‘গণপরিবহনে নয়, ব্যক্তিগত গাড়িতে ঈদে বাড়ি যাওয়া যাবে’- করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারের এমন ঘোষণার সুযোগ নিচ্ছে কিছু অসাধু চালক। অন্যদিকে মহামারির মধ্যেও প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে সেই সুযোগ লুফে নিচ্ছেন নগরবাসী।
২২ মে শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরের সিটি গেট, শাহ আমানত সেতু, কালুরঘাট-কাপ্তাই রাস্তার মাথা ও অক্সিজেন এলাকার সূত্র এমন তথ্য জানিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, দক্ষিণ চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাস স্টেশন, উত্তর চট্টগ্রামের অক্সিজেন বাস স্টেশন ও ঢাকা-কুমিল্লাসহ উত্তরবঙ্গগামী অলংকার বাস স্টেশন থেকে দূরপাল্লার পরিবহন ছাড়ছে না। তবে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে অনেকেই টার্মিনালের আশপাশে এসে অবস্থান নেন দিনভর। তাদের অনেকে মাইক্রোবাস বা কার ভাড়া করা গাড়ি নিয়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন, যাকে এখন বলা হচ্ছে ‘ব্যক্তিগত’ গাড়ি।
শুক্রবার বিকেলে নগরের সিটি গেট এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম।
নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তৌহিদুল বলেন, ‘ঈদে বাড়ি যাওয়ার জন্য লোকজন মাইক্রোবাসকে ব্যক্তিগত গাড়ি বানিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী অভিমুখে সিটি গেট অতিক্রম করে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা করছে কিছু অসাধু চালক।’
এ ক্ষেত্রেও যাত্রী ও চালকরা সুযোগের আশ্রয় নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যাত্রীরা সিটি গেটের আগে গাড়ি থেকে নেমে চেকপোস্ট পর্যন্ত হেঁটে যান। তখন গাড়ি বা মাইক্রোবাসগুলোও ফাঁকা থাকে। সিটি গেটের ট্রাফিক পুলিশ গেট অতিক্রম করে আনুমানিক ৩০০-৪০০ গজ পরে যাত্রীরা ভাড়ায় চালিত কার কিংবা মাইক্রোবাসে এমনকি পিক-আপে কৌশলে উঠে শহর ছাড়ছেন।’
ব্যক্তিগত গাড়িতে ঈদে বাড়ি যাওয়ার সুবিধা নেয়ার বিষয়ে তিনি জানান, বিভিন্ন স্টেশনে জমায়েত কয়েকজন একত্রিত হয়ে কার, পিকআপ, মাইক্রোবাস অথবা হাইচ ভাড়া করছে। চেকপোস্টে গাড়ি থামানো হলেই বলছে ব্যক্তিগত গাড়িতে বাড়ি যাচ্ছি। এ বিষয়টি হাতেনাতে ধরা পড়ে অভিযানে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এভাবে ফাঁকি দিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টার সময় ছয়টি প্রাইভেটকার এবং দুটি মাইক্রোবাস আটক করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ছয়টি গাড়ির চালকরাই অন্য মালিকের কাছ থেকে ধার নিয়ে কৌশলে যাত্রী গণহারে পরিবহন করছিলেন। তখন ওসব গাড়ির সব যাত্রীকে তাদের চট্টগ্রামের নিজ বাসায় ফেরত পাঠানো হয়। ছয়জন চালককে ব্যক্তিগত আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনায় ৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।’
এর আগে গত রোববার (১৭ মে) সন্ধ্যায় আসন্ন ঈদুল ফিতর সামনে রেখে ঈদে বাড়ি যাওয়া ঠেকাতে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে প্রবেশ ও বহির্গমনে ফের নিয়ন্ত্রণ আরোপের কথা জানায় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে সরকারের উচ্চমহল থেকে পুলিশের প্রতি নির্দেশনা আসে, ছুটিতে জরুরি কাজের জন্য কেউ যদি নিজস্ব গাড়িতে গ্রামের বাড়ি ফিরতে চান তাহলে তাদের যেন অনুমতি দেয়া হয়। তাদের যেন খুব বেশি হয়রানি বা প্রশ্নোত্তরের শিকার না হতে হয়। তবে গণপরিবহন চলবে না। এখন সেই সুযোগই নিচ্ছে অসাধু চালক ও বেপরোয়া নগরবাসী।
বার্তা কক্ষ,২৩ মে ২০২০