চাঁদপুর শহরে গভীর রাতে যুবককে জবাই করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ৫ জন আহত ও ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।
রোববার (১২ নভেম্বর) রাত ১২টায় শহরের কুমিল্লা রোডস্থ আখন্দ মাকেটের সামনে,পালবাজার গেইটের সামনে ফল বিতানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
চাঁদপুর শহরের বকুলতলা,রেলওয়ে কোর্ট স্টেশন এলাকা ও পালবাজার এলাকায় ২ পক্ষের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘ দিন যাবত ২পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছিল।
এ জের ধরে সাদ্দামকে মোবাইলে রানা অশালিন গাল মন্দ করার প্রতিবাদ করায় ও পূর্ব শত্রুতার কারণে বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিকলীগ চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২৪) নামক যুবকে সড়কের উপর ফেলে ধুারালো বারমিজ ছুরি দিয়ে জবাই করে দেওয়ার প্রস্তুতি নেয়।
এ সময় একদল যুবক চাইনিজ ও বারমিজ(ছুরি) অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপুরি কুপিয়ে গলার নীচে কেটে ফেলে এবং হাত ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে রক্তাক্ত যখম করে।
যুবক সাদ্দামকে সোমবার বিকাল ৫ টায় ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে অপারেশন করা হয়েছে। সে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর প্রহর গুনছে। এই ঘটনায় দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে কমপক্ষে ৫জন সাদ্দামের সহপাঠী আহত হয়েছে।
পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার ৩ যুবককে আটক করেছে। আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন চাঁদপুর মডেল থানা উপ-পরিদর্শক মোঃ রাশেদুজ্জামান।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ১০জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত নামা ৫ থেকে ৬জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই ঘটনায় পুলিশ পাখি (২৫), দ্বীন ইসলাম দিনু মাল (২৪) ও আমিন হোসেন(২২) কে আটক করেছে।
পুলিশ সূত্রেও মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার কারণে চাঁদপুর শহরের কুমিল্লা রোড দিয়ে রবিবার রাত অনুমান ১২টার দিকে সাদ্দাম হোসেন তার সহপাঠীরাসহ বাসায় যাচ্ছিল। এ সময় পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা একদল সন্ত্রাসী প্রকৃতির যুবক সাদ্দামের পথ রোধ করে। পরে তাকে সড়কের উপর ফেলে জবাই করে দেওয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় সাদ্দাম শক্তি প্রয়োগ করে উঠে দৌড়ে পালাতে গেলে তাকে পিছন দিক থেকে দৌড়ে এসে যুবক রানা, পিন্টু পাটওয়ারী,আরমান ও মিশু চাইনিজও বারমিজ ধারালো চাপাতি,ছুরি,ছেনীও লোহার রড জাতীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গলায়, হাতে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে রক্তাক্ত যখম করে। এই সময় তার সাথে থাকা সহপাঠী রাসেল, কাজল মিয়া, রিয়াদ, হারুন ও ছিডা ফকির নামে ৫জনকেও যুবকরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। তাদেরকে তাৎক্ষণিক এলাকাবাসী উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।
সাদ্দামের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে তার কেটে যাওয়া গলার রক্ত বন্ধ না হওয়ায় ধানমন্ডি পপুলার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে বিকেল ৫টায় সাদ্দামকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে অপারেশনের পর তার চিকিৎসা চলছে।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সাদ্দাম হাসপাতালের বেডে মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। আহত ৫ যুবক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এই ব্যাপারে চাঁদপুর মডেল থানায় সোমবার বিকেল ৫টায় রক্তাক্ত জখম সাদ্দামের ভাই শরীফ হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় অভিযুক্তরা হচ্ছেন, রানা (২৩),পিতা কালু গাজী, পিন্টু পাটওয়ারী (৪৫), আরমান (২৩), মোঃ মিশু (২৪), মোঃ শরিফ সরকার (২৬),পিতা দেলোয়ার হোসেন সরকার, মোঃ দেশ (২৪), মোঃ শামীম (২৪), পাখি (২৯), দ্বীন ইসলাম দিনু মাল (৩০) ও আমিন হোসেন (৩০),পিতা পরপ বেপারী। এদের বাড়ি শহরের গুয়াখোলা,বকুলতলা রোড,কুমিল্লা রোড, চৌধুরী কলোনী, স্ট্যান্ড রোড ও পুরাণ বাজার এলাকায়।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানায়, ঘটনার সাথে জড়িৎ থাকার অপরাধে ৩জনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদেরকে আটকের চেষ্টা চলছে।
সিনি. স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
: আপডেট, বাংলাদেশ ১০ : ০৩ এএম, ১৩ নভেম্বর, ২০১৭ সোমবার
ডিএইচ