ভবিষ্যতে দেশে বুলেট ও পাতাল ট্রেন

শনিবার (২৫ জুন) রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে নতুন ট্রেন ‘সোনার বাংলা’ এক্সপ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভবিষ্যতে দেশে বুলেট ও পাতাল ট্রেন চলবে। এছাড়া দুর্গম এলাকাসহ দেশের সবকটি জেলাতেই রেলের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা হবে।

নতুন এ ট্রেন উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ভারত ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণ সহায়তায় মোট ২৭০টি কোচ দিয়ে ট্রেন পরিচালনা কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো। প্রধানমন্ত্রী এদিন ঢাকা-রাজশাহী রুটে সিল্কসিটি সার্ভিসের বিকল্প হিসেবে নতুন ব্রডগেজ ট্রেন সার্ভিসও উদ্বোধন করেন। আজ রাজশাহী থেকে সিল্কসিটি পদ্মা ও ধূমকেতু নামে ঢাকার উদ্দেশে চলবে নতুন এ ট্রেন।

শেখ হাসিনা বলেন, জাপানের বুলেট ট্রেনের প্রতি আমার খুব আগ্রহ ছিল। যতবার জাপানে গিয়েছি, সেখানে বুলেট ট্রেনে উঠতাম। সেদিন বেশি দূরে নয়, আমরা দেশেই এই বুলেট ট্রেন চালু করতে সম হব।

একই অনুষ্ঠানে খিলগাঁও উড়ালসড়কে স্থানীয় সরকার বিভাগের তৈরি খিলগাঁও উড়ালসড়কের লুপ খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে জাতীয় সংসদ থেকে বের হয়ে খিলগাঁওয়ের লুপ ঘুরে কমলাপুরে যান শেখ হাসিনা। ফেরার পথে প্রগতি সরণি-বনশ্রী সংযোগ সড়কে নেমে হাতিরঝিল প্রকল্পের সাউথ ইউ-লুপের ফলক উন্মোচন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন এলজিআরডি এবং সমবায়মন্ত্রী খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, গৃহায়ই ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, রেল সচিব ফিরোজ সালাউদ্দিন এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেন। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ঢাকা সিটি করপোরেশনের দুই মেয়র আনিসুল হক ও সাঈদ খোকন, সেনাবাহিনীপ্রধান আবু বেলাল মুহাম্মদ শফিউল হক, বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা অন্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, সোনার বাংলা ট্রেনটি আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে। বিমানবন্দর স্টেশনের পর আর কোথাও এটি থামবে না। ট্রেনটিতে ১৬টি নতুন বগি থাকবে। প্রতিটি বগি ইন্দোনেশিয়ায় তৈরি। ট্রেনটি প্রতিদিন ঢাকা থেকে সকাল ৭টায় ছাড়বে। চট্টগ্রাম পৌঁছবে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে। চট্টগ্রাম থেকে বিকাল পাঁচটার দিকে ছেড়ে আবার ঢাকায় পৌঁছবে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে। নতুন ট্রেনের এসি চেয়ারের ভাড়া ১ হাজার ১০০ টাকা, এসি সিটের ভাড়া ১ হাজার টাকা ও শোভন চেয়ারের ভাড়া ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ট্রেনে যাত্রীদের খাবার সরবরাহ করবে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন।

একই রুটে চলাচলকারী আন্তঃনগর সুবর্ণ এক্সপ্রেসের মতোই সময় নিয়ে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস চলাচল করবে। ১৬টি বগির এই ট্রেনে যাত্রী ধারণমতা ৭৪৬ জন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) মোট আসন ২২০টি, শোভন চেয়ার ৪২০টি, এসি বার্থ ৬৬টি। এছাড়া দুটি খাবারের গাড়ির সঙ্গে ৪০টি আসন রয়েছে।

জানা গেছে, সোনার বাংলা এক্সপ্রেস হবে ঢাকা-চট্টগ্রাম পথে চলাচলকারী দ্বিতীয় বিরতিহীন ট্রেন। এর ১৬টি বগির মধ্যে চারটি এসি চেয়ারের (স্নিগ্ধা) প্রতিটিতে ৫৫ করে ২২০ আসন, সাতটি শোভন চেয়ারের বগিতে ৪২০ আসন, দুটি এসি বার্থে ৩৩ করে ৬৬ আসন এবং দুটি খাবারের গাড়ির সঙ্গে সংযুক্ত ৪০টি আসন রয়েছে। এর আগে প্রথম বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস চলাচল শুরু করে ১৯৯৮ সালের ১৪ এপ্রিল।

এদিকে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) খায়রুল আলম বলেন, নতুন লাল-সবুজ ট্রেন দুটি আগের নামেই চলবে। ট্রেনের গায়ে এরই মধ্যে সিল্কসিটি পদ্মা ও ধূমকেতু লিখে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার।

নতুন এ ট্রেন ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার বেগে চলবে। ট্রেনটির রাজশাহী রুটের স্টপেজ কমানো হবে। যাত্রাপথের সময়সীমাও অনেক কমিয়ে আনা হবে। এ ট্রেনে রাজশাহী থেকে ঢাকা যেতে সময় লাগবে মাত্র ৪ ঘণ্টা। বর্তমানে যেখানে লাগে সাড়ে ৬ ঘণ্টারও বেশি।

নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৬:৩০ পিএম, ২৬ জুন ২০১৬, রোববার
ডিএইচ

Share