Home / বিশেষ সংবাদ / বৃত্তি পরীক্ষায় ষাটোর্ধ্ব আনজিরা
বৃত্তি পরীক্ষায় ষাটোর্ধ্ব আনজিরা

বৃত্তি পরীক্ষায় ষাটোর্ধ্ব আনজিরা

একেকটি কক্ষ খুদে পরীক্ষার্থীতে ঠাসা। মনোযোগ দিয়ে লিখছে সবাই। তবে একটি কক্ষে খুদে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে এমন একজন বসেছেন যাকে দেখে সহজেই চোখ আটকে যায়। নিবিষ্ট মনে খাতায় উত্তর লিখছেন চুল পাকা এক নারী। তার নাম মোছা. আনজিরা (৬৫)।

তিনি এবার বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের প্লে শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন। পরীক্ষা কেন্দ্র কাঞ্চন নগর মডেল স্কুল ঝিনাইদহ। পরীক্ষা শেষে কথা হয় আনজিরার সঙ্গে।

বৃত্তি পরীক্ষায় ষাটোর্ধ্ব আনজিরা

তিনি জানান, তাদের বাড়ির কাছেই স্কুল ছিল। কিন্তু পরিবারে অভাবের কারণে কোনো দিন স্কুলে যাওয়া হয়নি। লেখাপড়া করতে না পারার আফসোস হৃদয়ে বয়ে নিয়ে বেড়াতেন তিনি।

আনজিরা বলেন, হসপিটাল কিংবা ব্যাংকে গেলে কাগজে নিজের নামটাও লিখতে পারি না। সে জন্য সিদ্ধান্ত নিই বয়স যাই হোক না কেন পড়াশোনা শিখতেই হবে।

তিনি জানান, ঝিনাইদহ গোয়ালপাড়া বাজারে ঠিক বাড়ি থেকে একটু দূরে রোজ ভ্যালি স্কুলে নাতিকে ভর্তি করতে এসে নিজেও সেখানে ভর্তি হন। নিয়মিত ক্লাস করেন। খুদে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিনি খুব সহজেই মানিয়ে নেন। সহপাঠীরা কেউ নানি কেউ দাদি বলে ডাকে।
পড়তে ভালো লাগে বলেই তিনি পড়েন।

রোজ ভ্যালি স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নাতির সঙ্গে প্রতিদিন স্কুলে এসে ক্লাস করতেন আনজিরা। আমি একদিন ক্লাস চলাকালীন ক্লাস রুমে গেলে তিনি আমাকে দেখে একটি কাগজ লুকান। পরে কাগজটিতে দেখি অ আ ই লেখার চেষ্টা করছেন তিনি। তার এ চেষ্টা দেখে আমি স্কুলে প্লে শ্রেণিতে ভর্তি করিয়ে নিই। এক বছর নিয়মিত ক্লাস করার পর বৃত্তি পরীক্ষা দেয়ার জন্য অন্য ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে প্রাইভেট পড়া শুরু করলেন নিজ ইচ্ছা থেকে। অন্য ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস মিস করলেও আরজিনা একদিনও ক্লাস মিস করেননি। তিনি ক্লাসে খুব মনোযোগী ছিলেন। তিনি ভালো ফল করবেন বলে আমরা আশাবাদী।

বিশেষ সংবাদ
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ২ : ০০ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭, মঙ্গলবার
এইউ