পীর-আউলিয়ার দেশ বাংলাদেশে যুগে যুগে বিভিন্ন পীর আউলিয়ার বসবাস ছিল। কিন্তু সত্যিকারের পীর আউলিয়ারা কখনও মানুষের উপকার অর্থের জন্য করতেন না। তারা মানুষের উপকার করতেন শুধুমাত্র আল্লাহ প্রতি ভয় থেকে। কিন্তু বর্তমান সমাজে এমন অনেক তথাকথিত পীর আউলিয়া দেখা যায় যারা সেবার নামে মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা। আমাদের আজেকের প্রতিবেদন এসব ভন্ড অর্থালোভী বাবাদের অপকর্ম নিয়ে। প্রতিবেদনটি ইনভেস্টিগেশন ৩৬০ ডিগ্রী থেকে নেয়া।
ভন্ড পীরবাবা
আজকের প্রতিবেদনের শুরুতেই আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিতে চাই কয়েকজন দরিদ্রের সাথে। রেজাউল করিম সরদার পাচ বছর আগেও ভাড়া বাসায় থাকতেন টেনে টুনে তার সংসার চালাতেন তিনি। আর এখন তার মাসিক আয় প্রায় ১২ লাখ টাকা। সম্পদের মধ্যে আছে ঢাকার একটি পাচতলা ভবন, দুটি গাড়ি এবং মাদারীপুর গ্রামের বাড়িতে বেশ কিছু জমিজমা।
সালেহ জহুর ওরফে জহুর হুজুর, বয়স ৩৮ বছর, পাচ বছর আগে চট্টগ্রামের ফুটপাতে হকারি করে সংসার চালাত। এখন তার মাসিক আয় প্রায় ১৮ লাখ টাকা। মাত্র পাচ বছরে তিনটি বাড়ি একটি গরুর খামারের মালিক হয়েছেন তিনি। ফরিদ উদ্দিন ওরফে কালা হুজুর, তবে এলাকার মানুষ তাকে ক্যালকুলেটর বাবা নামে বেশি চেনে। ৮ বছর আগে মসজিদের ইমামতি করতেন আর এখন মাসে আয় করেন প্রায় ১৫ লাখ টাকা। তার নামে আছে দুটি আলিসান বাড়ি, একটি আবাসিক হোটেল এবং একটি মাছের খামার। আব্দুস সালাম ওরফে ল্যাংটা ফকির, বয়স ৭০ এর কাছাকাছি। সংসার ছেড়েছেন ত্রিশ বছর আগে।
এখন কোন রকম খেয়ে জীবন চলে তার। রেজাউল করিম সরদার, সালেহ হুজুর এবং ফরিদ উদ্দীন এরা তিনজন নিজেদের তথাকথিত পীর দাবি করে মানুষের কাছ থেকে ঝাড়ফুকের নাম করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আর আব্দুস সালাম ওরফে ল্যাংটা ফকিরকে কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যাক্তি তার স্বার্থে ব্যাবাহার করে প্রতারনা করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এখন আমরা একজন শিক্ষিত সচেতন নারীর গল্প শুনব যিনি স্বামী আর সংসার রক্ষার্থে ছুটে গিয়েছিলেন কথিত পীর হুজুরের কাছে। কিন্তু প্রতারনার ফাদে পড়ে টাকা হারিয়ে এখন তিনি দিশেহারা । শুধু এই নারী নয় এমন হাজারো মানুষ প্রতিনিয়ত এসব ভন্ড পীর বাবার প্রতারনার শিকার হচ্ছেন।
ভন্ড পীরবাবা এর প্রতারণার ভিডিও দেখুন :
প্রিয় পাঠক, সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ তার “ লালসালু” উপন্যাস দিয়ে খুলে দিয়েছিলেন ভন্ড পীরদের মুখোশ। কিন্তু এই একবিংশ শতাব্দীতে দাড়িয়ে যদি কিছু অদ্ভুত নামধারী অদ্ভুত পীরদের কেরামতি দেখতে হয়, দেখতে হয় শত শত মানুষের প্রতারিত হবার দৃশ্য তবে বলতেই হয় জেগে উঠুন একটু মাথা দিয়ে ভাবুন। আর দায়িত্বশীলরা ব্যাবস্থা নিন।
ক্রাইম নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৯:২৩ পিএম, ২১ ডিসেম্বর ২০১৫, সোমবার
এমআরআর