Home / শীর্ষ সংবাদ / বিলুপ্তির পথে মতলবের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প
ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প
ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

বিলুপ্তির পথে মতলবের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

বাজারে প্লাস্টিকের সামগ্রীর চাপে বিলুপ্তির পথে মতলবের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মৃৎশিল্প। চাঁদপুর মতলব উপজেলার মৃৎশিল্পীদের ঘরে ঘরে হাহাকার নেমে এসেছে। মৃৎশিল্প ব্যবহার কমে যাওয়ায় বদলে যাচ্ছে দগরপুর কুমারপাড়ার দৃশ্যপট।

মতলবের দগরপুর পালপাড়া কুমারবাড়ির বাসিন্দাদের পরিবারে নেমে এসেছে দুর্দিন। কুমার বাড়ির চাকা আজ ঘুরে না। মাটির পুতুল হাড়ি, পাতিল, সরা, বাসন, কলসি, বদনার কদর এখন আর নেই বললেই চলে। সঠিক সময়ে বর্ষা না হওয়া মাটির উপাদাানের পরিবর্তন এবং এন্টুমিনিয়াম প্লাস্টিক দ্রব্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পারায় মৃৎশিল্পীরা হারাতে বসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য।

উল্লেখ থাকে যে, হাড়ি পাতিল ও কলসসহ যেকোনো মৃৎশিল্প তৈরিতে প্রধান উপকরণ হচ্ছে, এটেল মাটি ও জ্বালানি কাঠ শুকনো ঘাস ও খর। এ সময় মাটির তৈরি জিনিসের বহুমাত্রিক ব্যবহার ছিল। তখন এই শিল্পের সব মহলেই কদর ছিল। এ শিল্পের মালামাল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও ব্যবহার করা হতো।

সূর্য উঠার সাথে সাথে কুমাররা মাটি দিয়ে তৈরি পাতিল বোঝাই ভার নিয়ে দলে দলে মতলবের বিভিন্ন অঞ্চলে ছুটে চলেন বলে জানা যায়। তারা পাতিল, গাশলা, কুপি, বাতি, থালা ও দুধের পাত্র, ভাপা পিঠা তৈরির খাজ, গরুর খাবার পাত্র, কোলকি, ধান চাল রাখার পাত্র, মাটির ব্যাংক, শিশুদের নানা রকম নকশার খেলনা বিক্রি করতো পণ্যের বিনিময়ে ধান সংগ্রহ করে সন্ধ্যায় ধান বোঝাই ভার নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন।

মতলব (উত্তর) উপজেলার ‘নবুরকান্দি গ্রামের শংকর পাল ও মতলব (দক্ষিণ) উপজেলার দগরপুর গ্রামের নিরঞ্জন পাল বলেন, বর্তমানে মাটির হাড়িপাতিলের চাহিদা কমে গেছে। যারা বৃদ্ধ এবং অন্য কোনো কাজ জানেনা শুধু তারাই বাধ্য হয়ে এখনও এ পেশায় আছেন।

তিনি বলেন আগে নৌকা করে এটেল মাটি সংগ্রহ করতাম। আবার নিজেরাই নৌকা দিয়ে মাটির জিনিসপত্র বিক্রি করতাম।

এদিকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) মতলব (দক্ষিণ) উপজেলা কমিটির সভাপতি প্রবীন কমিউনিস্ট নেতা শুধাংশু সাহা বলেন, প্লাস্টিক সামগ্রীর ব্যাপক প্রসারের কারণে মাটির তৈরির জিনিসপত্রের চাহিদা দিন দিন কমে যাচ্ছে। মাটির তৈরি সামগ্রী তৈরি করার পর তা সঠিকভাবে বিক্রি হয় না।

ফলে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের প্রতিদিন লোকসান গুণতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই এই মৃৎশিল্প হারিয়ে যাবে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পকে আবারও জাগিয়ে তোলা সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন।

চাঁদপুর টাইমস রিপোট