মতলবের ছেংগারচরে টলিগাড়ি চালু রাখা দাবিতে মানববন্ধন

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর বাজারে পন্যবাহী টলি গাড়ি নির্বিঘ্নে চলাচলের দাবিতে ও চাঁদপুরের টিআই কর্তৃক হয়রানী বন্ধের দাবীতে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে উপজেলার ও ছেংগারচর পৌরসভার পন্যবাহী টলি গাড়ির শ্রমিক, মালিক সমিতি ও বাজারের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।

বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) বিকেলে উপজেলার ছেংগারচর বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে উপজেলা ও ছেংগারচর বাজারের টলি গাড়ির শ্রমিক,মালিক ও ব্যবসায়ীরা অংশ গ্রহণ করেন।

এসময় ছেংগারচর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোঃ ইয়াছিন খান, টলিগাড়ি মালিক সমিতির সভাপতি সোহরাব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন রিপন,শ্রমিক মুক্তার হোসেন খান,মোঃ শাহজালাল, রফিক, মোশারফ হোসেন,জগৎ, সৈকত, কামাল,আলী আকবরসহ বিভিন্ন টলিগাড়ির চালক,মালিক সমিতির সদস্যরা ও বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়রা মানববন্ধনে অংশ গ্রহণ করেন।

মানবন্ধনে তারা বলেন,চাঁদপুর থেকে আগত টিআই ও মতলব উত্তর থানা প্রশাসনের হয়রানির কারণে গত কয়েক দিন ধরে উপজেলার ও ছেংগারচর পৌরসভার পণ্যবাহী টলি গাড়ি বন্ধ রয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছে বাজারের ব্যবসায়ী ও টলিগাড়ির শ্রমিক ও মালিকরা। এখন টলি গাড়ি বন্ধ থাকায় ঢাকা নারায়নগঞ্জ থেকে নৌপথে আনা মালাল ট্রলার ঘাট থেকে বাজারের ব্যবসায়ীদের পণ্য না আনতে পারায় তারা পড়েছে চরম বিপাকে।

অপরদিকে বিভিন্ন রাস্তাঘাটের উন্নয়নের কাজে ব্যবহ্রত টলিগাড়ি বন্ধ থাকায় উপজেলার ঠিকাদারাও বিপাকে পড়েছে। এই ৬ চাক্কার টলি গাড়ি করে মালামাল আনা নেওয়ায় খরচ কম বিধায় তারা এই ৬ চাক্কার টলি গাড়িকেই ব্যবহার করে থাকে। এখন টলি গাড়ি বন্ধ থাকায় তারাও পড়েছে বিবপাকে।

মানববন্ধনে কয়েক জন টলিগাড়ির শ্রমিক আবেক আপ্লুত কন্ঠে বলেন, প্রশাসনের কারণে এবং প্রশাসন থেকে গাড়ি ধরার অভিযানের কারনে গত কয়েক দিন ধরে আমাদের টলিগাড়ি বন্ধ থাকায় আমরা সম্পন্ন বেকার হয়ে পড়েছি। আমরা এখন সম্পন্ন বেকার। আমাদের রুজিরোজগার নেই। বেকার হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে মরতে হচ্ছে । মানবেতর জীবন যাপন করছি। টলি গাড়ি চালিয়ে যে টাকা রোজগার করি তা দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চলে। এখন টলি গাড়ি বন্ধ থাকায় আমাদের পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। রোজার মাস আমাদের কর্মের দরকার। নতুবা পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে মারা যাব। তাই অবিলম্বে আমাদের কর্মসংস্থানের চিন্তা করে টলিগাড়ি চালু করার জন্য প্রশাসনের নিকট জোড়দাবী জানাই।

ছেংগারচর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোঃ ইয়াছিন খানসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান,গত কয়েক দিন ধরে টলিগাড়ি বন্ধ থাকায় আমরা নদী ঘাট থেকে বাজারে মালামাল আনতে পারছি। ভিন্নভাবে অন্যগাড়িতে আনতে গেলে আমাদের খরচ পড়ে যায় অনেক। যা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়না।

মতলব উত্তর উপজেলা টলিগাড়ি মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন রিপন জানান,গত কয়েক দিন ধরে প্রশাসনের কর্তৃক আমাদের টলি গাড়ি বন্ধ থাকায় উপজেলার উন্নয়ন কাজ থমকে গেছে। আমাদের টলিগাড়ি চালিয়ে অনেক মালিক সমিতির সদস্যরা ও শ্রমিকরা কর্মসংস্থানের একটা সুযোগ হয়েছে। এখন টলি গাড়ি বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। আমি মতলবের মন্ত্রী মহোদয়,সংসদ সদস্যের কাছে এ ব্যাপারে আমাদের টলিগাড়ি চলাচলে এবং পুলিশি হয়রানী বন্ধের জোড় দাবী জানাই। সংগঠনের আরেক নেতা এই টলি গাড়ি চালিয়ে ৭ থেকে ১০ হাজার শ্রমিক কাজ করে। তারা কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছে। গাড়ি বন্ধ থাকায় তারা না খেয়ে আচে। এই টলিতে করে উন্নয়নের কাজে,বিভিন্ন আসবাপত্র বাসাবাড়িতে, রড,সিমেন্টসহ বিভিন্ন প্রয়োজনয়ি জিনিসপত্র টলিতে করে নিয়ে যাওয়া হয় কম খরেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন গাড়িগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। আমি এনজিও থেকে টাকা সুতে উঠিয়ে গাড়ি কিনেছি। গত কয়েকদিন ধরে গাড়ি বন্ধ থাকায় আমি এখন ওই এনজিওর কিস্তি পরিশোধ করতে পারছিনা। আমাদের আজকের মানবন্ধনে প্রধান দাবী ছয় চাক্কার টলি গাড়ি চলতে দিয়ে আমাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আনুন।

নিজস্ব প্রতিবেদক, ১ এপ্রিল, ২০২২

Share