তাঁকে পাকড়াও করার জন্য ওই গ্রামে মাইকিংও করা হয়। এ নিয়ে ওই মধুবিক্রেতা ও লোকজনের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মধুবিক্রেতাকে ছেলেধরা সন্দেহে গণধোলাই দেন এলাকাবাসী। এতে তিনি আহত হন।
বিষয়টি জানতে পেরে নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন ঘটনাস্থলে আসেন এবং মধুবিক্রেতাকে তাঁর হেফাজতে রেখে থানায় খবর দেন। মতলব দক্ষিণ থানার ওসি এ কে এম এস ইকবালের নেতৃত্বে থানা-পুলিশের কয়েকজন সদস্য ঘটনাস্থলে যান।
সেখান থেকে মধুবিক্রেতাকে থানায় নিয়ে আসতে চাইলে স্থানীয় লোকজন পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়েন। মধুবিক্রেতাকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে সহায়তাকারীদেরও মারধর করেন গ্রামের লোকেরা। এতে আহত হন ওই গ্রামের মো. রাব্বী (৭), জাকির হোসেন (৪০), সুমন হাওলাদার (৩০) ও মো. মোতালেব (৩০)। তাঁদের নারায়ণপুর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সেখানে তাদের চিকিৎসা চলছে।
এদিকে পৃথক ঘটনায় একইদিন দুপুরে উপজেলার মতলব সেতু এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে মায়া বেগম (৫০) নামের এক নারীকে লোকজন মারধর করলে তিনি সামান্য আহত হন। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। মায়ার বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। সে কিছুটা পাগল প্রকৃতির। মতলব দক্ষিণ থানার ওসি এ কে এম এস ইকবাল বলেন, ছেলেধরার গুজব এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় এসব ঘটনা ঘটছে। আটককৃত ব্যক্তিদের থানায় রাখা হয়েছে। তাঁদের পরিবারের কাছে তাঁদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
প্রতিবেদক- মাহফুজ মল্লিক
১১ জুলাই ২০১৯