চাঁদপুরের চরাঞ্চলে মটরশুঁটি চাষে ঝুঁকছে চাষীরা

চাঁদপুর জেলা দেশের একটি কৃষি ভিত্তিক নদীবিধৌত এলাকা। চাঁদপুরের আয়তন ১৭শ বর্গ কি.মি এবং আটটি উপজেলা নিয়ে গঠিত । প্রায় চাঁদপুরের সব উপজেলাগুলোতে কৃষি অঞ্চল রয়েছে ।

চাঁদপুর দেশের সর্ববৃহৎ চাঁদপুর সেচ প্রকল্প রয়েছে । এ প্রকল্পের ভেতর সকল প্রকার শাক-সবজি কৃষি পণ্য আবাদ হয়ে থাকে। এছাড়াও এতে দেশের সকল প্রকার ফল-ফলাদি উৎপাদিত হয়ে থাকে ।

চাঁদপুর জেলায় চাঁদপুর সদর হাইমচর এবং মতলব উত্তর উপজেলা ইউনিয়ন নদী ভাঙ্গনের শিকার। নদী ভাঙ্গনে এ তিনটি উপজেলার তিন লাখ মানুষ নদীভাঙ্গনের হয়ে পড়েছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ চরাঞ্চলে আবাসভূমি গড়ে উঠেছে । চরাঞ্চল গুলোর মধ্যে রয়েছে হাইমচরের মধ্যচর, গাজীপুর ও মাঝির বাজার

চাঁদপুর সদরে মধ্যে রয়েছে- ইব্রাহিমপুরের পশ্চিমাংশে ফতেজঙ্গপুর ও বাংলাবাজার । রাজরাজেশ্বরের বাশ গাড়ি জাহাজমারা । মতলব উত্তরে রয়েছে চর ইলিয়ট, ষষ্ঠ খন্ড বোরোচর ও কাসিম প্রভৃতি চরাঞ্চল। চরাঞ্চলে বিপুল পরিমাণ কৃষি ও শাকসবজি উৎপাদন হয়ে থাকে।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইরি-বোরো, মরিচ , ধান, পাট,চিনাবাদাম, সরিষা, সবজি, ,রসুন, ধনিয়া ও মটরশুটি অন্যতম ।

জেলার এসব চরাঞ্চলে মটরশুঁটির চাষ করে চরের কৃষকরা । মটরশুঁটি একটি জনপ্রিয় শিম প্রজাতির শীতকালীন সবজি । মটরশুঁটি বিভিন্নভাবে খাওয়া যায় । যেমন কাঁচা খাওয়া যায়, শুকিয়ে বীজ ডাল হিসেবে খাওয়া, ভেজে খাওয়া যায়, মটর শুটি শাক হিসেবে ও খাওয়া যায়। এটি একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর সবজি। মটরশুঁটি উদ্ভিজ্জ আমিষের একটি উৎকৃষ্ট উৎস।

আজকাল পারিবারিক অনুষ্ঠানের বিশেষ রান্নার আয়োজনে ও পরিপক্ক মটরশুটি ডাল হিসেবে গ্রাম বাংলায় অত্যন্ত জনপ্রিয়। আমাদের দেশে উৎপাদিত মটরশুঁটির একটি বড় অংশ ডাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

বর্তমানে আমাদের দেশে ব্যাপকহারে মটরশুঁটি চাষ করা হলেও চাঁদপুরে খুবই কম দেখা যায়। তবে চর এলাকায় তা চাষ করে কৃষকরা । শহর অঞ্চলে মটরশুঁটির খুবই কদর রয়েছে।

চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেস্বর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর পাড়ের কৃষকরা তাদের নিজস্ব জমিতে মটরশুঁটির আবাদ করেছেন। মটরশুঁটির আবাদের জমিগুলো দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। যেদিকে তাকাই সেদিকে মটরশুঁটির ফুল আর ফুল। খুব শীগ্রই ফল দেখা দিবে এ গাছগুলোতে। এক সময় চরাঞ্চলের জমিতে বহু কৃষক মটরশুঁটির আবাদ করতেন।

বর্তমানে অল্প পরিসরে চাষাবাদ হচ্ছে । এ ফসল উৎপাদনে খরচ কম পড়ে। কিন্তু এখন আর আগের মত সবাই চাষ করে না। তবে কৃষি বিভাগ থেকে চরাঞ্চলের কৃষকদেরকে আবারও মটরশুঁটি আবাদ করার জন্য প্রশিক্ষণ, প্রণোদনা ও উৎসাহ দিলে হারিয়ে যাওয়া এ ফসলের আবাদে সবাই আগ্রহী হবে।

এ ফসলটি ডাল,সবজি, শাক হিসেবে খাওয়া যায় এবং গো খাদ্য হিসেবে ব্যবহারকরা যায়। উৎপাদন খরচ খুব কম, বীজ ফেলার পর সামান্য সার ও নিড়ানি দিলেই হয়। কানি প্রতি ২৫-৩০ মণ ডাল পাওয়া যায় । খরচ কম হওয়ার কারণে অনেক কৃষক মটরশুটি চাষে ঝুঁকছে।

আবদুল গনি , ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

Share