বাড়ছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। সময়ে অসময়ে কখনো বৃষ্টি কখনো তীব্র উত্তাপ। জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে বেশি বেশি গাছ লাগানোর কথা বললেও অনেকেই তা শুনছেন না। কিন্তু এসব না জেনেই গত অর্ধশত বছর ধরে গাছ লাগনো, যত্ন নেয়া থেকে গাছ রক্ষায় কাজ করে চলছেন দেলোয়ার হোসেন পাটওয়ারী নামে একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা। ইতিমধ্যেই নিজের বাড়ির চারপাশে তিনি গড়ে তুলেছেন তিন একর সম্পত্তির উপর ১২ হাজার গাছের এক বাগান। কবুতর, মোরগ, গরু পালন ও মাছ চাষের সাথেও রয়েছে তাঁর সখ্যতা।
চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের কড়ৈতলী গ্রামের অধিবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. দেলোয়ার হোসেন পাটওয়ারী। কিশোর বয়স থেকেই গাছ লাগানো তাঁর নেশা। নিজের কাছে টাকা থাকলেই সব আগে গাছ ক্রয় করে তা রোপন করতেন তাঁর বাড়ির আঙিনা কিংবা উঠোনে। ঘরের কোনায় কিংবা পুকুর পাড়ে। এভাবে গত ৫০ বছরে ৩২০ শতক জমিতে অন্তত ১০০ জাতের ১২ হাজার গাছ রোপন করেছেন তিনি। যেখানেই বিরল জাতের গাছ পান সেখান থেকেই সংগ্রহ করে রোপন করে থাকেন। এছাড়া ২১০ শতক সম্পত্তিতে বিশাল আকৃতির দুইটি মাছের খামারে নানান জাতের ১৬ হাজার মাছ চাষ করেছেন।
দেলোয়ার হোসেন পাটওয়ারীর স্ত্রী রওশন আরা বলেন, তিনি গাছ ছাড়া আর কিছু বোঝেন না। বাজারের টাকা বাঁচিয়ে গাছ কিনে নিয়ে আসেন। তিনি একজন গাছ প্রেমিক মানুষ। নিজেই এখন চলাফেরা করতে কষ্ট হলেও সকাল বিকাল গাছের পরিচর্যা করতে ভুলেন না।
দেলোয়ার হোসেন পাটওয়ারী জানান, জীবনের অনেকটা সময় গাছের সঙ্গেই কাটিয়েছি। ছেলেমেয়ের মতই আমি গাছকে ভালোবাসি। আমার নিজ বাড়ীতে কবুতর, মোরগ, গরু, মাছ ও গাছ নিজেদের পরিবার,স্বজন,প্রতিবেশিকে বিলিয়ে দেয়ার পাশাপাশি বিক্রিও করে থাকি। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছি। আমি মনে করি বর্তমান বেকার তরুণরা চাকুরীর পেছনে না ছুটে উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন।
এসব বিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা কাউসার মিয়া বলেন, মুক্তিযোদ্ধা মো. দেলোয়ার হোসেন পাটওয়ারীর বাড়িতে আমি নিজেই বেশ কয়েকবার গিয়েছি। তার বসতভিটায় বিরল প্রজাতির গাছ রয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য প্রজাতির গাছও রয়েছে। সত্যিই তিনি একজন গাছ প্রেমিক মানুষ।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান,১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪