মতলব উত্তর

মতলবের ওসি’র উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রেমে ৪ কি.মি.রাস্তা মেরামত

আইন-শৃংখলা নিয়েই পুলিশের কারবার। আর যে কাজই হোকনা কেন পুলিশের কাছে গেলে টাকা লাগে সাধারণ মানুষের এমন ধারণা পাল্টে দিচ্ছেন মতলব উত্তর থানার ওসি মিজানুর রহমান। মানবিকতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। কথা হলে তিনি এমনটাই জানান।

সোমবার (২৯ জুলাই) মতলব উত্তর উপজেলা সদর ঘনিয়ারপাড়-ঢাকামুখী কালিপুর গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার জীবগাঁও থেকে পাঁচগাছিয়া পর্যন্ত এলাকায় পাকা রাস্তায় বেশ ক’টি বড় বড় গর্ত ও কয়েকটি স্থানে রাস্তা ধসে গিয়ে যানবাহন চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। এ বৃষ্টি মৌসুমে যা খুবই ভয়াবহ হয়ে পড়ে। ইঞ্জিন বিকল ও ছোট খাটো দুর্ঘটনা নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। থানা পুলিশের ৬ ঘন্টার স্বেচ্ছাশ্রমের ফলে রাস্তাটি স্বাভাবিক হয়।

রাস্তা মেরামতে ওসি মোরশেদুল আলম, এসআই গোলাম মোস্তফা,এসআই ইসমাঈল হোসেন, এসআই নাহিদ, এএসআই জ্ঞানময় চাকমা,এএসআই হাবিবসহ ১৪-১৫ জন অফিসার ফোর্স,পৌরসভার স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার রুহুল কুদ্দুস শ্রমিক সংগঠণ ও কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের স্থানীয় সদস্যদের নিয়ে একযোগে সড়কের বড় বড় গর্ত ও ভাঙ্গা অংশগুলো ইট-বালু দিয়ে এবং রোলার মেশিনে সমান্তরাল করে ৬ ঘন্টায় ৪ কি. মি. রাস্তা মেরামত কাজ সম্পন্ন করা হয়।

ওসি মিজানুর রহমান জানান, চাঁদপুরের পুলিশ সুপারের পরামর্শ ও উৎসাহে রিকসা, সিএনজি ও ব্যাটারী চালিত অটোরিকসা, ল্যাগুনাসহ অন্যান্য যানচালক ও যাত্রীদের কষ্ট লাঘব করতে তিনি পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ইট-বালি দিয়ে রাস্তা মেরামত করেন।

এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান। তবে তিনি ইট ভাটার মালিক ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইট ও আদলা দিয়ে সহযোগীতা করার জন্য।

মেরামতচলাকালীন কথাহলে এ রুটে চলাচলরত অটোচালক আবুল হাসেম, শিপন ও রুস্তম আলী বলেন,‘ভাই আমগো যাতায়াতের সুবিধার লাইগা পুলিশ আমগো রাস্তা মেরামত কইরা দিতাছে চৌখে না দেখলেতো বিশ্বাসই করতে পাড়তামনা।’

উপস্থিত রিকসাা চালক মোতালেব ও আব্দুল হাকিম জানায়, যাত্রী নিয়ে এ রাস্তা দিয়া যাইতে-আইতে আমগো জান বারইয়া যাইতো। দোয়া করি ওসি সাবরে আল্লায় অনেকদিন বাঁচাইয়া রাহুক।

ল্যাগুনা চালক ফজলু ও মোবারক জানায়, এ ভাঙ্গাূচড়া রাম্তাদিয়া গাড়ি চালাইয়া আমগো অনেক ক্ষতি। গাড়ির যন্ত্রপাতি দ্রুত নষ্ট অয় আর যাত্রীও উঠতে চায়না। মেরামত করনে আমগো অনেক উপকার অইছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ৭০ ্ঊর্ধ বয়সের মনির হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, নামাজে মসজিদে যাইতে আমার অনেক কষ্ট অইতো। বিশেষ কইরা এশা আর ফজর পড়তে মসজিদে যাইতেই পাড়তাম না। গর্ত আর খানা-খন্দকের লইগা। দোয়া করি আল্লায় পুলিশের বালা করুক।

প্রসঙ্গত,ওসি মিজানুর রহমান মতলব উত্তর থানায় যোগদানের পর পুলিশ ও বিসিএস এর ভেরিফিকেশনে প্রার্থীর বাড়ি বাড়ি মিষ্টি ও ফুল পাঠিয়ে দিয়েছেন। বর্ষায় চোর-ডাকাতের উপদ্রপ থেকে রক্ষায় ধনাগোদা বেড়িবাঁধের চারদিকে স্থানীয় অটো-সিএনজি চালক ও গ্রাম পুলিশের সমন্বয়ে বিশেষ পোষাকে রাত জেগে পাহাড়ার ব্যবস্থা করেছেন। রাতে পুলিশের নিজস্ব অর্থায়নে নাস্তা সরবরাহ করা হচ্ছে।

খান মোহাম্মদ কামাল
৩০ জুলাই ২০১৯

এজি

Share