চলতি রোরো মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হতে এখনো প্রায় ১১ লাখ টন বাকি। গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ছিল শেষ দিন। এ বছরের ২৬ এপ্রিল থেকে শুরু করে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও সংগ্রহ করতে পারেনি সরকার।
খাদ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গাফিলতি, সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের লটারি করতে করতেই প্রায় দেড় মাস সময় পার হওয়া, গুদামে ধান দিতে গিয়ে নানা ঝক্কি ঝামেলায় আগ্রহ হারানো, উৎকোচ দেয়া, করোনা, টানা বৃষ্টি ও বন্যার কারণে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এ কারণে মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) আরও ১৫ দিন সময় বৃদ্ধি করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
খাদ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সরকার ১৯ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন ধান-চাল সংগ্রহ করার জন্য গত ২৬ এপ্রিল থেকে বোরো ধান এবং ৭ মে থেকে চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু করে। চুক্তি অনুযায়ী ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ লাখ মেট্রিক টন। মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত বোরো ধান সংগ্রহ করা হয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ৩৩৭ মেট্রিক টন। ধানের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ২৬ দশমিক ৪ ভাগ।
সিদ্ধ চালের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ লাখ মেট্রিক টন। মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত চাল সংগ্রহ করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫৫ মেট্রিক টন, যার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৫৬ দশমিক ৩৬ ভাগ। আর আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে ৮২ হাজার ৭৯৫ মেট্রিক টন। আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৫৫ দশমিক ২০ ভাগ। ধান, সিদ্ধ চাল ও আতপ চাল মিলে কয়েক মাসে মাত্র ৮ লাখ ৫৪ হাজার ১৮৭ মেট্রিক টন সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হতে এখনো ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৮১৩ লাখ মেট্রিক টন ধান-চাল ঘাটতি রয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়েও অনেকে শঙ্কা প্রকাশ করছেন।
এদিকে সরকারি গুদামে বর্তমানে (১ সেপ্টেম্বর) ১৩ লাখ ৩৮ হাজার ২২৫ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। এর মধ্যে ১০ লাখ ৪৫ হাজার ৫৫৬ মেট্রিক টন চাল এবং ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৮৩ মেট্রিক টন গম।
ধান-চালের মজুত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ১৫ দিন পর পর আমরা রিটার্ন দাখিল করি। এবারও করা হয়েছে। সেখানে মজুতের পরিমাণ বিস্তারিত বলা হয়েছে।
খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সারওয়ার মাহমুদ এ বিষয়ে বলেন, এবার টার্গেট অনেক বেশি। তার মধ্যে বৈরী আবহাওয়া ও করোনার মতো দুর্যোগ। এটা নর্মাল বছরের মতো সময় নয়। এ অবস্থায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়া সম্ভব নয়। তবে আমরা কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, যারা মিল মালিক এবং যাদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল তাদের আরেক দফা সময় দেয়া হয়েছে। তারা যাতে বিপদে না পড়েন সে কারণেই তাদের এই সুযোগ দেয়া হয়েছে।
বার্তাকক্ষ,০২ সেপ্টেম্বর ২০২০;
কে. এইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur