চাঁদপুর জেলা শিশু একাডেমির নিজস্ব কোনো ভবন নেই। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম চলছে ভাড়া করা বাড়িতে।
নিজস্ব ভবন না থাকায় একাডেমির শিশুদের নাচ, গানসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে ভীষণ সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে বাড়িটির কক্ষগুলো ছোট হওয়ায় শিশুদের গাদাগাদি করে প্রশিক্ষণ নিতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, চাঁদপুর স্টেডিয়ামের আব্দুল মালেক ক্রীড়া ভবনের নিচ তলার দুটি ছোট কক্ষে চলছে শিশু একাডেমির দাপ্তরিক কার্যক্রম। পাশের আরও দুটি কক্ষের একটিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এবং আরেকটিতে গ্রন্থাগারের কার্যক্রম চলে। দ্বিতীয় তলায় চলে নাচ, গান ও চিত্রাঙ্কন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। বর্তমানে সব মিলিয়ে ৬ থেকে ১৫ বছর বয়সী ২২৫ জন শিশু প্রশিক্ষণ নিচ্ছে এখানে।
জেলা শিশু একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, প্রতি শুক্রবার দুপুরের পর থেকে বিকেল পর্যন্ত নাচ, গান ও চিত্রাঙ্কন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষক আছেন ছয়জন। এ ছাড়া এখানে ৪-৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য বিনা বেতনে প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এর আওতায় ৩০ জন করে মোট ৬০ জন শিশুকে পাঠ দেওয়া হয়, যার বিনিময়ে দুজন শিক্ষককে মাসে মাত্র ১ হাজার ৫০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়। তাঁরা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ক্লাস নেন।
শিশু একাডেমির গানের শিক্ষক মৃণাল সরকার বলেন, ‘স্টেডিয়ামের এই ভবনে ছোট ছোট কক্ষে গাদাগাদি করে আমাদের ক্লাস করাতে হয়। অনেক সময় স্টেডিয়ামে খেলাধুলা থাকলে হইচইর কারণে পাঠদান ব্যাহত হয়।’
শিশুশিক্ষার্থী সিদরাতুল মুনতাহা তাসফিয়ার বাবা বি এম হান্নান বলেন, ‘এ একাডেমিতে আমার মেয়েসহ বেশ কিছু শিশু অনেক কষ্টে বারান্দায় চিত্রাঙ্কন শিখছে। জায়গা না থাকায় তারা ছোট একটি কক্ষে গান শিখছে।’
শিশু একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর সরকারি বিভিন্ন দিবসে সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক ও উচ্চবিদ্যালয়ে চিঠি দিয়ে নাচ, গান, আবৃত্তি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আহ্বান করা হয়। সরকারি সামান্য বাজেট দিয়ে এসব প্রতিযোগিতা সম্পন্ন করা হয়। শিশু একাডেমির শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার অর্জন করে আসছে।
জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা কাউসার আহমেদ বলেন, ‘আমরা ২০০৬ সাল থেকে অনেক কষ্ট করে চাঁদপুর স্টেডিয়ামের আব্দুল মালেক ক্রীড়া ভবনে আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। নতুন ভবন করার জন্য আমাদের ৩০ শতাংশ জমির প্রয়োজন। ইতিমধ্যে সরকার নতুন ভবন করার জন্য ৫ কোটি টাকা আমাদের বরাদ্দ দিয়েছে। বর্তমান জেলা প্রশাসক আমাদের চাঁদপুর শহরের ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে আরেকটি জায়গা দেবেন বলে জানিয়েছেন।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মণ্ডল বলেন, ‘আমরা শিশু একাডেমীর ভবন করার জন্য দু-একটি জায়গার প্রস্তাব করেছি। তারা পছন্দ করলে আমরা সেই জায়গা তাদের ব্যবস্থা করে দেব।’
করেসপন্ডেন্ট
: আপডেট, বাংলাদেশ সম ১০: ০০ পিএম, ৮ জুন ২০১৭, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur