চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর লঞ্চঘাট সংলগ্ন পর্যটন কেন্দ্রের সামনে এলাকায় গুলি চালানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার বড় ছেলে সাজেদুল হোসেন চৌধুরী দীপুকে প্রধান আসামি করে ২০ জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্তি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাসানের আদালতে মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ জাকির হোসেন বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
এজাহার আমলে নিয়ে ঘটনা তদন্তপূর্বক আলামত উদ্ধার করে প্রতিবেদন জমা দিতে মতলব উত্তর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন জহিরাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজী মুক্তার হোসেন, অপু চৌধুরী, আহার খালাশী, ফতেপুর পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান আজমল হোসেন চৌধুরী, কলাকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান সোবহান সরকার সুভা, শাহীন চৌধুরী, সম্রাট গাজী, আজাদ খালাশী, জেলা পরিষদের সদস্য মিনহাজ উদ্দিন খান, ছাত্রলীগ নেতা তামজিদ সরকার রিয়াদ, লিখন সরকার, খোরশেদ চৌধুরী, হোসেন মেম্বার, মেহেদী হাসান কাজল, কুদ্দুস, মামুন শিকদার, আক্তার সরকার, ইউসুফ ও সুমন বেপারী।
বাদী তার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, তিনি মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার। আসামিরা সন্ত্রাসী, বেপরোয়া, অত্যাচারী, মানুষের জানমালের এবং শান্তির জন্যে হুমকি স্বরুপ। বাদী পক্ষের পর্যটন কেন্দ্রটি জোরপূর্বক, বেআইনিভাবে দখলে নেওয়ার জন্য ঘটনার পূর্ব থেকেই বাদীপক্ষকে ভয়-ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছে। ঘটনার দিন অর্থাৎ গত ১২ ফেব্রুয়ারি আসামিরা অর্ধশত সন্ত্রাসীসহ বেআইনি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে শর্টগান, বন্দুক, পিস্তল, রিভলবার ইত্যাদিসহ অতকির্তভাবে পর্যটন কেন্দ্রের সম্মুখে এসে পর্যটন কেন্দ্রের মালিক এবং ১/২/৩নং সাক্ষীকে হত্যার উদ্দেশ্যে খোঁজ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ২ নম্বর সাক্ষীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মামলার ১ নম্বর আসামি গুলি ছোড়েন।
ঘটনাস্থলে গুলির শব্দ শুনে এলাকার লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা গুলি ছুড়তে ছুড়তে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
উপজেলা যুবলীগের সদস্য কাজী হাবিবুর রহমান জানান, মতলব উত্তরের মোহনপুর লঞ্চ ঘাটে সাজেদুল হোসেন চৌধুরী দীপু ১২ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টায় ৬ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এর প্রতিবাদে এলাকাবাসী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করে।
ছেংগারচর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) রতন ফরাজী জানান, মতলব উত্তরের মোহনপুরে দীপু চৌধুরী কর্তৃক গুলিবর্ষণ এবং বিভিন্ন ইউনিয়নে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের প্রতিবাদে ছেংগারচর পৌর আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কিছু দিন ধরেই মতলব উত্তরে আওয়ামী লীগের দুটি গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এরই মধ্যে গত ২১ জানুয়ারি একই এলাকায় দু’পক্ষ রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করলে ২০ জানুয়ারি রাতে ওই এলাকার ৭টি পয়েন্টে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। সে সময়ে কোনও ঘটনা না ঘটলেও পরবর্তীতে গত ১২ ফেব্রুয়ারি মোহনপুর পর্যটন স্পট লঞ্চঘাট এলাকায় গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে কথা বলতে সাজেদুল হক দীপু চৌধুরীর মোবাইলফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। এছাড়া মামলার অপর আসামি জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ও চাঁদপুর জেলা পরিষদ সদস্য মিনহাজ উদ্দিন খানের মোবাইলফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বার্তাকক্ষ, ১৭ ফেব্রুয়ারি,২০২১;