Home / উপজেলা সংবাদ / ফরিদগঞ্জ / চাঁদপুর টাইমসে সংবাদ প্রকাশের পর ভুয়া তান্ত্রিককে মুচলেকা দিয়ে ছাড়
Vua, Tantrik

চাঁদপুর টাইমসে সংবাদ প্রকাশের পর ভুয়া তান্ত্রিককে মুচলেকা দিয়ে ছাড়

ফরিদগঞ্জে মুকবুল হোসেন নামের সেই ভূয়া তান্ত্রিক কবিরাজ আর কখনও প্রতারণা করবে না মর্মে উপজেলা প্রশাসনের কাছে এমনি মুচলেকা দিয়ে ও ক্ষমা চেয়ে ছাড়া পেয়েছেন তিনি। এর আগে চাঁদপুর টাইমসে তার প্রতারণার খবর ছাপা হলে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তার নজরে যায়।

তিনি এ ব্যপারে প্রতিকার চেয়ে চাঁদপুরের সিভিল সার্জনকে অবহিত করলে সেখান থেকে ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়। মঙ্গলবার সকালে পুলিশের সহায়তায় মুকবুল হোসেনকে থানায় নিয়ে আসা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর টাইমসে প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার মাধ্যমে ভুয়া কবিরাজ মুকবুল আহম্মদের প্রতারণার খবর পায় ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। এতে ইউএনও’র দায়িত্বে থাকা এসি ল্যান্ড (সহকারী কমিশনার ভূমি) ইয়াছিন হোসেন শিমুল বিষয়টি দেখার জন্য ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন।

ফলে, ফরিদগঞ্জ থানার এসআই. নাজমুল হুসেন, এএসআই সফিকুল ও ডিএসবির এএসআই. আল আমিনসহ একদল পুলিশ মুকবুলকে আটক করে নিয়ে যায় ফরিদগঞ্জ থানায়।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে তাকে হাজির করা হয় এসি (ল্যান্ড) এর কার্যালয়ে। সেখানে মুকবুল হোসেন প্রতারণামূলক কবিরাজির কথা শিকার করে ক্ষমা চেয়ে বলেন, এমনি প্রতারণা আর কখনও করবে না।

এরইমধ্যে তার কৃত কর্মের জন্য তিনি ক্ষমাও চান। এতে, উপস্থিত এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের দু’ জন মেম্বার মিজানুর রহমান ও শরিফ হোসেন, ভ‚য়া কবিরাজ মুকবুল হোসেন এর মামা হান্নান বেপারী ও সংবাদ কর্মীদের সামনে কবিরাজ লিখিত মুচলেকা দেন। এতে, এসি ল্যান্ড সকলের মতামত নিয়ে তাকে সতর্ক করে ইউপি মেম্বারদের জিম্মায় ছেড়ে দেন।

প্রসঙ্গত, উপজেলার ১২ নং চরদুঃখিয়া ইউনিয়নের চরচন্না গ্রামের রিক্সাচালক মুকবুল হোসেন (৩৮)। সে হঠাৎ করেই নিজেকে তান্ত্রিক পরিচয়ে তন্ত্র-মন্ত্র, তেলপড়া, সুতাপড়া, পানিপড়া, পেয়াজপড়া দিয়ে গ্রামের সহজ সরল শিশু কিশোর নারী গুরুষের সঙ্গে প্রতারণা করছিলো। অন্ধ বিশ্বাসের ওপর ভর করে প্রতিদিন তার বাড়িতে ভীড় করছিলো শিশু কিশোরসহ শত শত নারী পুরুষ। সুযোগ পেয়ে মুকবুল আহম্মদ নামের ওই ভুয়া কবিরাজ প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছিলো হাজার হাজার টাকা পয়সা। তাকে কেন্দ্র করে গত প্রায় দেড় মাসে এক শ্রেণির দালাল চক্র গড়ে উঠেছিলো। দালালরা তাকে বেষ্টনী দিয়ে রাখে।

এ ভুয়া কবিরাজের কাছে গেলে সর্ব রোগ-শোক থেকে পরিত্রাণ পাবে বলে তারা প্রচার করছিলো। গ্রামে গত প্রায় দেড় মাস যাবত চলছিলো তার প্রতারণামূলক ভুয়া কবিরাজি ব্যবসা।

মুকবুল হোসেন তার তদ্বিরের বিনিময়ে ১০১ থেকে ৫০১ টাকা নিয়েছেন। আরোগ্য লাভের আশায় তার কাছে যারা গেছেন, তাদের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় হাত-পায়ে, বুকে পিঠে ব্যথা, হাড় ভাঙ্গাসহ হাঁটুর বাটি ভেঙ্গে যাওয়া রোগী যেমন আছে। তেমন আছে নাকের পলিপাসের রোগী। ভ‚তেধরা, বুক ও পেটের ব্যথা, মাথা ঘুরানো, মানূষ হারিয়ে যাওয়া, স্বামী-স্ত্রীর অমিলসহ পারিবারিক অশান্তির সমাধানও দেন তিনি।

খবর পেয়ে এ প্রতিবেদক তার বাড়িতে গিয়ে সরজমিন রিপোর্ট করলে, ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শিপন জাহাঙ্গীর চাঁদপুরের সিভিল সার্জনের সহায়তায় ভ‚য়া কবিরাজ মুকবুলকে প্রতারণার বিষয়টি ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের নজরে আনেন।

এ ব্যপারে সহকারী কমিশনার ভূমি ইয়াছিন হোসেন বলেছেন, ‘ভুয়া কবিরাজ মুকবুল হোসেন পারিবারিকভাবে দরিদ্র্য। তাই প্রথমবারের মতো তাকে সংশোধনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। প্রতারণার গোড়াতেই বিষয়টি প্রশাসনের নজরে দেয়ার জন্য তিনি গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানান ও মিডিয়ার অব্যাহত সহযোগিতা কামনা করেন।’

আতাউর রহমান সোহাগ
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১২:০৩ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০১৮, বুধবার
ডিএইচ