chandpurtimes Desk:
২০ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ-হরতালে বেনাপোল বন্দরে খালাস না হয়ে পড়ে আছে দুই হাজারের বেশি গাড়ি। এ কারণে বন্দর কর্তৃপক্ষ স্থান সমস্যাসহ নানা জটিলাতর মুখোমুখি হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
আমদানিকারকরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে ব্যবসায়ে মন্দা দেখা দেওয়ায় গাড়ি ছাড় করাতে পারছেন না তারা। অপরদিকে শুল্ককর্তৃপক্ষ বলছেন, গাড়িগুলো ছাড় করাতে আমদানিকারকদের তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও তারা কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছেন না। এ কারণে গাড়িগুলো ছাড় করে নেওয়ার জন্য চলতি মাসে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাক রাখার টার্মিনালে গাড়িগুলো ফেলে রাখায় ট্রাক রাখার স্থান সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে।
গাড়িগুলো দুই থেকে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে ওখানে পড়ে থাকায় তীব্র পণ্যজট দেখা দিয়েছে বলে জানান বন্দরের কর্মকর্তারা।
বেনাপোল শুল্কভবনের সহকারী কমিশনার অনুপম চাকমা বলেন, গাড়ি আমদানির পর ৩০ দিন পার হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারককে চিঠি দিয়ে গাড়ি ছাড় করানোর জন্য বলার নিয়ম রয়েছে। এতে সাড়া পাওয়া না গেলে তা নিলামে ওঠানো হয়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, গাড়িগুলো দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা আমদানি করেছেন। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কথা বিবেচনা করে ব্যবসায়ীদেরকে দুই মাস ছাড় দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু বার বার তাগাদাপত্র দেওয়া সত্বেও সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকদের পক্ষ থেকে জবাব না পেয়ে বাধ্য হয়ে শোকজ করা হয়েছে।
“এরপরও তারা গাড়ি খালাস না করলে তা নিলামে ওঠানো হবে,” বলেন তিনি।
বেনাপোল শুল্কভবন কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বেনাপোল দিয়ে গাড়ি আমদানি করা হয়েছে ২৩ হাজার ৮৯৭টি। এর মধ্যে খালাস হয়েছে ২৩ হাজার ২৬৭টি।
চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে গাড়ি আমদানি হয়েছে ১৫ হাজার ১৬৭টি, খালাস হয়েছে ১৪ হাজার ৭৯৭টি।
এ দুই অর্থবছরে মোট এক হাজার গাড়িসহ আগের থাকা ১ হাজার ১৬৯টি মিলে মোট ২ হাজার ১৬৯টি গাড়ি বর্তমানে বন্দরের শেডে পড়ে আছে।
বন্দরে পড়ে থাকা গাড়ির আমদানিকারকরা হচ্ছে, নিটল গ্রুপ, র্যাংগস মোটরস, উত্তরা মোটরসসহ চট্টগ্রামের কিছু প্রতিষ্ঠান। গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে ট্রাক, পিকআপ ও প্রাইভেটকার।
নিটল গ্রুপের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) গোলাম রব্বানি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে গাড়ি বেনাপোল থেকে নিয়ে আসা যাচ্ছে না। আবার নিয়ে এলেও বিক্রি হচ্ছে না। তাই ধীরে ধীরে গাড়ি ছাড় করানো হচ্ছে।
র্যাংগস মোটরসের জেনারেল ম্যানেজার সত্যজিৎ সাহা বেনাপোল শুল্কভবনে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান।
তিনি বলেন, “গাড়ি ছাড় করানোর দিন থেকে আমাদের ব্যাংক সুদ দিতে হয়। ছাড় করানোর পরে যদি গাড়ি বিক্রি না হয় তাহলে আমাদের ব্যাপক লোকসান গুণতে হবে।” তাই চিঠির মাধ্যমে আরও সময় চান বলে জানান তিনি।
বেনাপোল শুল্ক ভবনের যুগ্ম-কমিশনার আতিকুর রহমান বলেন, ২০১৩ সালের ১৮ মে বেনাপোলে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও কাস্টমসের বৈঠক হয়। বৈঠকে স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
সেখানে মন্ত্রী পড়ে থাকা গাড়িসহ বিভিন্ন পণ্য নিলামে তোলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকদের চিঠি দিয়ে চলতি মাসের মধ্যে গাড়ি ছাড় করাতে বলা হয়েছে। তা না করলে আগামী মাসের প্রথম দিকে নিলাম আহ্বান করা হবে। এতে সরকারও লাভবান হবে বলে তিনি মনে করেন।