চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে শুরু হয়েছে বোরো চাষাবাদ। মাঠে মাঠে জমি প্রস্তুত ও চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে মাঠে চলছে পানি সেচ, জমি প্রস্তুত ও চারা রোপনের ব্যস্ততা।
চাষিরা বলছেন শেষ পর্যন্ত অনুকুল আবহাওয়া ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিকমতো থাকলে কাঙ্ক্ষিত ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, শাহরাস্তি উপজেলায় মোট খাদ্য চাহিদা রয়েছে ৩৬ হাজার ৮ শ’ ২৮ মেট্রিকটন, যার বিপরীতে উৎপাদন হয় ৪৩ হাজার ৪ শ’ ৪০ মেট্রিক টন। এ অঞ্চলে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ১০ হাজার ৭ শ’ ৮০ হেক্টর। যার মধ্যে ৯ হাজার ৫ শ’ ৫০ হেক্টর জমিই বোরো মৌসুমে আবাদ চলছে। ২০ জন বিএডিসি’র বীজ ডিলার, ১১ জন বিসিআইসি’র সার ডিলারসহ দেড় শতাধিক পাইকারি ও খুচরা বীজ, সার এবং বালাইনাশক ব্যবসায়ি কৃষকদের মাঝে সরকার নির্ধারিত মূল্যে কৃষি উপকরণ সরবারহ করে যাচ্ছে।
উপজেলার রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নের বেরকি গ্রামের কৃষক রবিউল আলম জানান, বোরো ধানের চারা উৎপাদন শেষ হয়েছে। রোপণের জন্য জমি তৈরি করা হচ্ছে। তিনি চলতি মৌসুমে ২৪০শতাংশ (২ একর) জমিতে বোরো চাষাবাদ করবেন। এখন পর্যন্তু ১০০ শতাংশ জমিতে বোরো রোপন করা হয়েছে। সাময়িক সেচ সংকটের কারণে বাকি জমি রোপনে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এবার ভালো ফলন হবে বলে আশা করছেন তিনি।
একই ইউনিয়নের নাহারা গ্রামের কৃষক মোঃ মোহন হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, তিনি এ বছর ২১০ শতক জমিতে বোরো রোপণ করবেন। এ সপ্তাহের মধ্যে ১০০ শতাংশ জমিতে চারা রোপণ কাজ সম্পন্ন হবে। উপজেলা উপ-সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা কৃষ্ণ চন্দ্র দাস জানান, এ বছর বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৫ শ’ ৫০ হেক্টর। যা গত বছরের চেয়ে ১০০ হেক্টর বেশি। এর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ব্রি-ধান ২৮, ২৯, ৫৮, ৬৭, ৭৪, ৭৫, ৮৯, ৯১, ৯২ ও বিআর ১৬, হাইব্রীড এসএল-৮, আফতাব এলপি-৭০, ছক্কা, এগ্রো-১৪, হীরা, সুপার ও ইস্পাহানী জাতের ধান চাষ হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আহসান হাবীব জানান, চলতি বছরের বোরো মৌসুমে ৩ হাজার ৬ শ’ ৭০ জন কৃষককে প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় সার ও বীজ সহায়তা এবং ২ হাজার ১ শ’ কৃষককে হাইব্রীড বীজ সহায়তা প্রদানসহ বিভিন্ন ব্যাচে সহস্রাধিক কৃষককে প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কৃষকরা জানান, এ অঞ্চলে প্রতিবছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়ে থাকে। এ মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে রয়েছে। ফলে শীত এবং কুয়াশার প্রকোপ অনেক কম থাকায় বোরো ধানের চারা ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে কম এবং চারাও সুস্থ সবল হয়েছে। যদি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটে তাহলে এবছরও বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।
প্রতিবেদক: মোঃ জামাল হোসেন, ১৭ জানুয়ারি ২০২২