চাঁদপুরের হাইমচরে কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সয়াবিনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে সয়াবিন চাষের সঙ্গে যুক্ত কৃষককূল ক্ষতিগ্রস্থ হয়। উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে। কৃষকেরা বলছেন, অতিবৃষ্টিতে চরের আধাপাকা ৮০ % সয়াবিনই তলিয়ে গেছে ও পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
কৃষক খলিল মিয়া ও স্বপন মাল জানান, এ বছর সয়াবিনের বাম্পার ফলন হয়েছিল। কিন্তু ফসল ঘরে তোলার সময় বৃষ্টি শুরু হয়। এতে চোখের সামনেই ডুবে যায় পাকা সয়াবিন।
চাঁদপুরের ২ হাজার ২শ’১৪ হেক্টর জমিতে ৪ হাজার ৪শ মে. টন সয়াবিন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। চলতি বছরও এ জেলার ৩ টি উপজেলায় এ সয়াবিনের চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাইমচরে সবচেয়ে বেশি সয়াবিন চাষাবাদ হয়ে থাকে। চাঁদপুরে ধান, পাট, আলু, সয়াবিন, পেঁয়াজ, রসুন, সরিষা এর পরে সয়াবিনের স্থান ।
চাঁদপুরের ৩ উপজেলায় ৪ হাজার ৪শ’মে. টন সয়াবিন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ, পরিবহনে সুবিধা, কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহ, কৃষি বিভাগের উৎপাদনের প্রযুক্তি প্রদান, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নত, কৃষিউপকরণ পেতে সহজলভ্যতা, বীজ, সার ও কীটনাশক ব্যবহারে কৃষিবিদদের পরামর্শ, ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ প্রদান ইত্যাদি কারণে চাঁদপুরের চাষিরা ব্যাপক হারে সয়াবিন চাষ করে থাকে।
নদী তীরবর্তী হওয়ায় চরাঞ্চলের চাষীদের কৃষিঋণ দিচ্ছে না ব্যাংকগুলো।
চরাঞ্চলগুলো হলো : চাঁদপুর সদরের রাজরাজেস্বর, জাহাজমারা, চরফতেজংগপুর, হাইমচরে নীলকমলের ঈশানবালা, চরগাজীপুর, মনিপুর, মধ্যচর, মাঝিরবাজার, সাহেববাজার ও বাবুরচর ইত্যাদি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি চাঁদপুরের সূত্র মতে, চাঁদপুর সদরে চাষাবাদ হয়েছে ২৯০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৭৬ মে. টন। ফরিদগঞ্জে চাষাবাদ ২৭৪ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৪৫ মে. টন। হাইমচরে চাষাবাদ ১,৬৫০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ছিল ৩২৭৯ মে. টন।
এ বিষয়ে চাঁদপুর কৃষি বিভাগের কৃষিবিদ আবদুল মান্নান বলেন, চাঁদপুর জেলার মধ্যে হাইমচরেই সবচেয়ে বেশি সয়াবিন হয়ে থাকে। চরাঞ্চলের কারণে সেখানকার আবহাওয়া ও মাটি সয়াবিন চাষের উপযোগী। সয়াবিন বর্তমানে দেশের একটি অর্থকারী ফসল হিসেবে পরিচিতি লাভ করছে। সয়াবিন কেবলমাত্র পশু ও মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
চাঁদপুর করেসপন্ডেট,৭ মে ২০২০