আন্তর্জাতিক

ভারতে স্কুলে মাইক বেঁধে বাড়িতে শ্রুতিপাঠ

করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশে দেশে চলছে লকডাউন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলছে দীর্ঘ ছুটি।

তাই বলেতো আর লেখাপড়া বন্ধ রাখা যায় না!এ জন্য ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ নিয়েছে ভারতের বীরভূমের দুটি পাঠশালা।

স্কুলের মাইকে চলছে পাঠদান। আর শিক্ষার্থীরা বাড়ি বসে ক্লাস করছে। লকডাউনের মধ্যে শ্রুতিপাঠের মধ্য দিয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে বীরভূমের সিউড়ি ১ ব্লকের নগরী পঞ্চায়েতের আমগাছি গ্রামের উদয়ন পাঠশালা ও মল্লিকপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গজালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা শুরু হল।

স্কুলের মাইকে ভেসে এল স্বাস্থ্যবিধানের গান, সহজপাঠের কবিতা। একটু পরে শুরু হল বানান শিক্ষা। শেষে হল নামতা। আর বাড়ির উঠোনে চাটাই বিছিয়ে সে সব শুনে, লিখে নিল খুদে শিক্ষার্থীরা।

পাঠ্যবইয়ের সিলেবাস ধরে ক্লাসে যেভাবে পড়ান শিক্ষক-শিক্ষিকারা, ঠিক সেই ভাবেই রেকর্ড করে এনে পড়ানো হয় স্কুল চত্বর থেকে। ছাত্ররা যাতে বাড়িতে বসেই শিক্ষিকার আওয়াজ শুনতে পায়, সে জন্য তিনটি করে মাইক বাজানো হয় দু’টি গ্রামে। তা শুনে নিজেদের পড়া তৈরি করে গজালপুর স্কুলের বনশ্রী মুর্মু, ফুলমণি কিস্কু, রবিলাল মুর্মু আর উদয়ন পাঠশালার সূর্য সরেন, শিবনাথ হাঁসদা, সুমি হেমব্রমদের মতো ৩০ জন পড়ুয়া।

লকডাউনে স্কুল বন্ধ রয়েছে। অনলাইন এবং টিভিতে কিছুটা হলেও পঠনপাঠনের সুযোগ পাচ্ছে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। প্রাথমিকে সেই সুযোগটুকুও নেই। সবচেয়ে করুণ অবস্থা গ্রামের ছাত্রদের। এমনটা চললে বাড়তে পারে ঝড়ে পড়ার হার।

এ জন্যই শিক্ষা দানের এই অভিনব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আপাতত দু’টি স্কুলে পরীক্ষামূলক ভাবে শ্রুতিপাঠ শুরু হয়েছে। সাফল্যে পেলে অন্য স্কুল ও প্রাথমিকের অন্য ক্লাসেও এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে বলে জানান স্কুল কর্তৃপক্ষ।

উদয়ন পাঠশালার সহ শিক্ষক বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং গজালপুর স্কুলের টিআইসি মলয় মণ্ডল জানান, ব্লকের দুই প্রাথমিক শিক্ষিকাকে দিয়ে পড়া রেকর্ড করানো হয়। সেটাই এ দিন বাজিয়ে শোনানো হয়েছে।

ঠিক মতো পড়ছে কিনা দেখার জন্য নিজেরা এবং এলাকার দু’জন করে শিক্ষিত আদিবাসী যুবক ছিলেন। যারা সাঁওতালি ভাষায় সেই পাঠ বুঝিয়ে দিয়েছেন।

এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি প্রলয় নায়েক বলছেন, ‘বাচ্চাদের নতুনের প্রতি আগ্রহ থাকে। বাড়িতে বসে পড়তে পারলে তারা নিশ্চয়ই উপকৃত হবে।

Share