Home / জাতীয় / অর্থনীতি / কমছে না ভোজ্যতেলের দাম
ভোজ্যতেলের

কমছে না ভোজ্যতেলের দাম

আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বাজারেও তা বেড়ে যায়। কিন্তু দাম কমলে দেশের ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে কমান না। গত এক মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে কেজিতে দাম কমেছে ৭ টাকার বেশি। কিন্তু ভোক্তা পর্যায়ে তার কোনো প্রভাব নেই। ওদিকে নতুন পেঁয়াজের আগমনে পাইকারি বাজারে দাম অনেকটাই কমেছে। তবে ভোক্তা পর্যায়ে দাম কমলেও পাইকারির চেয়ে ব্যবধান অনেক বেশি।

পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারের ভোজ্যতেলের পরিবেশকেরা জানান, আগে প্রতি মেট্রিক টন সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১ হাজার ৪৪০ ইউএস ডলার বা ১ লাখ ২২ হাজার ৪০০ টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা হিসাবে)। বর্তমানে দাম কমে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩৫০ ডলার বা ১ লাখ ১৪ হাজার ৭৫০ টাকা। অর্থাৎ টনপ্রতি দাম কমেছে ৭ হাজার ৬৫০ টাকা। কেজিতে দাম কমেছে ৭ টাকা ৬৫ পয়সা। কিন্তু খুচরা পর্যায়ে কোনো দাম কমেনি।

বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী ভুট্টো বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম অনেকটাই কমায় পরিবেশক পর্যায়ে কমেছে। আগে প্রতি মণ সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৫ হাজার ৫০০ টাকা। গতকাল তা বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ৩৭০ টাকায়। আর ৫ হাজার ১০০ টাকার পাম তেল বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ১০ টাকায়।

খুচরা ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল অক্টোবর থেকে বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা। ৫ লিটারের বোতল ৭০০-৭৬০ টাকা। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৩৮-১৪৫ টাকা, সুপার পাম ১৩৪-১৩৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে পাম তেলের দাম সামান্য কমে ১২৮-১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘বাজার ব্যবস্থাপনা সরকারের নিয়ন্ত্রণে না থাকায় গুটিকয়েক ব্যক্তির কাছে সীমাবদ্ধ রয়েছে। মুক্তবাজার মুখে বলা হলেও এখানে মুক্ত মিশ্র অর্থনীতির বাজার চলছে।’

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও দেশে কেন কমানো হচ্ছে না? এ প্রসঙ্গে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, তাঁদের কাছে যে তেল সরবরাহ রয়েছে, তা আগে ১ হাজার ৪৬০ ডলারে কেনা। কাজেই এই মুহূর্তে দাম কমানো সম্ভব নয়। ট্যারিফ কমিশনের অনুমোদন ছাড়া তাঁরা ইচ্ছা করলেই দাম বাড়াতে পারেন না বলে জানান তিনি।

রাজধানীর খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কমলেও পাইকারি বাজারের চেয়ে খুচরায় ব্যবধান অনেকটাই বেশি। বুধবার রাজধানীর পাইকারি বাজারে যে পেঁয়াজ ২৭-৩২ টাকায় বিক্রি হয়েছে, তা খুচরা পর্যায়ে ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দামের ব্যবধান বেশি থাকায় ভোক্তারা ঠকছেন। তবে অনেক খুচরা দোকানে পুরোনো হালি পেঁয়াজের সরবরাহ থাকায় এটির দাম কমতে আরও সময় লাগবে বলে জানা গেছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব অনুযায়ী, বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০-৭০ টাকায়, যা দুই দিন আগে ছিল ৬৫-৮০ টাকা। এ সময়ের ব্যবধানে কেজিতে দাম কমেছে ১৭ দশমিক ২৪ শতাংশ।

পেঁয়াজচাষিরা জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানেই পেঁয়াজ তোলা শুরু হয়েছে। এই পেঁয়াজ ঘরে বেশি দিন ধরে রাখা যায় না। কাজেই তাঁরাও এই পেঁয়াজ জমি থেকে তোলার পরপরই দ্রুত বিক্রি করার চেষ্টা করছেন।

শ্যামবাজারের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা জানান, দু-তিন ধরে বাজারে পেঁয়াজের ব্যাপক সরবরাহ বেড়েছে। এখন পেঁয়াজ রাখার জায়গা সংকট দেখা দিয়েছে। আর এতে দামও দফায় দফায় কমে এসেছে। আগামী সপ্তাহে দাম আরও কমবে বলে মনে করছেন তাঁরা।