স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট :
রোববার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ভারতকে মাটিতে নামিয়ে আনলো বাংলাদেশ। দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের পাঁচ উইকেটে হারিয়ে প্রথম বারের মত সিরিজ জয় নিশ্চিত করলো টাইগাররা। আর এ জয় দিয়েই ২০১৭ তে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ান্স লিগে জায়গা নিশ্চিত করে নিলো মাশরাফিরা।
এর আগে ১৮ বার পুর্নাঙ্গ সিরিজ জয়ের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত দলের বিপক্ষে হোয়াইট ওয়াশের স্বাদ। কিন্তু ভারতকে সিরিজ হারানোর তৃপ্তিই যেন আলাদা। বিশেষ করে বিশ্বকাপে ভারতের কাছে আম্পায়ারদের বিতর্কিত কিছু সিদ্ধান্তে পরাজয়টা যেন গলায় কাঁটার মত আটকে ছিল। প্রথম ওয়ানডেতে হারিয়েও যেন বিশ্বকাপের প্রতিশোধটাও সম্পূর্ণ হয়নি। এই ম্যাচ জয়ে যেন তার পূর্ণতা পেল।
ভারতের দেওয়া ১৯৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে টাইগারদের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। তবে তামিমকে হারিয়ে কিছু কিছুটা ধীর স্থির ভাবে খেলে নিয়ন্ত্রন নেন সৌম্য সরকার এবং লিটন দাস। ধবল কুলকার্নির বলে স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা ধাওয়ানের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন তামিম ইকবাল(১৩)। ১৭তম ওভারে রবিচন্দন আশ্বিনের বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়ে আউট হন সৌম্য সরকার (৩৪) । তিন ওভার পরেই অক্ষর প্যাটেলের বলে ধোনির হাতে ক্যাচ দিয়ে লিটন(৩৬) ফিরে গেলে কিছুটা চাপে পরে বাংলাদেশ।
তবে বাংলাদেশের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান সাকিব এবং মুশফিকের ব্যাটে এই চাপ সহজেই সামলে নেয় টাইগাররা। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৫৪ রান যোগ করেন এই দুই ব্যাটসম্যান। তবে দলীয় ১৫২ রানে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট হয়ে ফিরে যান বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম।
এরপর সাব্বিরকে সাথে নিয়ে বাকি কাজটুকু সারেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ৬২ বলে ৫১ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন সাকিব আল হাসান। আর সাব্বির করেন ২২ রান।
মূলত আগের ম্যাচে জয়ের নায়ক মুস্তাফিজের কাছে এই ম্যাচেও বিধ্বস্ত হয় ধোনিবাহিনী। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই রোহিতকে ফেরান এই পেসার। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন সাব্বির আহমেদ। দ্বিতীয় বলে রোহিতের উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পরে ভারত। তবে শেখর ধাওয়ান এবং বিরাট কোহলির ৭৪ রানের জুটিতে সে ধাক্কা সামলে নেয় ভারত।
১৩তম ওভারের তৃতীয় বলে টাইগারদের হয়ে দ্বিতীয় আঘাত হানেন নাসির। এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলে ফেরান ভারতের পোস্টার বয় বিরাট কোহলিকে। ২১তম ওভারের শেখর ধাওয়ানকে কিপার লিটন দাসের ক্যাচে পরিণত করে বাংলাদেশকে আবার উল্লাসে ভাসান নাসির হোসেন। তবে আউট হওয়ার আগে ক্যারিয়ারের ১৩তম অর্ধশত রান তুলে নিয়েছেন উদ্বোধনী এই ব্যাটসম্যান। ৬০ বলে ৭টি চারে ৫৩ রান করেন এই ভারতীয় ব্যাটসম্যান।
পরের ওভারেই রুবেল ফেরান আম্বাতি রাইডুকে। এর পর কোণঠাসা ভারত ধোনি-রায়নার ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করে। এই দুই ব্যাটসম্যান ৫৩ রানের জুটি গড়ে তুলেন। তবে মুস্তাফিজের আঘাতে ফিরে যেতে হয় রায়নাকে। ৩৬তম ওভারের তৃতীয় বলে কিপার লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন সুরেশ রায়না।
এরপর ৩৯তম ওভারের তৃতীয় ও চতুর্থ বলে ধোনি ও অক্ষর প্যাটেলকে সাজঘরে ফেরান মুস্তাফিজ। প্রথম ম্যাচে ধোনি-মুস্তাফিজের সেই ধাক্কার ঘটনার পর রোববারের ম্যাচে ধোনির উইকেট পেয়ে যেন উল্লাসে ভেঙ্গে পড়েন মুস্তাফিজ। অনেকটা যেন প্রতিশোধ নেওয়ার মতো। ৪১ ওভারের শেষ বলে আবারো আঘাত হানেন ভারত শিবিরে। ক্যাচ আউট করে সাজঘরে ফেরান অশ্বিনকে।
এরপর বৃষ্টি বাঁধায় সাময়িক খেলা বন্ধ থাকালেও বৃষ্টি শেষ হবার পর প্রথম এবং নিজের কোটার শেষ বলে আউট করেন ভারতের শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান জাদেজাকে। রুবেল শেষ ব্যাটসম্যান ভুবেনেশ্বর কুমারকে আউট করলে ২০০ রানে গুটিয়ে যায় ভারতের ইনিংস।
আগামী বুধবার সিরিজের শেষ ম্যাচে একই মাঠে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
আপডেট: বাংলাদেশ সময় ১১:৩৫ অপরাহ্ন, ২১ জুন ২০১৫, রোববার
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/ এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস ডট কম-এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।