মতলব দক্ষিণ

মতলবে চার সন্তানের জননী শাহীনূরের পাশে এসপি শামসুন্নাহার

গত বছর নভেম্বর মাসে‘ মতলবে চার সন্তানের জননীর মানবেতর জীবন যাপন’ শিরোনামে স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর চাঁদপুর পুলিশ সুপার পরকীয়া প্রেমে আসক্ত বাবুলকে তার স্ত্রী-সন্তানদের সাথে মিলিয়ে দেন। কিন্তু লম্পট বাবুল ফের পালিয়ে চলে যায় পরকীয়া প্রেমিকার কাছে।

সেই থেকে চার সন্তানের জননী শাহীনূর তার স্বামীর বসত ভিটায় বসবাস করলেও প্রতিনিয়ত বাড়ি ছাড়ার হুমকি ও ভরণ-পোষণ না পেয়ে আজও মানবেতর ভাবে জীবন যাপন করছে।

জানা যায়, মতলব পৌরসভার দিঘলদী গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের মেয়ে শাহিনূরকে ২০০০ সালে পরিবারের সন্মতিতে বিয়ে দেওয়া হয় চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণপুর গ্রামের হামিদ গাজীর ছেলে বাবুল গাজীর সাথে। কর্ম জীবনে বাবুল কখনো রাজমিস্ত্রি বা হোটেলে কাজ করে সংসার চালিয়ে আসছিলো। দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে তাদের। বড় ছেলে সিহাব (১৪), মেয়ে নাসরিন (১২), নুসরাত (৪) এবং সবচেয়ে ছোট মেয়ে মুসফিকার বয়স এক বছর।

তাদের সুখের সংসারে হানা দেয় পরকীয়া। স্বামী বাবুল পাশ্ববর্তী গ্রামের এক বিবাহিত মহিলার সাথে গড়ে তুলে পরকীয়ার সর্ম্পক। এই পরকীয়া সর্ম্পকের জেরে বাবুল তার স্ত্রীকে নির্যাতন করে ঘর থেকে বের করে দেয়। অসহায় গৃহবধু শাহীনুর তার সন্তানদের নিয়ে ঠাঁই নেয় বাপের বাড়ি। স্বামী বাবুল তার ওরশ জাত সন্তানদের ভরণ-পোষণ না দিয়ে সময় ও অর্থ ব্যয় করে পরকীয়া প্রেমিকার পিছনে।

এই নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার তাঁর দপ্তরে গৃহবধু শাহীনূর ও তার চার সন্তানকে ডেকে নিয়ে বাবুলকে ডিবি পুলিশের মাধ্যমে হাজির করে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বসবাসের নির্দেশ প্রদান করেন। পুলিশ সুপারের কথামত বাবুল তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে নিজ বাড়িতে বসবাস শুরু করার এক সপ্তাহ পর সে পালিয়ে চলে যায় পরকীয়া প্রেমিকার কাছে।

বিষয়টি গৃহবধূ শাহীনূর পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন। পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার বাবুলের কোন খোঁজ না পেয়ে ওই গৃহবধূর ভাশ্বুর রুহুল আমিন ও মতিন গাজীকে তাঁর দপ্তরে ডেকে আনেন এবং বাবুলকে হাজির করতে ও তার স্ত্রী সন্তানদের ভরন পোষনের বিষয়টি নজর রাখতে বলেন। বার বার সময় চেয়ে বাবুলকে তার বড় দুই ভাই পুলিশ সুপারের কাছে হাজির করতে পারেনি।

শাহিনুর বেগম জানায়, ‘অভাবের কারণে ছেলে সিহাব ও মেয়ে নাসরিনকে এতিমখানায় দিয়ে দিয়েছি। গত কয়েক মাস যাবৎ ভাশ্বুর রুহুল আমিন আমাকে বাড়ি ছেড়ে চলে যাবার হুমকি দিচ্ছে। তিনি নাকি আমার স্বামীর কাছ থেকে বসতবাড়ির জায়গাজমি কিনে নিয়েছেন। যাদের বাড়িতে কাজ করি তাদেরকে মোবাইলে হুমকি দিচ্ছে আমার স্বামী। যাতে আমাকে কাজ করা থেকে বিদায় করে দেয়। তাই আবারো জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি তাঁর সহযোগিতার জন্য।’

: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০:৫০ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০১৬, মঙ্গলবার
ডিএইচ

About The Author

প্রতিবেদক- পলাশ রায়, মতলব দক্ষিণ
Share