ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থে সংবিধানের ব্যবহার শুভ হতে পারে না : রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও দলীয় স্বার্থে সংবিধানের ব্যবহার শুভ হতে পারে না। মানবাধিকার রক্ষা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতের পাশাপাশি দেশের প্রতিটি সংকটে সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের অভিভাবক ও রক্ষকের গৌরবজনক ভূমিকা পালন করে আসছে।’

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আজ শনিবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রধান বিচারপতি জয়ানথা জয়সুরিয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, আমাদের মূল সংবিধানে সুপ্রিম কোর্ট ও অধস্তন আদালত স্বাধীন থাকবে বলে উল্লেখ রয়েছে। আদালতগুলো নিজ নিজ সীমার মধ্যে আইন অনুযায়ী বিচারকাজ পরিচালনা করবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর এই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয় ১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের যাত্রার মধ্য দিয়ে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আমাদের সংবিধানের রক্ষক। তাই সংবিধানের পবিত্রতা ও মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখতে নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। বিচার বিভাগ ও আইনজীবীদের এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। সংবিধানবিরোধী যে কোনো অপতৎরতা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চক্রান্ত রুখে দিতে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, গণতন্ত্রের চর্চা ও মূল্যবোধের চর্চা যত বাড়বে সংবিধানের কার্যকারিতা ও মর্যাদাও তত বাড়বে। আসুন আমরা দলমত নির্বিশেষে দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সংবিধানের প্রতিটি শব্দ মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদের রক্তের কালিতে লেখা’-এ কথা বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে গণপরিষদে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেছিলেন। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে আমরা পরিষ্কারভাবে অঙ্গীকার করেছিলাম, নতুন রাষ্ট্রের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের ভিত্তি হবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার। বাংলাদেশ সংবিধান এ অঙ্গীকার পূরণের সর্বশ্রেষ্ঠ দলিল।

রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি আশা করি, বিচারকগণ দেশ, জাতি ও সংবিধানের প্রতি সম্মান রেখে তাদের মনন ও মেধা দিয়ে দায়িত্ব পালন করবেন। তারা আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন।

বার্তা কক্ষ, ১৭ ডিসেম্বর ২০২২

Share