রাফসান আরা (৬৩)। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা। ২৬ বছরের চাকরি জীবন শেষে ২০০৭ সালে অবসরে যান। জীবনের শেষ দিনগুলি কাটাতে দুই বছর ধরে আছেন রাজধানীর আগারগাঁওয়ের প্রবীণ হিতৈষী সংঘ ও জরা বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানের প্রবীণ নিবাসে।
রাফসান আরার বড় ছেলে ফাহাদ হোসেন (৩৯) লন্ডনের একটি হাসপাতালে অর্থোপেডিকস অ্যান্ড সার্জারি বিভাগের প্রধান। দুই মাস আগে লন্ডন থেকে কানাডায় পাড়ি জমিয়েছেন আরো বড় ডিগ্রি নিতে। ২০১০ সালে স্ট্রোক করেন রাফসান আরা। ডায়াবেটিকস ও উচ্চরক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন তিনি।
নীলফামারী জেলার ডিমলার মেয়ে রাফসান আরার স্বামী এয়ারলাইন্স কার্গো সেকশনে চাকরি করতেন। মেয়ে নাজিয়া হোসেন (৩৭) লন্ডনে অর্থনীতিতে উচ্চ ডিগ্রি নিয়েছেন। এখন তিনি সোশ্যাল ওয়েলফারের ওপর একটি এনজিওতে চাকরি করেন সেখানেই।
অবসরের পর কিছুদিন সন্তানদের সঙ্গে লন্ডনে ছিলেন রাফসান আরা। তবে সেখানে তার থাকা হয়নি বেশিদিন। এখন প্রবীণ নিবাসে একাই দিন কাটান নীরবে। বিগত দিনের স্মৃতি ভুলে থাকার চেষ্টা করেন সব হারানো রাফসানা।
সন্তানদের পড়ালেখা করানোর জন্য ২৬ বছর চাকরি করে গেছেন। নিজে টাকা জমাননি। পড়ালেখা শেষে সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় পাঠিয়েছেন লন্ডনে। সেখানে উচ্চশিক্ষা শেষে বড় ছেলে ১১ বছর ধরে ডাক্তারি করছেন। মেয়েও লন্ডনে ৭ বছর চাকরি করছেন। স্বামীকে নিয়ে দুই বছর আগে লন্ডনে গিয়েছিলেন রাফসান আরা। সেখান থেকে বর্তমানে বৃদ্ধাশ্রমে।
নিজের বেদনা ঢেকে রাফসান আরা বলেন, আমি কেমন আছি সেটা দেখার বিষয় না, আমি কেমন আছি এটাও বড় ব্যাপার না। আমি সব সময় দোয়া করবো আমার সন্তানেরা যেন দুধে-ভাতে থাকে। আল্লাহ সব সময় তাদের ভালো রাখুক। মায়ের ভালোবাসা চিরন্তন। সন্তানরা যাই করুক মায়ের দোয়া সবসময় তাদের প্রতি থাকবে।
লন্ডনে পরিবারের কাছে থাকলেন না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে চোখের লোনা জল ফেলতে থাকেন মা রাফসান। ফেলে আসা দিনের কথা মনে
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur