স্টাফ করসপনডেন্ট:
চাঁদপুর জেলাধীন মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুরের পুরন কাশেমপুরে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে দালাল চক্ররা।
রোববার ভোর ৪টায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চতুর্থ তলায় মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসারত অবস্থায় নারায়ণপুরের বাকপতিবন্ধি জিলন বকাউলের স্ত্রী কুলসুমা বেগম (৩৫) এর মৃত্যু ঘটে। ঘটনার পর তার শ্বশুড় বাড়ির লোকজন হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গিয়ে পুরাণবাজারে দুই দালালের সহযোগিতায় ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যায়।
জানা যায়, নারায়ণপুরে কাসেম পুর প্রধানিয়ার বাড়ির আবিদ প্রধানিয়ার মেয়ে কুলসুমার সাথে ১৮ বছর পূর্বে বদরপুর মধ্যম বোয়ালবাড়ির হাকিম বকাউলের ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী জিলন বকাউলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তার শ্বশুড় বাড়ির লোকজন গৃহবধূ কুলসুমাকে শারীরিক নির্যাতন চালাতো। গত ৭ দিন পূর্বে গৃহবধূ কুলসুমার দেবর আনিছ বকাউলের স্ত্রীর স্বর্ণ চুরি হওয়ার ঘটনায় সে কাসেমপুরের প্রতারক কবিরাজ নুরুর স্ত্রী আমেনার স্মরণাপন্ন হয়। কবিরাজ আমেনা মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে গৃহবধূ কুলসুমা স্বর্ণ চুরি করেছে বলে মিথ্যা অপবাদ দেয়। তার কথামতো দেবর আনিছ ও ভাসুর মিজান বকাউল ৭ দিন কুলসুমাকে ঘরে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। গত শনিবার বিকেলে দেবর আনিছ ও ভাসুর মিজান মোটর সাইকেলে কুলসুমাকে উঠিয়ে পোয়ালী মিজি বাড়ি তার মামা সাদেকের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়েও সে স্বর্ণ চুরি করেছে বলে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে স্বর্ণ বের করে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। সেখান থেকে আসার পথে রাস্তায় তাকে পিটিয়ে আহত করে ফেলে রেখে চলে আসে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মতলব হাসপাতালে নিয়ে আসে। খবর পেয়ে তার শ্বশুড় বাড়ির লোকজন সেখান থেকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় নিয়ে আসে। হাসপাতালে আনার পর সে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে বলে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ভর্তি করায়। প্রচ- শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণায় রোববার ভোর ৪টায় সে মারা যাওয়ার পর শ্বশুড় বাড়ির লোকজন ঘটনা ঘোলাটে দেখে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে গৃহবধূ কুলসুমার ভাই রশিদ হাসপাতালে আসার পর ঘাতক দেবর আনিছের সহযোগী পুরাণবাজারের দুই দালাল তাকে পেয়ে মারধর করে। ঘটনাটি মৃত গৃহবধূর ভাই থানায় এসে ডিউটি অফিসারকে অবহিত করেন।
এ সময় পুরানবাজারের ওই দুই দালাল থানায় এসেও গৃহবধূর ভাই রশিদকে হুমকি ধমকি দেয়। এদিকে হাসপাতালের মেঝেতে মৃত দেহটি ১১ ঘন্টা পড়ে থাকার পর মডেল থানার এসআই জাকির ময়না তদন্তের জন্য লাশটি থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় ঘাতকদের বিরুদ্ধে মতলব দক্ষিণ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা যায়।