আজ থেকে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা ছাড়া সব কিছুই থাকবে বন্ধ। এর আওতায় রয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানও।
তবে ‘লকডাউন’-এ ব্যাংক বন্ধ থাকবে এমন খবরে টাকা তোলার হিড়িক পড়ে ব্যাংকগুলোতে। ব্যাংকের শাখাগুলোতে টাকা জমা বা ইউটিলিটি বিল পরিশোধের চেয়ে টাকা উত্তোলন হয়েছে কয়েকগুণ।
মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা ঘুরে পাওয়া গেছে এসব তথ্য। তবে সন্ধ্যায় ঘোষণা আসে লকডাউনেও সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে ব্যাংক। এমন ঘোষণায় অনেকেই ক্ষুব্ধ হন। গ্রাহকরা জানান, আগে থেকে এমন ঘোষণা দেয়া হলে এত ভোগান্তি পোহাতে হতো না।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মঙ্গলবার ব্যাংক খোলার সঙ্গে সঙ্গে শাখাগুলোতে ভিড় করতে দেখা যায় গ্রাহকদের। বেশিরভাগ শাখায় দেখা যায় গ্রাহকের দীর্ঘ সারি। অন্যদিকে গ্রাহকের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে ব্যাংক কর্মকর্তাদের। অনেক শাখাতেই গ্রাহকের ভিড়ে শারীরিক দূরুত্ব মানা হয়নি। তবে ব্যাংকে প্রবেশের সময় গ্রাহকের তাপমাত্রা মাপতে দেখা গেছে ।
একই অবস্থা তৈরি হয় এটিএম বুথগুলোতেও। সেখানেও ছিল গ্রাহকের ব্যাপক উপস্থিতি। তবে শাখার চেয়ে এটিএম বুথে স্বাস্থ্যবিধি কিছুটা মানা হচ্ছে। একাধিক গ্রাহককে বুথ বা ফাস্ট ট্র্যাকের প্রবেশ মুখে হাত ও পা জীবাণু মুক্ত করতে দেখা গেছে।
ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সপ্তাহের অন্যদিনের তুলনায় মঙ্গলবার ব্যাংক লেনদেন শুরুতেই গ্রাহকের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করতে চান।
তবে মাস্কবিহীন ও হ্যান্ড স্যানিটাইজড ছাড়া কাউকেই ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। আর গ্রাহকরা বলেছেন, বুধবার থেকে চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ। এ বিধিনিষেধ কবে নাগাদ শেষ হবে কিছুই জানি না। নিজেদের স্বাস্থ্য ও প্রাত্যহিক ভোগ্যপণ্যের কথা মাথায় রেখে নগদ টাকা হাতে রাখা চাই।
মেহেদী হাসান নামের সোনালী ব্যাংকের এক গ্রাহক জানান, ‘লকডাউনে ব্যাংক খোলা না রাখায় এক ধরনের ভোগান্তি তৈরি হচ্ছে। সবাই ব্যাংকমুখী হচ্ছেন, সবারই টাকার প্রয়োজন। কে কখন অসুস্থ হচ্ছেন তাই নগদ টাকা সবাই কাছে রাখতে চান।’ একই কথা জানান ব্যাংক এশিয়ার গ্রাহক আয়েশা। তিনি বলেন, ‘লকডাউনে পেটতো চলবে।
সব কিছু বন্ধ হলেও খাদ্যপণ্যের দোকান খোলা, টাকা না থাকলে কিভাবে কিনব। এজন্য বাড়তি কিছু টাকা সঙ্গে রাখতে চাই। জানি না কতদিন এ লকডাউন থাকে।
ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আজ থেকে কঠোর লকডাউনের কথা ভেবে অনেকেই আগেভাগেই ব্যাংকের কাজ সম্পন্ন করে রাখছেন। অনেকেই বকেয়া ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করছেন। তবে টাকা জমার চেয়ে টাকা উত্তোলনই বেশি হয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তা আফজাল হোসেন বলেন, কঠোর বিধিনিষেধের খবরে মঙ্গলবার গ্রাহকরা ব্যাংকে এসে ভিড় করেন। এদিন শুধু টাকা উত্তোলনই হয়েছে। কয়েক মাসে এত উত্তোলন দেখিনি। সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত পুরো সময়টাই গ্রাহকের ভিড় ছিল।
ফকিরাপুল ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথের কর্মকর্তা অনুপ দত্ত জানান, গ্রাহকের চাহিদামতো এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করছেন। তবে আমরা চেষ্টা করছি সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করে। বুথে নগদ টাকা জমা আপাতত নেয়া হচ্ছে না, শুধু উত্তোলন হচ্ছে।
ঢাকা ব্যুরো চীফ,১৪ এপ্রিল ২০২১
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur