দেশের ব্যাংকগুলোতে জমাকৃত বেসরকারি খাতের আমানতের মধ্যে ব্যবসায়ীদের তুলনায় বেতনভুক্ত চাকরিজীবীদের গচ্ছিত আমানতের পরিমাণ বেশি। তা ছাড়া ডাক্তার-উকিলদের থেকে বেশি টাকা ব্যাংকে জমা করেছে গৃহিণীরা।
অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের তুলনায় বাড়ির মালিকদের জমাকৃত আমানত প্রায় অর্ধেক।
চলতি বছরের জুন পর্যন্ত দেশের ৫৭টি ব্যাংকে সরকারি-বেসরকারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ৮৫ লাখ ৩৯৯ হাজার ১৯২টি হিসাব থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। যে হিসাবগুলোতে মোট ৯ লাখ ৪০ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকার বেশি জমা ছিল। এই হিসাবগুলোর মধ্যে এক কোটি টাকার বেশি অঙ্কের অর্থ জমা থাকা ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ছিল ৬৮ হাজার ৮৯১টি। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে এ ধরনের হিসাব সংখ্যা ছিল ৬৫ হাজার ৭৯৩টি। সেই হিসাবে ছয় মাসে কোটি টাকার ওপরে জমা থাকা হিসাব বেড়েছে তিন হাজার ৯৪টি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত ‘সিডিউল ব্যাংক স্ট্যাটিস্টিকস’ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, আলোচ্য সময় পর্যন্ত জমা থাকা মোট আমানতের মধ্যে সরকারি খাতের আমানতের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৭৬ হাজার ৫০৮ কোটি টাকা। বেসরকারি খাতের আমানতের পরিমাণ ছিল সাত লাখ ৬৩ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকা।
বেসরকারি আমানতের মধ্যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, বেসরকারি প্রকাশনা ও সংবাদমাধ্যম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য বেসরকারি খাতের আমানতের পরিমাণ ছিল দুই লাখ আট হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে আবার বেসরকারি প্রকাশনা ও সংবাদমাধ্যমের ব্যাংক হিসাবগুলোতে (সংবাদপত্র, টেলিভিশন, রেডিও ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম) ১৬৪ কোটি টাকা জমা ছিল।
ব্যাংক ছাড়া অন্যান্য আমানতি প্রতিষ্ঠান যেমন লিজিং কম্পানি, কেন্দ্রীয় কো-অপারেটিভ ব্যাংক, গ্রামীণ ব্যাংক, বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক, মিউচুয়াল ফান্ড, মার্চেন্ট ব্যাংক, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও), বীমা কম্পানি ও পেনশন ফান্ড সংক্রান্ত হিসাবগুলোতে জমাকৃত আমানতের পরিমাণ ছিল ৪৭ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা।
বিদেশি কর্মকর্তা, দূতাবাস, বিদেশি প্রতিষ্ঠান, লিয়াজোঁ অফিস ও বহুজাতিক কম্পানিগুলোর খোলা ব্যাংক হিসাবে জমা ছিল পাঁচ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা। মসজিদ, মন্দির, গির্জা, ক্লাব, থিয়েটার ও কালচারাল সেন্টার, রাজনৈতিক দল, ট্রেড ইউনিয়ন, পেশাগত সংগঠন, ট্রাস্ট ফান্ড ও অন্যান্য অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে জমা ছিল ১৫ হাজার ৮৫ কোটি টাকা।
ব্যক্তি গ্রাহকদের হিসাবে জমাকৃত আমানতের পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি। কৃষক, জেলে, ব্যবসায়ী, প্রবাসী বাংলাদেশি, বেতনভুক্ত চাকরিজীবী, ডাক্তার, উকিল, ঠিকাদার, ট্যাক্সি ড্রাইভার, স্থপতি, পরামর্শকসহ সব ধরনের পেশাজীবী, বিদেশি ব্যক্তি, গৃহিণী, শিক্ষার্থী, প্রতিবন্ধী, অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি, বাড়ির মালিকসহ অন্যান্য স্থানীয় ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাবে জমাকৃত আমানতের পরিমাণ ছিল চার লাখ ৮৬ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা।
এর মধ্যে আবার বেতনভুক্ত চাকরিজীবী ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাবে জমাকৃত আমানতের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৬০ হাজার ৪৪ কোটি টাকা। ব্যবসায়ীদের ব্যক্তিগত হিসাবে জমাকৃত আমানতের পরিমাণ ছিল এক লাখ ১৫ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা। গৃহিণীদের ব্যাংক হিসাবে জমাকৃত আমানতের পরিমাণ ছিল ৭৮ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকা। ডাক্তার, উকিল, ঠিকাদার, ট্যাক্সি ড্রাইভার, স্থপতি, পরামর্শকসহ সব ধরনের পেশাজীবীর ব্যাংক হিসাবে জমাকৃত আমানতের পরিমাণ ছিল ৪৬ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা।
কৃষক ও জেলেদের ব্যাংক হিসাবে জমাকৃত আমানতের পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা। অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জমাকৃত আমানতের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকা। বাড়িওয়ালাদের ব্যাংক হিসাবে জমাকৃত আমানতের পরিমাণ ছিল চার হাজার ১০১ কোটি টাকা। (কালেরকণ্ঠ)
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১:০০ এএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭, রোববারs
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur