মেঘনা নদীতে ১ মার্চ থেকে দুই মাস অভয়াশ্রম থাকায় মাছধরা ও বিক্রি করা নিষেধ। ঠিক ওই সময়ে চাঁদপুরে মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীতে মাছ মরে ভেসে উঠছে। গত এক সপ্তাহে প্রায় কয়েক টন দেশি জাতের মাছ ও পোনা মাছ মরে গেছে। মৎস্য বিভাগের দাবি, আশপাশের শিল্পকারখানার কেমিক্যালযুক্ত পানি, হাটবাজার ও বাসাবাড়ির আবর্জনা নদীতে প্রবেশ করছে। ফলে পানি দূষিত হয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলার মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নদীর পাশের ষাটনল ইউনিয়নের জেলেপাড়া, বাবু বাজার, সটাকী, বাহাদুরপুর এলাকায় পানিতে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। এখানে পানি নষ্ট হয়ে কালো রং ধারণ হয়ে গেছে এবং চোখে পড়ে ফেনাযুক্ত পানি। মেঘনার পানিতে মরা মাছ ভাসতে দেখা যায়।
স্থানীয়রা জানান, বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে গড়ে ওঠা বিভিন্ন কলকারখানার দূষিত কেমিক্যালযুক্ত পানি মেঘনা নদীর তলদেশ দিয়ে আসায় ছোট বড় মাছ মরে ভেসে উঠছে। পচা মাছের দুর্গন্ধে নদী পাড়ের মানুষের জীবনমান দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।
মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ জেলার নদীর পানি এখানে প্রবেশ করেছে। এক সপ্তাহ ধরে নদীর পানির রং বদলে যাচ্ছে। শহরের বিভিন্ন কারখানার দূষিত বর্জ্য ও ময়লা-আবর্জনা নদীতে ফেলা হচ্ছে। ফলে পানি দূষিত হয়ে রং পরিবর্তন করেছে। দূষিত পানির কারণে পানির পিএইচ ও অ্যামোনিয়া মাত্রার চেয়ে কয়েক গুণ বেড়ে গেছে।
দ্রবীভূত অক্সিজেন প্রায় শূন্য হয়ে যাওয়ায় নদীতে থাকা বিভিন্ন জাতের বড় মাছ, মাছের পোনা ও জলজ প্রাণী মরে যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে নদীর ষাটনল এলাকায় কয়েক টন মাছ মরে গেছে। মাছগুলো মরে ভেসে গেছে এবং নদীর পাড়ে জমাট হয়ে পচে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম বলেন, মাছ মারা যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করা হবে। বর্জ্যের কারণে নদীর পানিতে অক্সিজেন কমে যাওয়ায় মাছ মরে ভেসে ওঠে।
তিনি আরও বলেন, খবর পাওয়ার পর পরই সহকারী মৎস্য কর্মকর্তাকে নদীর অবস্থা দেখতে পাঠানো হয়েছে। পানিতে মিশে থাকা দূষিত পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই পানি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
স্টাফ করেসপন্ডেট, ৩১ মার্চ ২০২৩
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur