আন্তর্জাতিক

ভারতের হরিয়ানায় বিক্ষোভরত নারীদের তুলে নিয়ে মাঠে গণধর্ষণ

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে হরিয়ানা রাজ্যের মুর্থালে গত সপ্তাহে চাকরি ক্ষেত্রে কোটা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার দাবিতে জাঠ সম্প্রদায়ের আন্দোলনের আড়ালে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ সহিংসতার সময় ওই রাজ্যে গাড়িতে চলাচলকারী নারীরা গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে তথ্য রয়েছে।

তবে স্থানীয় পুলিশ বলছে, গত রোববার রাতে গণধর্ষণের তথ্য তারা পেলেও এ বিষয়ে কেউ মুখ খুলছে না, কোনো প্রত্যক্ষদর্শী এগিয়ে আসছে না, কেউ কোনো অভিযোগও করেনি। এছাড়া স্থানীয় গ্রামবাসীরাও কিছু বলছেন না।

হরিয়ানা রাজ্যের পুলিশ প্রধান যশ পল সিঙ্গাল বলেন, আমরা এ ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক, সাধারণ মানুষকে এ বিষয়ে তথ্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি, এ ঘটনার তদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

তিনি বলেন, ওই এলাকা থেকে কিছু জামা-কাপড় উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছি; কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল কি না। জাঠ বিক্ষোভে ধর্ষণের ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ নেওয়ার জন্য তিন নারী পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

হরিয়ানা বিক্ষোভে গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে তীব্র বিতর্কের মুখে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এমএল খাত্তার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভের সময় হরিয়ানায় ৩০ জনের একটি দল গাড়ি থেকে নারীদের তুলে নিয়ে মাঠে গণধর্ষণ করেছে। এ রকম অন্তত ১০টি গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। পরে গাড়িগুলো আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, পরিবারের সদস্যরা এসে গণধর্ষণের শিকার ওই নারীদের উদ্ধার করেন। তারা আরো বলেন, এ বিষয়ে যাতে কোনো ধরনের অভিযোগ করা না হয় সে জন্য ধর্ষিত নারীদের শাসিয়ে যায় পুলিশ।

এদিকে, হরিয়ানার মুর্থালে গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে বুধবার পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্ট রাজ্য সচিব ও পুলিশ প্রধানকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও চাকরির ক্ষেত্রে অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ন্যায় কোটার দাবিতে গত সপ্তাহে হরিয়ানায় বিক্ষোভ শুরু করে নিম্নবর্গের জাঠ সম্প্রদায়ের লোকজন। এসময় বিভিন্ন ভবন ও গাড়িতে অগ্নিকাণ্ড, সড়ক অবরোধ এমনকি দিল্লির সঙ্গে পানি সরবরাহের একটি ক্যানালের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় বিক্ষোভকারীরা।

এতে পুরো দিল্লিজুড়ে তীব্র পানিসংকট দেখা দেয়, বন্ধ ঘোষণা করা হয় রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পরে জাঠদের আন্দোলনের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৬:৩৪ অপরাহ্ন, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, শনিবার

এমআরআর

Share