চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ও থানায় দেওয়া মুচলেকা অমান্য করে বিরোধপূর্ণ জমিতে জোরপূর্বক ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চরদুঃখীয়া পশ্চিম ইউনিয়নের লড়াইর চর এলাকায়। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লড়াইর চর মৌজার একটি জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। ২০২৩ সালে সাবেক ইউপি সদস্য ও বিরামপুর বাজারের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ‘লেদু মিয়া’র কাছ থেকে ৫৯৭ নং খতিয়ানের ৪টি দাগে ১৩.৫০ শতক, ৭২৮ নং খতিয়ানের ৭ শতক এবং ৫৯৩ নং খতিয়ানের ৯.৫০ শতক—মোট ৩০ শতক জমি ক্রয় করেন।
পরবর্তীতে ২০২৪ সালে একই এলাকার শাহাবুদ্দিন ওরফে সফি উল্লাহর কাছ থেকে মোঃ সাইফুল ইসলাম তালুকদার ৬৯৮–৬৯৯ নং খতিয়ানে ১০ শতক জমি ক্রয় করলে উভয়ের মধ্যে জমির সাইট ও সীমানা নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়।
বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিষয়টি আদালতে গড়ায়। আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারা জারি করেন এবং বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। পাশাপাশি গত ৫ ডিসেম্বর ফরিদগঞ্জ থানার এসআই হেলাল উদ্দিনের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষ একটি সালিশনামায় স্বাক্ষর করে। সেই সালিশনামায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল—বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কেউ জমিতে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবেন না।
কিন্তু মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাইফুল ইসলাম লোকজন নিয়ে বিরোধপূর্ণ জমিতে ভবন নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমি আমার নিজস্ব জমিতেই কাজ করছি।” তবে মুচলেকা ভঙ্গের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। এ সময় তার লোকজন সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং মিজানুর রহমানের ছেলে ইব্রাহিম খলিলকে গালিগালাজ ও মারমুখী আচরণ করেন।
অপরদিকে মিজানুর রহমান বলেন,
“আমি বৈধভাবে জমি কিনেছি। তারপর থেকেই সাইফুল ইসলাম ও শাহাবুদ্দিন গং বিভিন্নভাবে আমাকে হয়রানি করে আসছে। বিষয়টি আদালত ও থানায় বিচারাধীন থাকার পরও তারা প্রতারণামূলকভাবে লিখিত অঙ্গীকার ভেঙে নির্মাণ কাজ শুরু করেছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা আফলাতুন কায়সার বলেন,“দু’পক্ষই জমি কিনেছে, এতে সন্দেহ নেই। তবে জমির সাইট নিয়ে বিরোধ রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষের উচিত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকাবাসী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধানে আসা।”
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার এসআই হেলাল উদ্দিন বলেন, “উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে একটি লিখিত সালিশনামা করা হয়েছে। সেখানে তারা সাত দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধানের অঙ্গীকার করে। তবে নির্মাণ কাজ শুরু করার বিষয়টি আমরা শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান,
৯ ডিসেম্বর ২০২৫
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur