নারী

বয়স বাড়লে নারী সাংবাদিককে ‘অযোগ্য’ উপাধি দেয়া হয়

বয়স বাড়লে পুরুষকে ‘অভিজ্ঞ’ আর নারী সাংবাদিককে ‘অযোগ্য’ উপাধি দেয়া হয়। এ সমাজে মেয়েরা নানা সামাজিক বাধা বিপত্তি মোকাবেলা করে নিজ যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে যখন একজন পরিপূর্ণ সাংবাদিক হয়ে ওঠেন ততদিনে তিনি মধ্যবয়সে পা রাখেন।

প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক কিংবা অনলাইন গণমাধ্যমের নীতিনির্ধারণী পদে আসিন হলে যিনি তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ভালো কিছু করতে পারেন ঠিক সেই বয়সে গণমাধ্যমে নারীরা ভীষণভাবে উপেক্ষিত হন।

কারও সুপারিশে চাকরি নিতে গেলে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান সুপারিশকারীর কাছে টেলিফোন করে রাগত সুরে বলেন, কি বুড়াদুড়াকে পাঠিয়েছেন। বয়স কম এমন সাংবাদিক পাঠাও। শুধু তাই নয় তারা চাকরিপ্রার্থীর সামনেই এমনটি বলে নারীকে শুধু অবমাননাই করেন না, তাদের মানসিক কষ্টও বাড়ান।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব ও দুপুরে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) আয়োজিত অনুষ্ঠানে বয়স্ক ও অভিজ্ঞ নারী সংবাদিকরা কিভাবে অবহেলিত হন তারই একটি উদাহারণ তুলে ধরেন প্রবীণ সাংবাদিক আকতার জাহান মালিক।

তিনি দুটো অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, নারী হিসেবে নয়, মেধা, দক্ষতা ও যোগ্যতা বলে যোগ্য সম্মান চাই। এ ব্যাপারে তিনি তার সহযোগিতা কামনা করেন।

নারী দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মুখে গণমাধ্যমে নারীদের এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নীরবে-নিভৃতে যৌন নিপীড়নের বিষয়টি উঠে আসে। নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা মিনু বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে নারী সাংবাদিকরা নানা মানসিক ও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ ব্যাপারে অনেকেই মুখ খুলতে সাহস পান না। তিনি বিভিন্ন গনমাধ্যমে যৌন নিপীড়ন সেল গঠনের দাবি জানান।

নারী সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী বলেন, কয়েকবছর আগে টিভি সাংবাদিকতাসহ গণমাধ্যমে নারীদের অংশগ্রহণ বেশ বৃদ্ধি পেলেও বর্তমানে সেই অংশগ্রহণের গতি শ্লথ হয়ে গেছে। কেন হয়ে গেছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। দক্ষতা প্রমাণের সুযোগ পেলে মেয়েরা ভালো করে বলে তিনি মনে করেন।

আরেক নারী সাংবাদিক শাহনাজ শারমিন বলেন, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় রিপোর্টিং এর চেয়ে খবর পাঠিকা অধিক সংখ্যায় নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার।

জাতীয় প্রেসক্লাবের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ইকবাল সোবহান চৌধুরীর কণ্ঠেও নারীদের ভিন্নভাবে উপস্থাপনের বিষয়টি উঠে আসে। বক্তৃতার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, গণমাধ্যমে নারীদের যৌনপীড়িনের বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের ইতিহাসে এবারই প্রথম আন্তজার্তিক নারী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। জাতীয় প্রেসক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান, সহ-সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, নির্বাহী সদস্য সাইফুল আলম, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা মিনু, শাহনাজ মুন্নী, শাহনাজ বেগম, দৌলত আক্তার মালা, রোজিনা ইসলাম প্রমুখ।

নিউজ ডেস্ক : আপডেট ১২:৫০ পিএম, ১৪ মার্চ ২০১৬, সোমবার
ডিএইচ

Share