চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিনই আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৭-৮ জন করে নতুন রোগী আসছে চিকিৎসা নিতে। ডেঙ্গু রোগী দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এই হাসপাতালে পুরুষ ও নারী ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আলাদা করে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে।
শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) পর্যন্ত মোট ১২ জন ডেঙ্গুরোগী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসারত নিচ্ছেন। এছাড়াও সারাদিন ১০জন জ্বর নিয়ে চিকিৎসা দিতে হাসপাতালে এসে বলে জানান জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মোঃ রুম্মান।
ফলে হাসপাতালের নিয়মিত রোগীর পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। বিশেষ করে জুলাই মাস ধরেই এলাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মোঃ হাসিবুল ইসলাম বলেন, তবে জুলাই মাসে এর প্রকোপ আরও বেড়েছে। এই মাসে এখন পর্যন্ত ৩০ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন ৮জন। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গু রোগী বাড়ে। তবে এ বছর রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় বেশি।
তিনি আরও বলেন, আমরা চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। রোগীর চাপও আছে। আশার কথা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত চাঁদপুরে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। তবে বর্ষা যতদিন থাকবে, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়বে। আমরা এর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
মতলবের আশ্বিনপুর থেকে ডেঙ্গু জ্বর নিয়েস হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মোঃ জহিরুল ইসলাম বলেন, আমি ঢাকায় ছিলাম। প্রথমে আমার টানা তিন দিন জ্বর ছিলো। জ্বর নিয়ে আমি দেশে আসি। জ্বও নিয়ে রডাক্তার দেখাই। ডাক্তার আমাকে ডেঙ্গু জ্বর সন্দেহে ডেঙ্গু টেস্ট করাতে দেন এরপর আমি ডেঙ্গু পরীক্ষা করার পর আমার ডেঙ্গু জ্বর ধরা পরে। গত ৪ দিন দিন ধরে আমি এখানে চিকিৎসা নিচ্ছি।
মতলব উত্তর উপজেলার বেগমপুর থেকে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ভর্তি হওয়া রাজন (২৫) ও রাজনের মা জানান, আজকে চার দিন ধরে হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে তার অবস্থার উন্নতি হয়েছে। পুরোপুরি সুস্থ হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।
উপজেলার ছেংগার বাজার মুন মেডিকেল সেন্টারের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) মোঃ মারজান হোসেন বলেন, প্রতিদিন ২০-৩০ রোগীকে ডেঙ্গু সন্দেহে টেস্ট করা হয়,তারমধ্যে ৫-৭ ডেঙ্গু রোগীী পজিটিভ পাচ্ছি। বিশেষ করে এই সপ্তাহ সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী টেস্টে পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে। আজকে এ পর্যন্ত ৪জন ডেঙ্গু রোগী পজিটিভ পাওয়া গেছে। এর প্রতিরোধ ব্যবস্থা করতে না পারলে এ রোগীর সংখ্যা আর বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন।
মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান জুয়েল চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ডেঙ্গু রোগী দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এই হাসপাতালে পুরুষ ও নারী ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আলাদা করে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক,২৫ জুলাই ২০২৩