বিশেষ সংবাদ

রিকশা-ভ্যান চালিয়ে সংসার চালানো তিথির গল্প

জীবন সংগ্রামে আত্মপ্রত্যয়ী এক তরুণীর নাম তিথি খাতুন (২০)। বৃদ্ধা মায়ের দেখভাল আর সংসারের দু’মুঠো খাবার জোগাতে বাধ্য হয়ে নিজেই রিকশাভ্যানের চালক হয়েছেন তিনি। পরিবারের জীবিকা নির্বাহে মাটি কাটা থেকে শুরু করে কঠোর সব পরিশ্রম করেছে তিথি।

নাটোরের সিংড়া উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা তিথি খাতুন । বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার রনবাঘা বাজারের বাসস্ট্যাডে দেখা মিলে এ তরুণীর।

সে ৬ ভাই বোনদের মধ্যে ছোট । বাবা ইয়াকুব আলী ছিলেন ভ্যানচালক। চার বছর আগে মারা গেছেন। অভাবের সংসারে পরিবারের কোন সন্তানের স্কুলের গ-ি পেরুনো হওয়া সম্ভব হয়নি তার । তার অন্য ভাইবোনরা আগেই নিজের পথ বেছে নিয়েছে। তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন গার্মেন্টসে চাকরি করার কথা।

অসুস্থ মায়ের কথা ভেবে গার্মেন্টস এর চাকরিতে যাওয়া হয়নি আর। তাই জীবিকার তাগিদে অসুস্থ বৃদ্ধা মায়ের পাশে দাঁড়াতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ভ্যান চালিয়ে সংসারের হাল ধরে ।

বগুড়ার রনবাঘা বাজার থেকে সিংড়ার বোয়ালিয়া বাজার পর্যন্ত যাত্রী আনা-নেয়া করছে তিথি । এতে করে প্রতিদিন ২শ’৫০ থেকে ৩ শ’ টাকা পর্যন্ত রোজগার হয় তার। তাই দিয়ে চলে সংসার আর চলে অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার খরচ। জীবনের তাগিদে সারা দিন ভ্যান চালালেও যেন ক্লান্তি নেই তার।

মায়ের সেবা যতœ সময়মতো নিজ হাতেই করেন। সময়মত খাবার আর ওষুধ খাইয়ে দিতে ভুলে না সে। তাই এ মায়ের এখন একমাত্র অবলম্বনই তার মেয়ে বিথি।

তার এমন কর্মে প্রতিবেশীরা তাকে একজন সংগ্রামী নারী হিসেবেই দেখে। প্রতিবেশীরা জানায়, তিথি কখনও বসে থাকে না সে। ভ্যান না পেলে মাটিকাটার কাজও করে। পরিশ্রমে তার কোনো ক্লান্তি নেই।

তিথি খাতুন জানায়, কঠিন বাস্তবতা উপলব্ধি করে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে আরও চার বছর আগে। এই বয়সে তার স্বামী সংসার করার কথা থাকলেও শুধু বৃদ্ধামায়ের কথা ভেবে তা আর সংসার করা হয়ে উঠেনি।

তার চাওয়া পাওয়ার যেন কিছুই নেই আর । সামান্য আক্ষেপ তিথির, সামান্য আর্থিক সহায়তা পেলে তাকে আর অন্যের ভাড়া করা ভ্যানের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। যে নিজের সুখ আর শান্তির কথা না ভেবে নারী হয়েও ভ্যান চালিয়ে সংসারের হাল ধরেছে। তাই সরকার অথবা বিত্তবানের সহায়তাই পারে তার একটি সুন্দর জীবন গড়ে দিতে। (আমাদের সময় )

নিউজ ডেস্ক ।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ৯:১৬ পিএম, ০৭ ডিসেম্বর ২০১৬, বুধবার
এজি/ এইউ

Share