জাতীয়

ভালোবাসায় অশ্রুসিক্ত জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি শফিকুর রহমান

দেলোয়ার হোসাইন | আপডেট: ১০:০২ অপরাহ্ণ, ২৮ আগস্ট ২০১৫, শুক্রবার

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক মুহম্মদ শফিকুর রহমান নিজ জেলা চাঁদপুরে সাংবাদিকদের সংবর্ধনা ও ভালোবাসায় সিক্ত হন। জন্মস্থানে সংবর্ধিত হতে পেরে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। এসময় তাঁকে অশ্রুসজল হয়ে চোখের পানি মুছতে দেখা যায়।

শুক্রবার চাঁদপুর প্রেসক্লাব আয়োজিত সাংবাদিক সমাবেশ ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে চাঁদপুরের সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ শুভেচ্ছা বক্তব্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমানকে ‘চাঁদপুরের কৃতী সন্তান’ ও ‘সাদা মনের মানুষ’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

জেলার সকল সাংবাদিকদের উপস্থিতি ও সিনিয়র সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে সংবর্ধিত শফিকুর রহমান আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। অশ্রুসজ্জল চোখে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমি চাঁদপুরের সন্তান, এখান থেকে পার্লামেন্ট মেম্বার হওয়ার জন্য চেষ্টা করেছি, হতে পারিনি। আমার মনে হয় যদি হাজার বছর ধরে পার্লামেন্ট মেম্বার থাকতাম তাহলেও এতো সম্মান পেতাম না, যা আমার লোকেরা (চাঁদপুরের সাংবাদিকগণ) করেছে এজন্য সত্যিই আমি মুগ্ধ। এছাড়া আমার চাচা অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেনের কাছ থেকে ক্রেস্ট গ্রহণ করতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।”

সংবর্ধিত হতে পেরে চাঁদপুরের সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা পোষণ করে বলেন, ‘‘আমি কৃতজ্ঞতা দিয়ে আপনাদের ছোট করতে চাই না। আপনাদের ঋণ পরিশোধ করে শেষ করতে পারবো না।’’

সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া সংক্রান্ত বিষয়ে লক্ষ্য করে বলেন, “আমি কখনো রাজনীতি করে, কখনো সামাজিক অঙ্গনে থেকে আমার এলাকার মানুষদের সহযোগিতা করতে চেষ্টা করেছি। এক্ষেত্রে কলমের সাহায্যে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছি, যা অব্যাহত থাকবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘‘আপনাদের দাবি অনুযায়ী আমি চেষ্টা করেছি চাঁদপুর থেকে কমপক্ষে ১জন সাংবাদিককে প্রধানমন্ত্রীর বিদেশে সফরসঙ্গী করার জন্যে।’’

জাতীয় প্রেসক্লাব বিতর্কিত আইসিটি আইন ৫৭ (১) ধারা নিয়ে বিবৃতি না দেয়োর প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা (জাতীয় প্রেসক্লাব) আইসিটি আইন ৫৭ (১) ধারা নিয়ে কোনো বিবৃতি দেইনি। কারণ, এই আইনটি মূলত দেশ থেকে জঙ্গিবাদ দমনের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।”

জঙ্গিদের দ্বারা পরিচালিত বিদেশী কিছু ওয়েবসাইটের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক অঙ্গনে থেকে জঙ্গিরা অনলাইন ও সামাজিক মাধ্যমে সম্প্রতি তার তাদের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং যাকে-তাকে মারার হুমকি দিচ্ছে। এছাড়া দেশের অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী, কারো মানহানিকর এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে সংবাদ পরিবেশনকারীদের আইনের আওয়তায় আনার জন্যেই এই আইসিটি আইন। তবে এ বিষয়ে আরেকটি আইন সহসাই সংসদে পাস হবে, আশা করি সেই আইন হলে বর্তমান ৫৭ (১) ধারার আইনটি বাতিল হবে।”

এর আগে তিনি চাঁদপুরের প্রতিটি উপজেলা সাংবাদিকদের নিয়ে প্রেসক্লাব চত্ত্বরে পৃথক ফটোসেশনে অংশ নেন। স্থানীয় ১৩টি দৈনিক, প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ, উপজেলা প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ, চাঁদপুর জেলা ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের পক্ষে ফুলেল শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন।

ফ্রিল্যান্সার সাংবাদিক মুহম্মদ শফিকুর রহমান ১৯৪৯ সালে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষাজীবনে তিনি ফরিদগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কামিল, চাঁদপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে এইচএসসি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ¯œাতোকোত্তর পাস করেন।

এছাড়া তিনি সাংবাদিকতা বিভাগে বিভিন্ন দেশ থেকে একাধিক ডিগ্রি অর্জন করেন।

এর আগে শুধুমাত্র জেলার সকল সাংবাদিকগণকে নিয়ে দিনব্যাপী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে ঐক্যের ডাকে সাড়া দেন সংবাদ সংশ্লিষ্ট একাধিক গুরুত্বপূর্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

সমাবেশে সাংবাদিকদের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে মুক্ত আলোচনা করা হয়। এক প্রস্তাবে জাতীয় সাংবাদিক শওকত মাহমুদের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করা হয় এবং নিন্দার বিষয়টি সাংবাদিকদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রেসক্লাবে রেজুলেশন আকারে লিবিপদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়।

চাঁদপুর টাইমস : ডিএইচ/এমআরআর/২০১৫

Share